কেন্দ্রের মোদি সরকারের বিরাট দুর্নীতির পর্দা ফাঁস হয়ে গেল। ‘না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা’ বুলি আওড়ানো নরেন্দ্র মোদির জুমলাবাজি ধরা পড়ে যাচ্ছে। দেশের মানুষের কাছে খুলে যাচ্ছে মোদির ভাঁওতাবাজির মুখোশ। এবার আরও এক বড় কেলেঙ্কারি সামনে এল। মোদি সরকারের সাধের জনধন যোজনার (jandhan yojana) দেড় কোটি অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে বেমালুম সাইবার প্রতারণা চক্র সক্রিয় রয়েছে দেশে। ঠেলায় পড়ে সেই সমস্ত অ্যাকাউন্ট বন্ধের সুপারিশ করেছে বেসামাল কেন্দ্র।
আরও পড়ুন- ১০ জুলাই নবান্নে বৈঠক মুখ্যমন্ত্রী-ওমর আবদুল্লার
জনধন যোজনায় (jandhan yojana) দেশে মোট ৫৫ কোটি ৭০ লক্ষ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। তার মধ্যে প্রায় দেড় কোটি অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে রয়েছে। সেইসব অ্যাকাউন্টগুলিকে ব্যবহার করে সাইবার প্রতারণায় হাতানো টাকা ট্রান্সফার করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নিষ্ক্রিয় অ্যাকাউন্টগুলি বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে। এই যে জনধন যোজনার অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে সাইবার প্রতারণা চক্র চলছে, তা এতদিন জানতই না মোদি প্রশাসন। জানলেও না জানার ভান করে থাকত। আর প্রচারসর্বস্ব প্রধানমন্ত্রী জনধন অ্যাকাউন্টের সাফল্য নিয়ে কল্পকথা প্রচার করে বেড়াতেন। এবারই প্রথম নয়, আগেও জনধন অ্যাকাউন্ট নিয়ে অভিযোগ সামনে এসেছে। কিন্তু কোন পদক্ষেপই করেনি নরেন্দ্র মোদি সরকার। দেশের গরিব মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার প্রবণতা দেখিয়ে সরকার স্রেফ গরিবি কমানোর কৃতিত্ব প্রতিষ্ঠা করে গিয়েছে। এসবই মিথ্যা। খোদ মোদি সরকারের মন্ত্রী বলছেন, দেশে গরিব বাড়ছে। এখন কী বলবেন ‘না খাউঙ্গা না খানে দুঙ্গা’র প্রণেতা। দেড় কোটি অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে থাকাই প্রমাণ করে দিয়েছে আদতে অ্যাকাউন্ট চালু রাখার মতো আর্থিক সাশ্রয় বা আয় দেশের সাধারণ মানুষের নেই। এরই মাঝে কেন্দ্র আবার জনধন অ্যাকাউন্টে সামান্য টাকা জমা করিয়ে জিরো ব্যালান্স অ্যাকাউন্টের সংখ্যা কম করে দেখানোর ফন্দি আঁটে। সেই চাটুকারিতাও ফাঁস হয়ে যায়।রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্টে নিষ্ক্রিয় জনধন অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বিগত বছরের তুলনায় এবার আরও বেড়েছে এবং তার বেড়ে চলেছে। তারপল সাধারণ মানুষকে ডিজিটাল মাধ্যমে প্রতারিত করে টাকা হাতিয়ে তা নিষ্ক্রিয় জনধন অ্যাকাউন্টে জমা রাখার প্রবণতা আরও বড় সঙ্কটের কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। প্রতারণার সেই টাকা নিষ্ক্রিয় অ্যাকাউন্টে জমা হচ্ছে আবার তুলেও নেওয়া হচ্ছে প্রতারণা করেই। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ‘মিউল হান্টার’ নামক বিশেষ অভিযানে উঠে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য। শুধু ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার অধীনে থাকা নিষ্ক্রিয় জনধন অ্যাকাউন্টগুলিতে ১৪৭ কোটি টাকার প্রতারণা হয়েছে বিগত ছ’মাসে। তাহলে বাকি ব্যাঙ্কগুলিতে কত পরিমাণ টাকা প্রতারণা হয়েছে কল্পনা করুন। এই রিপোর্টই বলছে, বিগত আর্থিক বছরে মোট ১৩ হাজার ৫১৬টি ডিজিটাল প্রতারণা হয়েছে, যার আর্থিক মূল্য ৫২০ কোটি টাকা।