সংবাদদাতা, এগরা : কে এই কৃষ্ণপদ বাগ ওরফে ভানু? যাকে ধরতে গিয়ে তার সম্পর্কে যে তথ্যই পাচ্ছেন তদন্তকারীরা, অবাক হচ্ছেন। প্রায় ৩০ বছর ধরে এলাকায় দাপটের সঙ্গে অবৈধ বাজি কারখানা চালাচ্ছিল বছর পঞ্চাশের ভানু। ৯০-এর দশকে বাম জমানায় সে ছিল সিপিআই এবং পরে যোগ দেয় সিপিএমে। ২০১৮ সালে শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে আসে তৃণমূলে। আবার তিনি দল ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভানুও অল্পদিনের তৃণমূল সঙ্গ ছেড়ে ২০১৮ সালেই নাম লেখায় বিজেপিতে।
আরও পড়ুন-অভিষেকের নির্দেশে ২৪ ঘন্টার মধ্যে বেহাল রাস্তা পরিদর্শন করেন প্রশাসনিক কর্তারা
এইভাবে ওড়িশার বাসিন্দা ভানুর রাজনীতিতে যোগ দিয়ে সিপিএম থেকে শেষ পর্যন্ত রূপান্তরিত বিজেপি হওয়ার পরিচয় পেয়ে অবাক তদন্তকারী অফিসাররা। ভানুর তৈরি বাজি ওড়িশা ও বিহারেও বিক্রি হত। এভাবে অবৈধ বাজি কারখানা চালাতে গিয়ে সে আগেও দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে। কুড়ি বছর আগে ভানুর কারখানায় বিস্ফোরণে তার নিজের ভাই-সহ তিনজনের মৃত্যু হয়। বাম জমানায় তার ভাইয়ের স্ত্রী সিপিএমের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যা ছিলেন। ২০০৮ সালে সিপিএম ছেড়ে নির্দল প্রার্থী হয়ে ভানুর পুত্রবধূ ভোটে যেতেন।
আরও পড়ুন-অভিষেকের সফর ঘিরে তফসিলিদের আগ্রহে নিশ্চিত তৃণমূল, পুরুলিয়ার সভায় ভিড়ের রেকর্ড হবে
২০১৮-য় তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ হয় ভানু শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে। সেবার তার পুত্রবধূ পঞ্চায়েতে জোড়া ফুলের প্রার্থী হন, কিন্তু হেরে যান। হারার পরই সপরিবার সেই শুভেন্দুর হাত ধরেই বিজেপিতে নাম লেখায় ভানু। খাদিকুল গ্রামটি বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের নির্বাচনী এলাকার মধ্যে পড়ে। তাছাড়া এখানে গ্রাম সদস্যা ও অঞ্চল কার্যত বিজেপির হাতেই রয়েছে। ফলে চিরকাল রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা ভানুও পদ্মশিবিরের লোক হয়ে ওঠে। এগরা ১ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ প্রভুপদ দাস বলেন, ‘‘২০১৮-য় হেরে যাওয়ার পর ভানুর পরিবার বিজেপিতে যোগ দিয়েছিল। তৃণমূলের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ ছিল না। তবে এলাকায় নিজের প্রভাব-প্রতিপত্তি বজায় রাখতে সে বিভিন্ন পুজো, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অথবা ভোটে ডোনেশন দিত। প্রশাসন ও নেতাদের ম্যানেজ করার বিষয়টা ভালই জানত ভানু।’’
আরও পড়ুন-রাজ্যের সাড়ে ৮ কোটি টাকায় হবে, মুড়িগঙ্গা সংস্কার ও দু’পাড়ে সৌন্দর্যায়ন
পুলিশ এর আগে বহুবার তার অবৈধ বাজি কারখানায় হানা দিয়েছে। কিন্তু তারা আসার আগেই কারখানা ছেড়ে ওড়িশায় পালাত ভানু। একবারই ধরা পড়েছিল, তবে বেশিদিন আটকে রাখতে পারেনি পুলিশ। ২০২২-এর ১০ অক্টোবর জামিন পেয়ে যায় অবৈধ কারখানার মালিক ভানু বাগ। পুলিশের খাতায় বেশ ক’টি মামলা থাকলেও তার কারখানা বন্ধ করা যায়নি বিজেপি নেতাদের মদতেই বলে কটাক্ষ তৃণমূলের।