সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি : একটানা প্রবল বৃষ্টি এরই সঙ্গে ভুটান সিকিমের নদীর জল বিপদ। বন্যার কবলে উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্স। টানা বৃষ্টিতে ফুলেফেঁপে ওঠা মূর্তি, ডায়না, জলঢাকা ও তিস্তার জল গরুমারা এলাকার বিস্তীর্ণ অরণ্যভূমি প্লাবিত করে। বন্যার জলে ভেসে গেল জলদাপাড়ার গন্ডার হরিণ-সহ একাধিক বন্যপ্রাণী অসহায় অবস্থায় হাতির দল আশ্রয় নিয়েছে লোকালয়ে। একাধিক বন্যপ্রাণীর দেহও উদ্ধার হয়েছে। তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে রাজ্য সরকার ও বনদফতর। গরুমারা বন আধিকারিক রাজীব দে জানান, উত্তরবঙ্গে জঙ্গলে এই পরিমাণ জল এর আগে কখনও দেখা যায়নি। গরুমারার বিস্তীর্ণ এলাকা এখন প্লাবিত। ফলে বিভিন্ন জায়গা থেকে বন্যপ্রাণীর মৃত্যুর খবর আসছে। তবে আমরা সর্বশক্তি দিয়ে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছি। ইতিমধ্যেই বহু প্রাণীকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং তাদের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সুস্থ হয়ে উঠলে আবার তাদের গভীর অরণ্যে ছেড়ে দেওয়া হবে। বনদপ্তর সূত্রে খবর, জলঢাকা নদীর তীরে একটি পূর্ণবয়স্ক গন্ডারের দেহ উদ্ধার হয় রবিবার। প্রাথমিক অনুমান, অতিরিক্ত খরস্রোতা জলের চাপে গন্ডারের মৃত্যু হয়েছে। তবে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানার জন্য গরুমারাতে ময়নাতদন্ত করা হবে। একইসঙ্গে নদীর স্রোতে ভেসে যেতে দেখা গেছে আরেকটি গন্ডারকে।
আরও পড়ুন-কোচিং সেন্টারে বিস্ফোরণ যোগীরাজ্যে, নিহত ২ পড়ুয়া
অন্যদিকে, নাথুয়া জঙ্গলে হরিণের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। গরুমারার বিভিন্ন অংশে বন্যার জলে আটকে পড়েছে হাতির পাল। একাধিক কচ্ছপ, বাইসন, বুনোশূকর নদীর চর থেকে উদ্ধার করে বনদপ্তর। ইতিমধ্যেই বনকর্মীরা স্থানীয় গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় উদ্ধারে তৎপরতা চালান। বিপন্ন প্রাণীদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অরণ্যের বড় অংশ ডুবে যাওয়ায় প্রাণীরা বাধ্য হয়ে জনবসতিতে ঢুকে পড়ছে। ফলে আতঙ্ক ছড়ালেও, বনদফতর আশ্বাস দিয়েছে মানুষ ও প্রাণীর নিরাপত্তা দু’দিকই সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। সরকার জানিয়েছে, যেখানেই বন্যপ্রাণী বিপদে পড়েছে, সেখানেই তৎক্ষণাৎ উদ্ধার অভিযান চলছে। অন্যদিকে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে গরুমারা জঙ্গলের বেশ কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়।