প্রতিবেদন: বেলাগাম বাজির তাণ্ডবে দীপাবলির পরের দিন বিশ্বের সর্বোচ্চ দূষণের মাত্রা ছাড়াল দিল্লি। রাজধানীর দূষণ নিয়ে সমীক্ষায় উঠে এল এই বিস্ফোরক তথ্য। জানা গিয়েছে, প্রতি ৭ থেকে ১০টি পরিবারের মধ্যে কমপক্ষে ১ জনই বিষাক্ত দূষণের শিকার। রাজধানী এবং জাতীয় রাজধানী অঞ্চলের (এনসিআর) ৬৯ শতাংশ পরিবারে কমপক্ষে ১ জন ব্যক্তি বায়ুদূষণজনিত রোগে ভুগছেন। ক্রমবর্ধমান দূষণের কারণে গলা ব্যথা বা কাশি, চোখে জ্বালাপোড়া, নাক দিয়ে জল পড়া-সহ একাধিক উপসর্গ দেখা দিচ্ছে।
আরও পড়ুন-কোচের মন্ত্রেই সাফল্য, বলছেন দিয়ামানতাকোস
এক বেসরকারি সংস্থার সমীক্ষায় উঠে এসেছে, দীপাবলির পরদিন বিশ্বের সর্বোচ্চ দূষণের মাত্রা বলে চিহ্নিত দিল্লির বেলাগাম বায়ুদূষণ সরাসরি মানুষের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলেছে। বৃহস্পতিবার দীপাবলির রাতে বায়ুর গুণমান (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) দিল্লি এবং এনসিআরের বেশ কয়েকটি অংশে সর্বোচ্চ রেকর্ডযোগ্য স্তরে পৌঁছেছে। এক সর্বভারতীয় বেসরকারি সংস্থা ‘লোকাল সার্কেল’ এ-বিষয়ে তাদের সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। বলা হয়েছে, ৬৯% পরিবারে এক বা একাধিক সদস্যের গলাব্যথা বা কাশি রয়েছে, ৬২% পরিবারের অন্তত একজন সদস্য ক্রমবর্ধমান দূষণের কারণে তাদের চোখে জ্বালাপোড়া এবং ৪৬% নাক দিয়ে জল গড়ানো বা বন্ধ থাকার সমস্যায় ভুগছেন। দিল্লি, নয়ডা, গুরুগ্রাম, ফরিদাবাদ এবং গাজিয়াবাদের বাসিন্দাদের কাছ থেকে ২১,০০০ এরও বেশি প্রতিক্রিয়া পাওয়া গিয়েছে এই সমীক্ষায়। বেশ কিছু উত্তরদাতা একাধিক উপসর্গে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছেন। এরমধ্যে শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানিতে ৩১%, মাথাব্যথায় ৩১%, উদ্বেগ এবং মনঃসংযোগের অভাবের কারণে ২৩% এবং অনিদ্রায় ১৫% আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছেন। অন্যদিকে, ৩১% মানুষ বলেছেন যে দূষণের কারণে তাঁদের পরিবারে কারও কোনও সমস্যা হয়নি।
আরও পড়ুন-অশ্বিন, জাদেজায় জয়-সরণিতে ভারত, হাফ সেঞ্চুরি শুভমন ও ঋষভের
প্রসঙ্গত, দিল্লিতে সর্বশেষ অনুরূপ সমীক্ষাটি করা হয়েছিল ১৯ অক্টোবর, রাজধানী ও সংলগ্ন অঞ্চলে গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান-১ আরোপ করার কয়েকদিন পরে। দুই সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় সমীক্ষায় অন্তত একটি লক্ষণে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়েছে। শুক্রবার গলাব্যথা এবং কাশিতে আক্রান্ত মানুষের শতাংশের হার প্রথম সমীক্ষার ৩৬% থেকে বেড়ে ৬৯% হয়েছে। সমীক্ষায় শুধুমাত্র ২৩% উত্তরদাতা অত্যন্ত উচ্চ দূষণের এই পর্যায়ে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করছেন বলে জানান। সমান সংখ্যক মানুষ বলেছেন যে তাঁরা এই দূষণের মধ্যেই থাকবেন। ১৫% বলেছেন যে তাঁরা তাঁদের রুটিন ক্রিয়াকলাপ চালিয়ে যাওয়ার এবং বাইরে থাকার সময় মাস্ক পরার পরিকল্পনা করেছেন। ১৫% বলেছেন যে তাঁরা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারক খাবার বা পানীয়ের ব্যবহার বাড়িয়ে দেবেন এবং ১৫% বলেছে যে তারা এই সময় দূষণ থেকে বাঁচতে রাজধানীর বাইরে ভ্রমণের পরিকল্পনা করছে। যে পরিবারগুলি বলেছে যে তারা এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করবে তাদের সংখ্যা দুই সপ্তাহের মধ্যেই ১৮% থেকে বেড়ে ২৩% হয়েছে। সমীক্ষকদের দাবি, দিল্লিতে যে হারে দূষণ বেড়েছে তা সরাসরি জনগণের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলছে। সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, দীপাবলির পরের দিন রাজধানীর স্থানীয় সমীক্ষায় উঠে এসেছে দীপাবলির রাতে একিউআই (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স)ও দিল্লির বাতাসে দূষণের মাত্রা ৯৯৯-এ পৌঁছেছে, যা দিল্লি এবং এনসিআরের বেশ কয়েকটি অংশে সর্বোচ্চ রেকর্ডযোগ্য স্তর।