প্রতিবেদন : ক্ষমতায় আসার পর দিঘার আমূল পরিবর্তন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উন্নয়নের জোয়ারে বদলে গেছে দিঘার রূপ। ইকনোমিক করিডর তৈরি হচ্ছে তমলুকে। ২০০ কোটি টাকা ব্যয় করে হুবহু পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে দিঘায় জগন্নাথ মন্দির তৈরি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই সেখানে মার্বেলের বিগ্রহ এসে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার হলদিয়ার সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, এখনও কিছু কাজ বাকি আছে। ভোট মিটলেই বকেয়া কাজ মিটিয়ে উদ্বোধন করা হবে জগন্নাথ মন্দিরের।
আরও পড়ুন-উষ্ণ এলাকার বাগানে আপেল ফলিয়ে চমক স্কুলশিক্ষকের
মুখ্যমন্ত্রী জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন নিয়ে বলেন, দিঘার জগন্নাথ মন্দির আপনারা সকলে দেখতে আসবেন। এখন নির্বাচন বলে আমি কিছু করব না। আমাদের ঠাকুর চলে এসেছে। নির্বাচন মিটে গেলে আপনাদের আমন্ত্রণ করে মন্দিরের উদ্বোধন করা হবে। আমার এখনও কিছু কাজ বাকি আছে। আমি দেখাব এটা পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের থেকেও আরও অনেক বড় মন্দির হয়েছে। ঠাকুরটা আমরা মার্বেলের করেছি।
বিরোধীদের আমলে দিঘা কেমন ছিল আর এখন কেমন হয়েছে সেই চিত্রই এদিন তুলে ধরেন দলনেত্রী। উন্নয়নের খতিয়ান দিয়ে তিনি বলেন, দিঘাতে কে সৈকত সরণি করেছে? বম্বের মতো মেরিন ড্রাইভ কে করেছে? তিনটে সেতু তৈরি করতে হয়েছে। এত সস্তার কাজ এগুলো নয়। শয়ে শয়ে কোটি টাকা খরচ হয়েছে। তাই এখন দিঘায় এলে লোকে বলে, কী ছিল আর কী হয়েছে। দিঘায় জগন্নাথের মন্দির থেকে শুরু করে দিঘা গেট, ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টার, জাদুঘর, মাতঙ্গিনী হাজরার বাড়়িতে গ্যালারি, পিছাবনী স্মৃতিসৌধ আরও অনেক কিছু করেছি। আমি দিঘা, হলদিয়া, নন্দকুমার, নন্দীগ্রামকে সাজিয়ে দিয়েছি, খেজুরিকে সাজিয়ে দিয়েছি।
ইকনোমিক করিডর তৈরি হলে আরও বিপুল সংখ্যায় যে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ প্রসঙ্গে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা এখানে একটা বড় ইকনোমিক করিডর তৈরি করতে যাচ্ছি যেটা ডানকুনি-হলদিয়া, ডানকুনি-রঘুনাথপুর হয়ে হলদিয়াতে আসবে অর্থাৎ প্রচুর টাকার কর্মসংস্থান হবে এবং অনেক ইন্ডাস্ট্রি এখানে তৈরি হবে।
আরও পড়ুন-চাকরি-ক্ষতিপূরণ নয়তো জমি ফেরত, ইসিএল-খনিতে বিক্ষোভ বাসিন্দাদের
শুধু দিঘার সার্বিক উন্নয়ন নয়, এমনকী যোগাযোগ ব্যবস্থাতেও আমূল পরিবর্তন এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী রেলমন্ত্রী থাকার সময়। সেই কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি জানান, নয় মাসের মধ্যে দিঘা-তমলুক করে দিয়েছি। আমি না থাকলে দিঘা-তমলুক হত না। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন হলদিয়া-আসানসোল এক্সপ্রেস, হলদিয়া-চেন্নাই এক্সপ্রেস, পুরী-দিঘা এক্সপ্রেস, তমলুক-দিঘা রেললাইন, দিঘা-জলেশ্বর রেললাইন, দিঘা-বালিচক রেললাইন, সুতাহাটা ডবল লাইন এগুলো সব আমি করেছি। হলদিয়া বন্দরকে যুক্ত করেছিলাম রেলের সঙ্গে যাতে যাতে হলদিয়া বন্দরের সুবিধা পায়। তিনটে নতুন কলেজ হয়েছে। মাছ শুকনো করার চাতাল, মাছের বাজার, মাছের জন্য কোল্ড স্টোরেজ ও অন্যান্য পরিকাঠামো নির্মাণ হয়েছে। পাশাপশি বয়স্ক মৎস্যচাষিদের বার্ধক্যভাতা দেওয়ার কথাও এদিন মনে করিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও দিঘায় কেবল ল্যান্ডিং সেন্টার হচ্ছে, যার ফলে দিঘা বন্দর আরও বেশি করে উন্নত হবে বলে জানান তিনি।