প্রতিবেদন : ‘ডানা’র (Cyclone Dana) দাপটে আশঙ্কার প্রহর গুনছে উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। গভীর নিম্নচাপ বুধবার সকালেই ঘূর্ণিঝড় ডানায় পরিণত হয়েছে। ক্রমশ এগিয়ে আসছে ওড়িশা উপকূলের দিকে। মৌসম ভবন জানিয়েছে, গত ছ-ঘণ্টায় সেটি ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটার বেগে উত্তর-পশ্চিম অভিমুখে এগিয়েছে। ইতিমধ্যেই পুরীতে জারি করা হয়েছে হাই-অ্যালার্ট। ডানার দাপটে বৃহস্পতিবার থেকে দুর্যোগের আশঙ্কা জেলায় জেলায়। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়ায় ভারী থেকে অতি-ভারী বৃষ্টির সতর্কতা। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার ভোরের মধ্যে পুরী-সাগরদ্বীপের মাঝে ল্যান্ডফলের সম্ভাবনা রয়েছে। হাওয়ার সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার ছাড়িয়ে যেতে পারে। ডানার প্রভাব পড়বে কলকাতাতেও। সেই সতর্কতা অবলম্বন করে নবান্নে নয় জেলার জেলাশাসকদের নিয়ে ভার্চুয়ালি বৈঠক করছেন মুখ্যসচিব। প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে তাঁদের।
আরও পড়ুন-ডানা’র হানা ঠেকাতে প্রস্তুত কলকাতা পুরসভা, থাকছে WBSEDCL-CESC-এর হেল্পলাইন নম্বরও
বুধবার থেকেই কন্ট্রোল রুম খুলছে লালবাজার। কলকাতা পুলিশ, পুরসভা, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ৪টি দলকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বাবুঘাটে সকাল থেকেই মাইকে সতর্কবার্তা প্রচার করছে পুলিশ। নামখানার বকখালি ও মৌসুনি, সাগরের ঘোড়ামারা ও পাথরপ্রতিমার গোবর্ধনপুরে বাসিন্দাদের উঁচু স্কুলবাড়ি ও ত্রাণশিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস মেনে ফিরিয়ে আনা হয়েছে দিঘার মৎস্যজীবীদের। বুধবার থেকেই দিঘায় পর্যটকদের সমুদ্রস্নানে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। হোটেল খালি করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। পুরীতে পর্যটকদের সরিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি সমুদ্র সৈকতের আশপাশে যে সমস্ত স্থানীয় বাসিন্দা থাকেন তাঁদেরও অন্যত্র সরানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে একাধিক দূরপাল্লার ট্রেন। হলদিয়া টাউনশিপ থেকে নন্দীগ্রামের কেন্দামারি পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ। হলদিয়া বন্দর সূত্রে খবর, বুধবার সকাল থেকেই সব পণ্যবাহী জাহাজ বার্থ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরে ইতিমধ্যেই পৌঁছেছে এনডিআরএফের সদস্যরা। সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে সুন্দরবনে। এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছেন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা। ঘূর্ণিঝড়ের (Cyclone Dana) সতর্কতা রয়েছে বাঁকুড়াতেও। মাইকিং করা হচ্ছে হাওড়াতেও।
এদিকে, এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলা ও উত্তরবঙ্গেও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দু-এক জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুক্রবার সকালের মধ্যে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। ১০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানাচ্ছে আলিপুর। এই সময়ে কলকাতায় ৫০ থেকে ৬০ ও সর্বোচ্চ ৭০ কিমি প্রতি ঘণ্টা বেগে দমকা হাওয়া বইতে পারে।