প্রতিবেদন : সময় যত এগোচ্ছে বাম আমলে সরকারি চাকরিতে স্বজনপোষণ, দুর্নীতি এবং চিরকুট রীতির একটির পর একটি ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে। এবার নতুন সংযোজন সমীর পুততুণ্ড (Samir putatunda)। সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা কমিটির প্রাক্তন সভাপতি ও বর্তমানে পিডিএসের সর্বভারতীয় নেতা। প্রথমে এসেছিল মিলি ভট্টাচার্যের ঘটনা। তারপর বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিলেন মন্ত্রী উদয়ন গুহ (Udayan Guha)। প্রয়াত কমল গুহ অর্থাৎ তাঁর বাবার প্রসঙ্গ টেনে এনেছিলেন উদয়ন। কে কমল গুহ? বাম আমলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ মন্ত্রী ও ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা। উদয়ন স্পষ্ট ভাষায় বলেছিলেন, বাম আমলে বাবা প্রচুর চাকরি দিয়েছেন। সিপিএম থেকে ফরওয়ার্ড ব্লক, প্রায় সকলকেই। সব স্বজনপোষণ, চিরকুট চাকরি। তার সাক্ষী আমি নিজেই। আর রবিবার তিনি নাম তুলে তুলে জানালেন কারা কারা তাঁর চেনা তালিকায় রয়েছেন। এদিন পাঁচজনের নাম দিয়েছেন। এঁরা হলেন, অঞ্জলি সেন। যিনি সিপিএমের দিনহাটা গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির নেত্রী ছিলেন। এছাড়াও শুক্লা সরকার ও বুদ্ধদেব রায় চাকরি পান সিপিএমের পরিবার বলে। পার্টির সর্বক্ষণের কর্মী বলে চাকরি পেয়েছিলেন বিশ্বনাথ রায়। প্রয়াত ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা মলয় রায়ও চাকরি পেয়েছিলেন এভাবেই। উদয়ন বলছেন, এ তো সবে শুরু। আমি তালিকা দিতে আরম্ভ করলে পালাবার পথ পাবে না বামেরা।
আরও পড়ুন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে জালিয়াত, পিএমও কর্মী পরিচয়ে কাশ্মীরে
সমীর পুততুণ্ড (Samir putatunda) স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, বাম আমলে সরকারি চাকরি, বিশেষত শিক্ষকতার চাকরিতে নিয়োগে ব্যাপক স্বজন-পোষণ হয়েছে। বাম আমলের শেষদিকে অর্থের বদলে চাকরিও দেওয়া হয়েছে। সিপিএম জেলা সম্পাদক ছিলাম বলেই একথা জোর দিয়ে বলতে পারছি। নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে নয়ের দশকের শেষ দিকের একটি বিশেষ পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন সমীর পুততুণ্ড। সেই সময়ে পার্টিতে সিদ্ধান্ত হয় সরকারি চাকরি শুধু পার্টি কর্মীরাই পাবেন না। পার্টি কর্মী মানেই যোগ্য এই ধারণা বদলাতে হবে। যোগ্যদেরই চাকরি দিতে হবে। আমার জেলায় সাড়ে তিন হাজার নিয়োগের তালিকা আসে। পার্টির সিদ্ধান্ত মেনে করতে গিয়ে কেঁচে গণ্ডুষ। দলে ব্যাপক ঝামেলা। সবাই চায় নিজের লোকেদের ঢোকাতে। শেষ পর্যন্ত দুর্নীতি, স্বজন-পোষণ আর চাকরির বদলে অর্থের দাবিদারদেরই জিত হয়। কোথায় নীতি-নৈতিকতা? ওসব পার্টি মিটিংয়েই শুরু, পার্টি মিটিংয়েই শেষ। ওই সাড়ে তিন হাজার নিয়োগে ছাড়পত্র আমরাই সকলে দিয়েছিলাম এটা জেনেই যে চাকরি পাচ্ছেন যোগ্যরা নয়, পার্টি কর্মীরা। ফলে এখন যারা প্রশ্ন তুলছেন এবং আদালত চত্বরেও যেসব মন্তব্য ভেসে আসছে তা শুনলে হাসির উদ্রেক হয়। বাম আমলেই চাকরিতে দুর্নীতির সলতে পাকানো শুরু হয়েছিল। রমরম করে চলছিল। সেই ব্যাধি নির্মূলের দায়িত্ব তৃণমূলকেই নিতে হবে।