প্রতিবেদন : রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়া, নার্ভের অসুখ এবং মৃত্যু। কোভিড ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আতঙ্ক ধীরে ধীরে গ্রাস করছে বিশ্ববাসীকে। অভিযোগের তির সরাসরি কোভিশিল্ড নির্মাতা সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকার দিকে। ভারত-সহ পৃথিবীর বহু দেশে কোটি কোটি মানুষ এই সংস্থার টিকা নিয়ে স্বস্তির শ্বাস ফেলেছিলেন। এবার তারাই ব্রিটেনে বড়সড় ক্ষতিপূরণের মামলার মুখে। এই মামলায় অন্তত ৮০ জন বাড়তি ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নেওয়ার পর রক্তবাহী নালিতে রক্ত জমাট বেঁধে মৃত্যুও হয়েছে।
আরও পড়ুন-অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ আইফেল টাওয়ার, হতাশ দর্শকরা
করোনার হাত থেকে বাঁচতে বিজ্ঞানী মহল বলেছিল, ভ্যাকসিন ছাড়া গতি নেই। খুব কম সময়ে টিকা ‘আবিষ্কার’ হওয়ার পর আশার আলো যেমন দেখা গিয়েছিল, তেমনই ‘অতি তৎপরতা’য় প্রশ্ন তুলেছিলেন বহু ভাইরাস বিশেষজ্ঞ। তারা স্মলপক্স, ইবোলা-সহ বহু প্রাণঘাতী অসুখের টিকা বের করার উদাহরণ উল্লেখ করে সতর্ক করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাতে তৎপরতায় খামতি হয়নি। আর সেই রেশ টেনেই কোভিড ভ্যাকসিনের একাধিক সমস্যা সামনে আসতে শুরু করে। যেমন হার্টের প্রাণঘাতী সমস্যা মায়াকার্ডাইটিস, জিবি সিনড্রোম ইত্যাদি। কিন্তু উদ্বেগ ও আতঙ্ক ওখানেই শেষ হয়ে যায়নি। এবার প্রকাশ্যে এসেছে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত চাঞ্চল্যকর আরও তথ্য। এই সংস্থার টিকা নেওয়া প্রায় ১০ কোটি মানুষকে নিয়ে বিশ্ব জুড়ে একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল গ্লোবাল ভ্যাকসিন ডেটা নেটওয়ার্ক। জার্নাল ‘ভ্যাকসিন’-এ প্রকাশিত সেই গবেষণা রিপোর্টে টিকার নতুন দু’টি মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা জানা গিয়েছে। প্রথমত, মস্তিষ্কের প্রদাহ। এর ফলে মস্তিষ্ক ফুলে ওঠে। দ্বিতীয়ত, স্পাইনাল কর্ডে প্রদাহ। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরই তা যাচাই করার জন্য অস্ট্রেলিয়ায় একটি সমীক্ষা হয়। সেখানে প্রায় ৬৮ লক্ষ টিকা নেওয়া মানুষের তথ্যভাণ্ডার খতিয়ে দেখেও একই প্রমাণ মিলেছে। ভারতে এখনও পর্যন্ত প্রায় ২২০ কোটি ডোজ কোভিশিল্ড টিকা দেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে বেশি মানুষ পেয়েছে এই কোভিশিল্ড টিকাই। মূল নির্মাতা সংস্থাকে নিয়ে এতবড় বিতর্ক শুরু হওয়ায় স্বভাবতই ভারতে উদ্বেগ বাড়ছে। ব্রিটেনে এখন ক্ষতিপূরণের মামলায় জেরবার হচ্ছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা।