যোগীর রাজ্যে উন্নয়নের বিজ্ঞাপনে কলকাতার মা উড়ালপুলের ছবি প্রকাশ্যে আসার পর ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বেগতিক বুঝে এই ঘটনায় এবার সংবাদপত্রের উপর ভুলের দায় চাপিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। এহেন পরিস্থিতির মাঝেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয় উত্তরপ্রদেশ সরকারকে কার্যত তুলোধনা তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং তৃণমূল মুখপাত্র সমীর চক্রবর্তী। জানালেন ঠগী আদিত্যনাথের বিদায় ঘন্টা বেজে গেছে। নিজের ও বিজেপি শাসিত রাজ্যে কোনো উন্নয়ন খুঁজে না পেয়ে বাংলার উন্নয়নকে নিজেদের বলে চালানোর চেষ্টা করছে উত্তরপ্রদেশ সরকার।
আরও পড়ুন- বিজ্ঞাপন কাণ্ডে সংবাদপত্রের ঘাড়ে দায় চাপালো যোগী সরকার
বিজ্ঞাপন কাণ্ডে রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করে যোগী সরকারকে রীতিমতো আক্রমণ শানিয়ে এদিন ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, “ধন্যবাদ যোগী আদিত্যনাথ অবশেষে মমতার উন্নয়ন স্বীকার করার জন্য। বাংলায় নির্বাচনের আগে ১১ বার প্রচারে এসে কত মূর্খের মত সমালোচনা করেছিলেন। অবশেষে উন্নয়নের আসল সত্যিটা স্বীকার করে নিলেন। আমি যোগী আদিত্যনাথকে আরো কিছু বিজ্ঞাপন প্রকাশ করার জন্য অনুরোধ করবো।” এরপরই রাজ্যের উন্নয়নের সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের উন্নয়নের তুলনা টেনে ডেরেক বলেন, “উত্তর প্রদেশ সরকারের বিজ্ঞাপন দেওয়া উচিত বাংলার রাস্তা নিয়ে। তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০৫৮ টি নতুন রাস্তা তৈরি হয়েছে, অথচ উত্তরপ্রদেশে মাত্র ৯৫০ কি। ২০১৮-১৯ সালে পশ্চিমবঙ্গে ৫১০০ কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা তৈরি হয়েছে উত্তরপ্রদেশের সংখ্যাটা ১৬৮০। উনার উচিত দুর্নীতির বিজ্ঞাপন দেওয়া। পশ্চিমবঙ্গের দুর্নীতির সংখ্যা ০.২ শতাংশ আর উত্তরপ্রদেশে ৩.২ শতাংশ। তপশিলি জাতি ওপর অপরাধের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ ০.৩ শতাংশ উত্তর প্রদেশ ২৫ শতাংশ। এই রাজ্যে মহিলা জনপ্রতিনিধিদের সংখ্যাটা বর্তমানে ৪০ শতাংশ। এটাও বিজ্ঞাপন দিতে পারেন যোগী।”
আরও পড়ুন- বিজেপিতে দলেই কোন্দল, ক্ষুব্ধ আরএসএস
পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দিন সমীর চক্রবর্তী জানান, “ভোটের আগে রাজ্যবাসীকে উন্নয়ন দেখানোর কিছু আর খুঁজে পাচ্ছে না। তাই বাংলায় ভোটের আগে ১১ বার এসে তৃণমূল সরকারের সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন যোগী। আর এখন সেই রাজ্যের উন্নয়নকে নিজেদের বলে দেখানোর চেষ্টা করছে ঠগী আদিত্যনাথ।” পাশাপাশি এই ঘটনায় সংবাদমাধ্যমের ওপর দায় চাপানো প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্ব বলেন, তাহলে কি উত্তর প্রদেশ সরকার এটা বোঝানোর চেষ্টা করছে যে তাদের সরকারের বিজ্ঞাপন বানাচ্ছে সংবাদমাধ্যম? এরপর বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব বলেন, সরকার সরকারি সংস্থাকে দিয়ে বিজ্ঞাপন বানায়। কখনো কখনো বিজ্ঞাপন সংস্থাকে দিয়েও বিজ্ঞাপন বানাতে পারে সরকার। কিন্তু সে ক্ষেত্রে সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদনের পর তা সংবাদমাধ্যমে যায় এটাই নিয়ম। আসলে সংবাদমাধ্যমের ওপর চাপ সৃষ্টি করে দায় স্বীকার করতে বাধ্য করা হয়েছে।”