বাবার অজান্তেই ১৫ ফেব্রুয়ারি মেয়ের ফাঁসি হয়ে গেল বিদেশে

বারবার তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের বিদেশ দফতরের কাছে জানতে চেয়েছিলেন মেয়ের কথা। ফাঁসি রুখতে ভারত সরকারের হস্তক্ষেপও প্রার্থনা করেছিলেন।

Must read

প্রতিবেদন : অদ্ভুত ব্যাপার, সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে ফাঁসি হয়ে গেল মেয়ের, অথচ দেশে বসে কিছু জানতেই পারলেন না হতভাগ্য বাবা। বারবার তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের বিদেশ দফতরের কাছে জানতে চেয়েছিলেন মেয়ের কথা। ফাঁসি রুখতে ভারত সরকারের হস্তক্ষেপও প্রার্থনা করেছিলেন। কিন্তু কোনও সাড়াই পাননি সরকারের পক্ষ থেকে। শেষপর্যন্ত সোমবার জানা গেল তাঁর মেয়ে ৩৩ বছরের মহিলা শাহজাদি খানের মৃত্যুদণ্ড সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে কার্যকর হয়েছে প্রায় ১৬ দিন আগেই। কেন্দ্রীয় সরকার সোমবার দিল্লি হাইকোর্টকে এ খবর জানিয়েছে। সেদেশের এক দম্পতির ৪ মাসের একটি শিশুর মৃত্যুর জন্যে দায়ী করে মামলা হয়েছিল শাহজাদির বিরুদ্ধে। শিশুটির দেখাশোনা করতেন উত্তরপ্রদেশের বান্দার মেয়ে শাহজাদি। এই মামলাতেই তাঁর বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডাজ্ঞা দেয় সংযুক্ত আরব আমিরশাহি আদালত। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, মুসলিম বলেই কি শাহজাদির মৃত্যুদণ্ড রোধ করার ব্যাপারে তেমন কোনও আগ্রহ দেখাল না মোদি সরকার? পাকিস্তানে বন্দি কুলভূষণ যাদবের মৃত্যুদণ্ড রোধ করার জন্যে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে যে তৎপরতা দেখানো হয়েছিল, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি ভারতের বন্ধু দেশ হওয়া সত্ত্বেও শাহজাদির ক্ষেত্রে সেই তৎপরতা দেখানো হল না কেন?

আরও পড়ুন-সিপিএমের মিথ্যাচার, ৩ পয়েন্ট ও ছবি দিয়ে পর্দাফাঁস দেবাংশুর

২০২২ সালের ডিসেম্বরের ঘটনা। বৈধ কাগজপত্র নিয়েই আবুধাবিতে গিয়েছিলেন শাহজাদি। তাঁরই তত্ত্বাবধানে ছিল সেখানকার এক দম্পতির ৪ মাসের শিশুসন্তান। শিশুটি নিয়মিত টিকাগ্রহণের পর মারা যায় এবং শাহজাদিকে এই মৃত্যুর জন্য দায়ী করা হয়। এবং বিচারে শাহজাদির ফাঁসির আদেশ হয়। শাহজাদির পিতার শনিবার দিল্লি হাইকোর্টে আবেদনের পর আদালতকে এই মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে অবহিত করে বিদেশ দফতর। শাহজাদির বাবা আদালতে জানতে চান, তাঁর মেয়ে কেমন আছে? আদালত এ-বিষয়ে কেন্দ্রের রিপোর্ট চাইলে, কেন্দ্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়, উত্তরপ্রদেশের বান্দা জেলার এই মহিলার মৃত্যুদণ্ড ১৫ ফেব্রুয়ারি কার্যকর হয়েছে এবং তার শেষকৃত্য ৫ মার্চের জন্য নির্ধারিত হয়েছে। সরকার আদালতে জানিয়েছে যে বিদেশ মন্ত্রণালয় ২৮ ফেব্রুয়ারি এই আপডেট পেয়েছে। অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল চেতন শর্মা আদালতকে বলেন, এটা শেষ হয়ে গেছে। তাঁকে ১৫ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তাঁর শেষকৃত্য ৫ মার্চ আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত হবে। বিচারপতি সচিন দত্ত এটিকে খুবই দুর্ভাগ্যজনক বলে অভিহিত করেন। মহিলার পিতার দায়ের করা আবেদনে বলা হয়েছে যে শাহজাদি ১৫ ফেব্রুয়ারি আটক থাকাকালীন ফোনে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিলেন। জানিয়েছিলেন যে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। সম্ভাব্য মৃত্যুদণ্ডের আগে তাঁর শেষ ইচ্ছা ছিল বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলা।

Latest article