ধর্মনিরপেক্ষ ভারতে কোর্টের নির্দেশ সব ধর্মের মানুষের জন্য : সুপ্রিম কোর্ট

বুলডোজার নীতি যেন ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে পরিচালিত না হয়। কোনও নির্মাণ বেআইনিভাবে তৈরি হয়েছে কি না সেটাই বিবেচ্য। মঙ্গলবার বলল সুপ্রিম কোর্ট

Must read

প্রতিবেদন : বুলডোজার নীতি যেন ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে পরিচালিত না হয়। কোনও নির্মাণ বেআইনিভাবে তৈরি হয়েছে কি না সেটাই বিবেচ্য। মঙ্গলবার বলল সুপ্রিম কোর্ট। শুধুমাত্র অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মানুষের বাসস্থান ধ্বংসের বিরুদ্ধে নির্দেশিকা চেয়ে আবেদনের উপর সুপ্রিম কোর্ট মঙ্গলবার তার আদেশ সংরক্ষণ করেছে। এদিন শুনানি শেষে বিচারপতি বিআর গাভাই এবং কে ভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ বলেছে, আমরা যা কিছু নির্দেশিকা তৈরি করি না কেন, মনে রাখতে হবে আমরা একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। এদেশে আমাদের সমস্ত নির্দেশিকা হবে দেশের সব মানুষের জন্য। বিচারপতি গাভাই বলেন, আমরা নিশ্চিত করব যে কেউ একজন অভিযুক্ত বা দোষী সাব্যস্ত হওয়ার কারণেই তার বাসস্থান বা ব্যবসাস্থল ধ্বংস করা যাবে না। কিন্তু সরকারি জমি দখল করে যদি মন্দির বা ইদগা তৈরি হয় তবে জনস্বার্থেই তা ভেঙে ফেলতে হবে। সেখানে ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি যেন অন্তরায় না হয়।

আরও পড়ুন-শান্তি ফেরাতে ব্যর্থ গেরুয়া সরকার, মণিপুরে গণতন্ত্রের টুঁটি টিপতে বাড়ল আফস্পার মেয়াদ

প্রসঙ্গত, এর আগেও একাধিকবার বিজেপি রাজ্যগুলিতে চালু হওয়া প্রশাসনের বুলডোজার নীতি যে বেআইনি তা উল্লেখ করে উষ্মা প্রকাশ করে শীর্ষ আদালত। উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, অসম সহ একাধিক রাজ্যেই দেখা যাচ্ছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন অভিযুক্তদের বাড়িঘর নানা অছিলায় বুলডোজারে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে প্রশাসন। রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কোনও অভিযুক্ত দোষী প্রমাণিত হওয়ার আগেই এভাবে কিছু মানুষকে শায়েস্তা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন-যোগীরাজ্যকে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা সুপ্রিম কোর্টের

মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ বলেছে যে, আদালতের অনুমতি না নিয়ে অপরাধমূলক কার্যকলাপের জন্য সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের সম্পত্তি ধ্বংস করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করে এর আগে দেওয়া অন্তর্বর্তী আদেশটির সময়সীমা মামলার সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত বাড়ানো হবে। উল্লেখ্য, অন্তর্বর্তী আদেশটি দেওয়া হয়েছিল ১ অক্টোবর পর্যন্ত। তবে আদালত স্পষ্ট করেছে যে এই আদেশটি এমন ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না যেখানে অননুমোদিত নির্মাণ সরিয়ে ফেলার জন্য এই ধরনের ধ্বংসের প্রয়োজন হয়। মঙ্গলবার আদালত পরামর্শ দিয়েছে যে প্রস্তাবিত ধ্বংসের ফলে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তাঁদের অবহিত করার জন্য একটি অনলাইন পোর্টাল থাকা উচিত এবং গৃহীত পদক্ষেপের ভিডিওগ্রাফি করা উচিত। অননুমোদিত নির্মাণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আগে যে নোটিশ জারি করা হয়েছে তা নিশ্চিত করার প্রয়োজনের উপর জোর দিয়েছে বেঞ্চ। এবং বলেছে যে সর্বোত্তম উপায় হল ঘটনাস্থলে নোটিশ আটকানোর পরিবর্তে রেজিস্টার্ড পোস্টের মাধ্যমে নোটিশ প্রেরণ করা। সর্বোচ্চ আদালত এটি স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, তারা অননুমোদিত নির্মাণ এবং সরকারি জমিতে দখলদারিত্বের অপসারণে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। বিচারপতি গাভাই বলেন, সেটি মন্দির হোক, দরগা হোক, সরকারি জমি দখল করে হলে তা সরাতে হবে। সেখানে ধর্মের ভিত্তিতে কোনও ওজর-আপত্তি চলবে না।

Latest article