অনির্বাণ দাস: অস্কার ব্রুজো কি ম্যাজিক জানেন! যে দলটা মরশুমের শুরুতে একের পর এক হারে রীতিমতো ধুঁকছিল, সেই দলটাই কি না তেজি ঘোড়ার মতো দৌড়চ্ছে!
প্রথম ৬ ম্যাচে শূন্য পয়েন্ট পাওয়া ইস্টবেঙ্গল পরের ৬ ম্যাচের ৪টি জিতেছে। ড্র ও হার একটি করে। এই ছয় ম্যাচে এসেছে ১৩ পয়েন্ট!
আরও পড়ুন-দূরন্ত পুলিশ, অপহরণের সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যেই উদ্ধার, করণদিঘি থেকে গ্রেফতার ২ অভিযুক্ত
শনিবার এই বছরের মতো ঘরের মাঠে শেষ ম্যাচে খেলতে নেমেছিল। রীতিমতো দাপুটে ফুটবল খেলে তিন পয়েন্ট ঘরে তুললেন অস্কারের ছেলেরা। চোট সরিয়ে মাঠে ফিরেই গোল করে দলকে জেতালেন দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোস। বলা যায়, লাল-হলুদ সমর্থকদের আগাম বড়দিনের উপহার দিলেন গ্রিক স্ট্রাইকার। ১২ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে লিগ তালিকার ১০ নম্বরে উঠে এলেন দিয়ামানতাকোসরা। দিল্লি এখনও অনেক দূর। তবে সুপার সিক্সে জায়গা করে নেওয়ার দৌড় শুরু অস্কারের হাতে বদলে যাওয়া ইস্টবেঙ্গলের।
স্কোরবোর্ড বলছে ১-০। অথচ ম্যাচটা অন্তত পাঁচ গোলে জিততে পারতেন ক্লেটন সিলভারা। খেলার শুরুতেই আনোয়ার আলির গোলার মতো শট ক্রসপিসে লেগে ফিরে এল। নন্দকুমার বিপক্ষ গোলকিপারকে একা পেয়েও সরাসরি হাতে মারলেন। সুযোগ নষ্ট করলেন দিয়ামানকোসও। বিরতির পর বিষ্ণু জামশেদপুরের দু’জন ডিফেন্ডারকে টপকে বক্সে ঢুকে পরে অসাধারণ শট নিয়েছিলেন। সেটাও গোলকিপারকে পরাস্ত করে ক্রসপিসে লাগল। অনবদ্য খেললেন ক্লেটন। ব্রাজিলিয়ান তারকাকে জানুয়ারির উইন্ডোতে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে শোনা যাচ্ছে। এদিন ক্লেটন যা খেললেন, তাতে তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার আগে ভাবতে হবে অস্কারকে। লাল-হলুদের প্রায় প্রতি আক্রমণ শুরু হচ্ছিল ক্লেটনের পা থেকে। আবার প্রয়োজনে নিচে নেমে ডিফেন্সকেও সাহায্য করলেন। দারুণ খেললেন বিষ্ণুও। তাঁর পায়ে যতবার বল পড়েছে, ততবারই জামশেদপুর রক্ষণে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। তবে নন্দ হতাশ করেছেন। তাঁর অতিরিক্ত বল পায়ে রাখার প্রবণতা দলকে প্রায় ডুবিয়ে দিচ্ছিল।
আরও পড়ুন-বার্ধক্যভাতায় থাকছে না আর আয়ের সীমারেখা, যথার্থ সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রীর
তবে ৬০ মিনিটে দিয়ামানতাকোসের গোলের পিছনে নন্দরও ভূমিকা রয়েছে। চমৎকার একটি আক্রমণের ফসল এই গোল। ক্লেটন বল ধরেই তা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন নন্দকে। গতিতে বিপক্ষের এক ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করে বক্সে গড়ানে ক্রস করেছিলেন নন্দ। বিষ্ণুর পা ছুঁয়ে বল দিয়ামানতাকোসের কাছে যেতেই, নিখুঁত প্লেসিংয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন গ্রিক স্ট্রাইকার।
এই ম্যাচেও অনবদ্য আনোয়ার। শুরু করেছিলেন আগের ম্যাচের মতোই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবে। কিন্তু শুরুতেই রাকিপ চোট পেয়ে বসে যেতে, বাকি সময় খেললেন রাইট ব্যাকে। এবং দাপটের সঙ্গে। একেবারে শেষ মুহূর্তে গোললাইন সেভও করলেন। ভরসা দেওয়ার মতো খেললেন দুই স্টপার হিজাজি ও হেক্টরও। এই বছর ইস্টবেঙ্গল আর একটা ম্যাচ খেলবে। সেটা আগামী শনিবার হায়দরাবাদ এফসির বিরুদ্ধে। সেদিন জিততে পারলে, সুপার সিক্সে দৌড়ে দারুণভাবে ফিরে আসবেন ক্লেটনরা।