প্রতিবেদন : নিজের এক্তিয়ার-বহির্ভূত ও সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর অভিযোগ রাজ্যপালের বিরুদ্ধে আগেই উঠেছিল। সঙ্গে আছে রাজভবনকে অপব্যবহার করার অভিযোগও। এবার বিজেপির নির্দেশে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হলেন রাজ্যপাল। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিশ্রের বিরুদ্ধে নিয়মবহির্ভূতভাবে তদন্তের নির্দেশ দিলেন। এখানেই শেষ নয়, ওমপ্রকাশ মিশ্রকে কিছু না জানিয়ে শনিবার গভীর রাতে রাজভবনের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে তদন্তের বিষয়ে জানানো হয়। রাজ্য সরকারকে কালিমালিপ্ত করতে বিজেপির নির্দেশমতো নয়া ফন্দি নিয়ে আবারও তাদের ক্যাডারের ভূমিকায় মাঠে নেমেছেন সি ভি আনন্দ বোস।
আরও পড়ুন-BREAKING অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার আগেই বাগমুন্ডি থেকে উদ্ধার তলোয়ার
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্রের বিরুদ্ধে রাজ্যপাল তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আর তদন্তের ভার দিয়েছেন আর এক অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল যাঁর বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তিনিই এখনও কোনও চিঠিই পাননি। তার আগে মিডিয়াকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এমনকী উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির বৈঠকেও এই ধরনের কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। রাজ্যপালের এই কাজ সম্পূর্ণ বেআইনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন আইনে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস একাজ করেছেন? প্রশ্ন ক্ষুব্ধ ওমপ্রকাশ মিশ্রের। তিনি বলেন, রাজ্যপাল তুঘলকি আচরণ করছেন। যা খুশি তাই করছেন। তাঁর এই আচার-আচরণ, অবৈধভাবে ১৩ জন ভিসি নিয়োগ-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে তাঁরা সরব হবেন। শনিবার সন্ধ্যায় এ-খবর রাজভবনে পৌঁছনোর পরই বেশি রাতে তাঁর বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ওমপ্রকাশ। তাঁর কথায়, একজন প্রতিষ্ঠিত অধ্যাপক যে উপাচার্যের দায়িত্ব সামলেছেন তাঁর বিরুদ্ধে কোনও তদন্ত হবে অথচ সেটা রাজভবনের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জানানো হচ্ছে রাত ১১.৩০-এ। অথচ আমাকে তদন্ত নিয়ে কিছু জানানো হয়নি! এটা সাংবাদিকদের গ্রুপে জানানো হচ্ছে। এটা কি বিধিসম্মত? আইনসম্মত? এভাবেই কি আচার্যের দফতর পরিচালিত হয়? এই প্রশ্ন আমার রয়েছে। এটা সর্বজনবিদিত, আজ কলকাতা প্রেস ক্লাবে আমি সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছি।
আরও পড়ুন-শুভেন্দুর সভায় বৃদ্ধের মৃত্যু নিয়ে অভিযোগ দায়ের হল বনগাঁ থানায়
এটা জানার পাঁচ ঘণ্টা পর এই ঘটনা ঘটেছে। রাজ্যের ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩১টি আইন আছে। কোন আইনে রাজ্যপাল একাজ করেছেন জানতে চাই! বললেন ওমপ্রকাশ। উনি সমান্তরাল প্রশাসন চালাতে চাইছেন। আসলে রাজ্যপাল বাংলার শিক্ষাক্ষেত্রে দখলদারি চালাতে চাইছেন। সবটা নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছেন। কিন্তু বাংলার শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ-শিক্ষাবিদ-অধ্যাপক ও সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের ব্যক্তিরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। আগামিকাল সোমবার সকালে কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠকে বাকিটা বলবেন। তবে এটুকু বলে রাখি, চ্যান্সেলর হতে গেলে রাজ্য সরকারের নিয়ম অনুযায়ী অন্তত ১০ বছর অধ্যাপক হিসেবে পড়ানোর অভিজ্ঞতা থাকতে হয়। যে ১৩ জনকে রাজ্যপাল নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে নিয়োগ করেছেন তার মধ্যে অন্তত ৭ জনের সেই অভিজ্ঞতা নেই।