উল্টোপুরাণ! ফের একবার চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখানো হল কেন্দ্রের ব্যর্থতা। রাজ্য সরকার সাত বছর আগে যোগা ও ন্যাচেরোপ্যাথি (Naturopathy) চিকিৎসায় রিসার্চ সেন্টার তৈরির জন্যে ১০ একর জমি অনুমোদন করেছিল। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে নদিয়ার কল্যাণীতে ওই প্রকল্প কবে বাস্তবায়িত হবে? মন্ত্রিসভায় অনুমোদন করে রাজ্য সরকার বিনামূল্যে জমি দিলেও কেন্দ্রের তরফে কেন গবেষণাকেন্দ্র তৈরী করতে এত গড়িমসি এই নিয়ে বিক্ষুব্ধ চিকিৎসকদের একাংশ। কেন্দ্রীয় আয়ুষ মন্ত্রকের কাছে প্রশ্ন করলে লিখিত জবাব এসেছে যথেষ্ট বাজেট অনুমোদিত হলে তবেই কল্যাণী রিসার্চ সেন্টারের প্রকল্প শুরু হবে।
জমিজটে কেন্দ্রীয় প্রকল্প আটকে রয়েছে, এমন অভিযোগ শোনা গেলেও এবার কিন্তু উল্টো ঘটনা। বাংলার সরকার জমি দিয়ে রাখলেও সেই জমি কাজে লাগাতে পারে নি কেন্দ্র। ২০১৯ সালে কেন্দ্রের আবেদন অনুযায়ী ‘সেন্ট্রাল কাউন্সিল ফর রিসার্চ ইন যোগা অ্যান্ড ন্যাচেরোপ্যাথি’ (সিসিআরওয়াইএন)–র জন্যে কল্যাণীর গোপালপুরে ১০ একর জমি (প্লট নম্বর ২৯–পি) মঞ্জুর করে রাজ্য সরকার। সেই বছর ফেব্রুয়ারিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে মন্ত্রিসভা জমি মঞ্জু করে। সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে লেখা রয়েছে—১০ একর জমি ‘ফ্রি অফ কস্ট’ অনুমোদন করা হল। কেন্দ্রীয় সরকার কল্যাণীর ‘এইমস’–এর মতই আধুনিক ওই রিসার্চ সেন্টার তৈরির পরিকল্পনা করেছিল। যোগা এবং ন্যাচেরোপ্যাথি নিয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ ও গবেষণা হবে বলে জানানো হয়। থাকবে আউটডোর পরিষেবা ও রোগীদের জন্যে প্রাথমিক ভাবে ১০০ শয্যার হাসপাতালও। কিন্তু কোথায় সেই হাসপাতাল?
এই নিয়ে বিভিন্ন মহলেই প্রশ্ন উঠছে দেশের সব রাজ্যে বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্প শুরু করছে কেন্দ্র কিন্তু এই ক্ষেত্রেও বাংলা বঞ্চিত কেন? যেখানে বিনা পয়সায় জমি দিচ্ছে রাজ্য সরকার, তখন বিশ্বমানের গবেষণা কেন্দ্র ও হাসপাতাল তৈরীতে কেন এত দেরি করছে কেন্দ্রীয় সরকার? আয়ুর্বেদ চিকিৎসক কেশবলাল প্রধান আয়ুষ মন্ত্রকে চিঠি দিলে জবাবে মন্ত্রকের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেক্রেটারি শিবকুমার মিশ্র জানিয়েছেন, ‘এই প্রকল্প নির্দিষ্ট সময়ে শুরু হবে, যখন হাসপাতাল তৈরির জন্যে যথেষ্ট বাজেট মঞ্জুর হবে।’ ওই গবেষণাকেন্দ্র এবং হাসপাতাল তৈরি হলে উত্তর–পূর্ব ভারতে চিকিৎসার আরও একটি দিগন্ত খুলে যেত। শুধু তাই নয় বহু রোগী কম খরচে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসার সুযোগ পেতেন কিন্তু সেই বিষয়ে কেন্দ্রের উদাসীনতা বুঝিয়ে দিচ্ছে রাজ্যের তরফে জনস্বার্থ প্রকল্পের জন্য মুখ্যমন্ত্রী এগিয়ে এলেও কেন্দ্র একেবারেই বাংলার মানুষের পাশে দাঁড়াতে ব্যর্থ।

