নয়াদিল্লি: অযোধ্যা রায় নিয়ে বিতর্ক উসকে দিলেন দেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। ২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া অযোধ্যা রায় নিয়ে ভারতের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় একটি নিউজ পোর্টালের সাক্ষাৎকারে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ১৬শো শতাব্দীতে বাবরি মসজিদ নির্মাণই ছিল একটি মৌলিক অপবিত্রকরণের কাজ। এই মন্তব্য অযোধ্যার বিতর্কিত স্থানে রাম মন্দির নির্মাণের অনুমতি দেওয়া ২০১৯ সালের রায়ের সঙ্গে দ্বন্দ্বমূলক বলে মনে করছে আইনি জগতের একাংশ।
আরও পড়ুন-সুপার ওভারে জিতল ভারত
দেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ অযোধ্যা মামলার রায় দেয়। এই বেঞ্চের সদস্য ছিলেন চন্দ্রচূড়। ২০১৯ সালের নভেম্বরে অযোধ্যার বিতর্কিত স্থানে রাম মন্দির নির্মাণের অনুমতি দেয় শীর্ষ আদালত। রায়ে বলা হয়েছিল, ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (এএসআই) তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে যে মসজিদের নিচে একটি কাঠামো ছিল, তবে এই কাঠামো ভেঙে বাবরি মসজিদ নির্মাণের কোনও প্রমাণ নেই। রায়ে আরও বলা হয়েছিল যে, নিচের কাঠামো এবং মসজিদ নির্মাণের মধ্যে কয়েক শতাব্দীর ব্যবধান রয়েছে। গত ২৪ সেপ্টেম্বর এক সাক্ষাৎকারে চন্দ্রচূড় বলেন, পুরাতাত্ত্বিক খনন থেকে পর্যাপ্ত প্রমাণ পাওয়া গেছে। পুরাতাত্ত্বিক প্রমাণের প্রামাণ্য মূল্য একটি পৃথক বিষয়। আমি শুধু বলতে চাই, পুরাতাত্ত্বিক প্রতিবেদনের আকারে প্রমাণ রয়েছে। তিনি এএসআই-এর প্রতিবেদনের উল্লেখ করে বলেন যে, মসজিদের নিচে ১২শো শতাব্দীর একটি হিন্দু উৎসের কাঠামো ছিল। এটিকে ইতিহাসে ঘটে যাওয়া ঘটনার স্বীকৃতি হিসেবে উল্লেখ করেন চন্দ্রচূড়। আরেকটি প্রশ্নের জবাবে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি বলেন, মসজিদের অভ্যন্তরীণ প্রাঙ্গণে হিন্দুদের দ্বারা অপবিত্রকরণ এবং অশান্তি সৃষ্টির কারণে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল। চন্দ্রচূড়ের এই মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের ২০১৯ সালের রায়ের সঙ্গে সংঘর্ষমূলক। কারণ পুরাতাত্ত্বিক প্রমাণের ভিত্তিতে জমির মালিকানার সিদ্ধান্ত আইনত দেওয়া যায় না। ১২শ শতাব্দীর কাঠামো এবং ১৬শো শতাব্দীতে মসজিদ নির্মাণের মধ্যে চার শতাব্দীর ব্যবধান রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে মানব ইতিহাসের কোনও প্রমাণ রেকর্ডে নেই। কিন্তু এই পরিপ্রেক্ষিতে অনেকেরই প্রশ্ন, পুরাতাত্ত্বিক প্রমাণের ভিত্তিতে মালিকানার সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় কীভাবে?