প্রতিবেদন: দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতের এক বিশেষ বিচারকের বিরুদ্ধে জামিন দেওয়ার বদলে ঘুষ চাওয়ার মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, একাধিক মামলায় অভিযুক্তদের কাছ থেকে কোটি টাকার ঘুষ দাবি করা হয়েছিল। এই অভিযোগের ভিত্তিতে দিল্লি সরকারের দুর্নীতি দমন শাখা (এসিবি) বিচারক ও আদালতের এক কেরানির বিরুদ্ধে তদন্তের অনুমতি চেয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে চিঠি পাঠিয়েছে।
২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে এই সংক্রান্ত প্রথম অভিযোগ আসে। একটি মামলার সূত্রে এক অভিযুক্তর আত্মীয় দাবি করেন, জামিনের জন্য ৮৫ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়েছে। আরও কয়েকজন অভিযুক্তের জন্য দাবি করা হয় ১ কোটি টাকা করে। অভিযোগ অনুযায়ী, ঘুষ না দেওয়ায় আদালত জামিনের শুনানি ইচ্ছাকৃতভাবে বিলম্বিত করে এবং শেষপর্যন্ত জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয়। পরে অভিযুক্তরা হাইকোর্ট থেকে জামিন পান। এসিবি বলছে, তাদের কাছে ঘুষ সংক্রান্ত কথোপকথনের অডিও রেকর্ডিং রয়েছে যা ঘুষ লেনদেনের প্রমাণ হিসেবে ব্যবহারযোগ্য। এছাড়া আরও একটি অভিযোগে বলা হয়, আদালতের কেরানি জানুয়ারির শুরুতে তিন অভিযুক্তকে জামিন পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রত্যেকের কাছে ১৫-২০ লক্ষ টাকা দাবি করেন।
আরও পড়ুন-১৬ বছরের মধ্যে এবার সবচেয়ে আগে এল বর্ষা
এসিবি ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে দিল্লির আইন বিভাগের প্রধান সচিবের কাছে বিষয়টি জানায় এবং তদন্তের অনুমতি চায়। তবে ১৪ ফেব্রুয়ারি দিল্লি হাইকোর্ট জানায়, বিচারকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরুর মতো পর্যাপ্ত প্রমাণ এখনও নেই। তবুও তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিল আদালত। অবশেষে গত ১৬ মে আদালতের কেরানির বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে এফআইআর করে এসিবি। কেরানি পরে আগাম জামিনের আবেদন করেন। শুনানির সময় তাঁর আইনজীবীরা বলেন, অভিযুক্ত বিচারকের বিরুদ্ধে পুরনো শত্রুতার কারণে তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। সরকারপক্ষের কৌঁসুলি জামিনের বিরোধিতা করে জানান, কেরানি মূল অভিযুক্ত এবং তাঁর বিরুদ্ধে লিখিত প্রমাণ রয়েছে। এই ঘটনার চারদিন পর গত ২০ মে অভিযোগের সঙ্গে যুক্ত বিশেষ বিচারককে অন্য আদালতে বদলি করা হয়। হাইকোর্টের পক্ষ থেকে বা বিচারকের নিজস্ব বক্তব্য এখনও পর্যন্ত প্রকাশ্যে আসেনি। এই ঘটনায় আদালত ও বিচারব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠেছে। বিচারপতি ভার্মা ইস্যুতে দেশজুড়ে বিতর্কের পর এবার নিম্ন আদালতের বিচারকের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ হল। দুর্নীতির তদন্ত শেষপর্যন্ত কী ফলাফল এনে দেয়, তা এখন সকলের নজরে।