দিলীপ ঘোষকে ‘মজাদার জোকার’ বলে আক্রমণ করলেন বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo)। দিলীপ ঘোষের ‘পিকনিক’মন্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে টুইটারে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ সভাপতিকে কড়া আক্রমণ তৃণমূল নেতা বাবুল সুপ্রিয়র। কেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থাকাকালীন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে গিয়েছিলেন বাবুল, প্রশ্ন তোলেন দিলীপ ঘোষ। বাবুল (Babul Supriyo) জবাবে টুইট করে বলেন, আবার দিলীপের ‘বাজে বকা’র (ভার্বাল ডায়েরিয়া) একটা নমুনা পাওয়া গিয়েছে।
বিজেপি-র দলের অন্দরের‘বিদ্রোহে’নতুন মাত্রা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। রাজ্য নেতৃত্বের উপর ক্ষুব্ধদের নিয়ে একাধিক পিকনিকের আয়োজন করেছেন তিনি। সেই প্রসঙ্গেই বৃহস্পতিবার দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, ‘‘শান্তনু পিকনিক করছে তো কী হয়েছে! আমিও কাল পিকনিক করেছি। সবাই পিকনিক করছে। পিকনিকে সবাই একত্রিত হয়। পিকনিক ডিপ্লোম্যাসি।’’ এর পরেই তিনি বাবুল সুপ্রিয় প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘‘ফিশফ্রাই ডিপ্লোম্যাসি শুরু করেন দিদি। বাবুল ফেঁসে গিয়েছিল!’’২০১৫ সালে কলকাতায় একটি কর্মসূচির শেষে মমতার গাড়িতে সওয়ার হয়েছিলেন বাবুল। তার পর ভিক্টোরিয়ার সামনে থেমে বাংলার তৃণমূল সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ঝালমুড়ি খাইয়েছিলেন বিজেপি-র নেতৃত্বাধীন সরকারের মন্ত্রী বাবুলকে। তখন অনেক বিতর্ক এবং আলোচনা হয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে।
আরও পড়ুন – জবরদখল তোলার অভিযানে পুলিশের পাশে ইন্সপেকশনে কাউন্সিলর অয়ন
বৃহস্পতিবার দিলীপ ঘোষ বিরোধী দলের নেতাদের মুখ্যমন্ত্রীর ফিশফ্রাই খাওয়ানোর প্রসঙ্গ টেনে বাবুলের কথা উল্লেখ করেছিলেন। বলেন, ‘‘বাবুল ফেঁসে গিয়েছিল।’’বৃহস্পতিবারের দিলীপের সেই বক্তব্যের উত্তর দিয়ে শুক্রবার টুইট করেছেন বাবুল সুপ্রিয়। শুক্রবার পর পর তিনটি টুইট করে বাবুল সেই প্রসঙ্গ টেনে লিখেছেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করার দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী আমাকে দিয়েছিলেন। সেই মতো আমি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহায্য চাই। কারণ, তাঁর সাহায্য ছাড়া কখনওই আটকে থাকা জমি অধিগ্রহণ সম্ভব হত না’। এর পরেই তিনি ‘ঝালমুড়ি’ প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তৃণমূল নেতা বাবুল লিখেছেন, ‘জনতার স্বার্থে আমি বিরোধী দলনেতার সঙ্গে ১০০ ঝালমুড়ি পর্ব করতে রাজি’। এর পরেই তিনি দিলীপকে ‘জোকার’ উল্লেখ করে লেখেন, ‘উনি আমাকে দলে (বিজেপি) কোণঠাসা করার জন্য বহু অপচেষ্টা করে গিয়েছেন।’
দিলীপ ঘোষকে আক্রমণ করে তৃতীয় টুইটে বাবুল লিখেছেন, ‘এটা ভাবলে বমি পায় যে, একজন বয়স্ক মানুষ যিনি রাজনীতিতে আমার চেয়ে জুনিয়র, বারংবার ওই প্রসঙ্গ টেনে আনেন এটা জেনেই যে আমি যা করেছিলাম, তা ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের স্বার্থেই।’ দিলীপের নাম না করলেও বাবুল লিখেছেন, এমন একজন ব্যক্তির বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি পদে থাকাটা লজ্জাজনক।
পাশাপাশিই বাবুল বলেন, ‘‘আমি আগেও বলেছি, আবার বলছি— দিদির সঙ্গে ওই ঝালমুড়ি মিটিংয়ে আমি দুটো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ওঁর সাহায্য চেয়েছিলাম | একটা অবশ্যই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো আর অন্যটা আসানসোলের ইএসআই হাসপাতালে ৬০ কোটি টাকার নতুন একটি ব্লক বানানো। যার অনুমোদন আমি কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রক থেকে আদায় করেছিলাম। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী মাননীয়া দিদি যদি কেন্দ্রকে একটি চিঠি না লিখতেন বা রাজ্যের তৎকালীন শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটককে আমায় সবরকম ভাবে সাহায্য করতে না বলতেন, তা হলে আজ ওই হাসপাতালটির কাজ আপনারা আসানসোলে প্রায়-সমাপ্ত অবস্থায় দেখতেন না!’’একেবারে শেষে বাবুলের বক্তব্য, ‘‘আমি কাজ করেছিলাম বলে আসানসোল আমাকে দ্বিতীয় বার জিতিয়েছিল। দিলীপবাবু খড়্গপুরের জন্য কী করেছএন সকলে জানে। ২০২৪ সালে উনি আবার ওই কেন্দ্র থেকে জিততে পারলে ওঁরা বুলি শুনব!’’