নিকৃষ্টতম ঘটনা মোদীর গুজরাতে (Gujrat)। গুজরাতের পাটন জেলার জাখোত্রা গ্রামে প্রেমিকের সঙ্গে পালাতে গিয়ে এক মহিলা ৫৬ বছরের এক দলিত বৃদ্ধকে মেয়েদের পোশাক পরিয়ে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করেছেন। জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম হরজি দেবা সোলাঙ্কি।
আরও পড়ুন-খালি হাতে আসছেন কেন? প্রধানমন্ত্রীর সফরের টাইমিং নিয়ে জোড়া প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করল তৃণমূল
পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার রাত ১১টা নাগাদ সুরেশ গেঙ্গা ভীমা অহির জানান, তাঁর স্ত্রী গীতাকে হঠাৎ করেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরেরদিন ভোরে তিন বছরের সন্তানের কান্নায় জেগে স্ত্রীকে খোঁজার জন্য বাইরে যেতেই দেখতে পান বাড়ির উঠানে একটি আধপোড়া মৃতদেহ রয়েছে। মহিলার পোশাক ও গয়নায় সাজানো সেই দেহ দেখে প্রথমে হতভম্ব হয়ে যান সুরেশ। মৃতদেহটিতে কমলা রঙের কাজ করা ব্লাউজ, নীল ঘাঘরা এবং নুপুর পরান ছিল। স্থানীয়রা প্রাথমিকভাবে বিশ্বাস করেছিল যে এটি কোনও মহিলার। এমনকি সুরেশও প্রাথমিকভাবে মনে করেছিলেন তার স্ত্রী গীতা আত্মঘাতী হয়েছেন।
পুলিশে খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। কিন্তু পোস্টমর্টেম রিপোর্ট আসতেই ঘুরে যায় ঘটনার মোড়। জানা যায় মৃত ব্যক্তি একজন পুরুষ। তাঁর নাম হরজি সোলাঙ্কি। তিনি পাশের গ্রাম ভাউভায় একা থাকতেন ও পেশায় দিনমজুর। তদন্ত শুরু হতেই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। সুরেশের স্ত্রী গীতা, বেশ কয়েক মাস ধরে ভারত লুভা অহির নামের এক যুবকের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলেন। পরিকল্পনা মাফিক গীতার ভুয়ো মৃত্যু দেখিয়ে তাঁরা পালিয়ে নতুন জীবন শুরু করার চিন্তা করে ফেলেছিলেন। হরজিকে নিশানা করেন তারা। হরজিকে হত্যার আগে ভারত তাঁকে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে গিয়ে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করেন। অচেতন হলে তাঁকে বেঁধে বাইকে করে জাখোত্রা গ্রামে নিয়ে গিয়ে মহিলাদের পোশাক পরিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন দুজনে।
আরও পড়ুন-ট্রাম্প প্রশাসনের পদ থেকে সরলেন বন্ধু মাস্ক! নেপথ্যে কারণ কী
ময়নাতদন্তে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, হরজিকে জীবিত অবস্থায় পুড়িয়ে মারা হয়েছে। শুধু তাই নয়, পাশের একটি পেট্রোল পাম্পের কর্মীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, একটি ক্যান নিয়ে গীতা সেদিন পেট্রোল কিনেছিলেন। ঘটনার পর গীতা ও তাঁর প্রেমিক পালিয়ে যান বাণাসকাঁঠার পালনপুরে। কিন্তু শেষরক্ষা হয় নি, সেখানকার রেলস্টেশন থেকে পুলিশ তাঁদের বুধবার ভোররাতে গ্রেফতার করে। তাঁদের থেকে উদ্ধার হয় যোধপুর যাওয়ার টিকিট।
জাতিগত বিদ্বেষ জড়িত নয় বলে জানানো হলেও তাঁকেই কেন টার্গেট করলেন এই দুই অপরাধী এই নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। আত্মগোপনের বিকৃত পরিকল্পনা হলেও জাতিগত বিদ্বেষের বিষয়টি একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হত্যা এবং ষড়যন্ত্রের ধারায় মামলা রুজু হয়েছে তবে গোটা বিষয়টির আরো বিশদে তদন্ত চলছে।