প্রতিবেদন: মা’- একটা ছোট্ট শব্দ- অথচ কী ব্যাপক এর অভিব্যক্তি! দেশ থেকে দেশান্তর, কাঁটাতারের বেড়া ডিঙিয়ে এই একটি শব্দ চির বাঙময়৷ সেই মাকেই যখন পরিত্যাগ করে তাঁর সন্তানেরা, তখন তাদের কী দুর্দশা! মথুরা, বৃন্দাবন, বেনারস-র মত তীর্থস্থানে পা রাখলেই এমন বহু হতাভাগিনী ‘মা’-র দেখা মেলে, যাদের সংসারের বোঝা মনে করে একদিন পরিত্যাগ করেছিল তাদেরই সন্তান সন্ততিরা৷ অনেক সময়ে তীর্থস্থান ঘোরানোর নাম করে নিজেদের মা-কে তীর্থ স্থানের এক কোণায় ফেলে রেখে চলে যায় সন্তান সন্ততিরা৷ আবার অনেক বয়স্ক মা তাঁদের ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে এক ছাদের তলায় থাকার সময় সংসারের জ্বালা সইতে না পেরেই বাধ্য হয়েই সংসারত্যাগী হন৷ এই হতভাগ্য পরিত্যক্ত মায়েদের কয়েকজনকে নিজেদের পুজো মন্ডপে নিয়ে এসে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে চলেছে দিল্লির আরামবাগ পুজো সমিতি৷
আরও পড়ুন-রাজ্যের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলেও বাংলা, চালু করতে উদ্যোগী হচ্ছে শিক্ষা দফতর
উল্লেখ্য, প্রতিবারই ব্যতিক্রমী ভাবনার শরিক এই পুজো কমিটি৷ এর আগে তাঁরা সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা বাঘের হাতে নিহত জেলে, মধুচাষীদের পরিবারের সদস্যদের সম্মান প্রদর্শন করেছিল, তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল৷ এবার নিজেদের পুজোর ৩৬ তম বর্ষে তাদের পুজোর থিম পরিত্যক্ত মা৷ পুজো কমিটির চেয়ারম্যান অভিজিত্ বসু নিজেই ব্যাখ্যা দিয়েছেন তাঁদের এই ব্যতিক্রমী থিমের৷ তাঁর কথায়, জীবনে প্রথম যে শব্দটি উচ্চারণ করেছিলাম, সেটি হল ‘মা’৷ এখন যখন মা- দুর্গার আরাধনায় ব্রতী হয়েছি আমরা, তখন বারবারই মনে হচ্ছে পরিত্যক্ত মায়েদের জন্য কিছু করতে হবে৷ তাঁদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে৷ এই ভাবনা থেকেই সৃষ্ট আমাদের এই বছরের পুজোর থিম৷ অভিজিত্ বাবু জানান, বেনারস, মথুরা, বৃন্দাবন সহ উত্তর ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জনা ২৫ ‘পরিত্যক্ত মা’ আসবেন তাদের পুজোমন্ডপে৷ তাঁদের আর্থিক সহায়তা করা ছাড়াও চিকিত্সার সব ব্যবস্থা করা হবে৷ পুজোর কদিন এই পরিত্যক্ত মা-রাই তাঁদের পুজোমন্ডপ আলো করে রাখবেন৷ তাঁদের আশীর্বাদেই আগামীর রূপরেখা তৈরি করবেন তাঁরা-বললেন আরামবাগ পুজো সমিতির অন্যতম প্রধান এই কর্তা৷