প্রতিবেদন : কোচবিহার থেকে জেতা বিজেপির সাংসদ-বিধায়করা মানুষের জন্য কোনও কাজ করেনি। তাদের ভোট চাওয়ার অধিকার নেই। তারা মানুষকে মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট নিয়ে তাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। বাংলার মানুষের হকের টাকা যখন কেন্দ্রীয় সরকার গায়ের জোরে আটকে রেখেছে তখন তারা একটা কথাও বলেনি। টাকা আনার ব্যবস্থা করা তো দূরে থাক। এরা যাদের ভোট নিয়েছে
তাদেরই পেটে লাথি মেরেছে। মঙ্গলবার কোচবিহার জেলা পার্টি অফিসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বললেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ ও সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার।
আরও পড়ুন-জনসমুদ্রে প্লাবিত আলিপুরদুয়ারে রোড-শো
সঙ্গে ছিলেন অভিজিৎ দে ভৌমিক, জলিল আহমেদ-সহ স্থানীয় নেতৃত্ব। কুণাল ঘোষ বলেন, আমাদের বিশ্বাস এবার কোচবিহার-সহ উত্তরের মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসকেই ভোট দেবেন। কারণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন মা মাটি মানুষের সরকার ছাড়া বছর পাশে থাকে। যাঁরা ভোট দিয়েছেন তাঁদের পাশেও থাকে, যাঁরা দেননি তাঁদের পাশেও থাকে। এবার সব ভোট তৃণমূলেই। ১৯ এপ্রিল ভোটগ্রহণের আগে আজ, বুধবার প্রচার শেষ হচ্ছে। শেষ বেলার প্রচারে এসে বিজেপি সরকারের জনবিরোধী নীতি-সহ বিজেপিকে ধরিয়ে দিল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার কেন্দ্রীয় সরকারের সেন্টার ফর স্টাডিজ ফর ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির রিপোর্ট তুলে ধরে বলেন, এই সংস্থার করা সমীক্ষা অনুযায়ী এবারে দেশের ৭১ শতাংশ মানুষ বলছেন, এবারের ভোটের সব থেকে বড় ইস্যু মূল্যবৃদ্ধি। এছাড়াও রয়েছে বেকারত্ব এবং রোটি-কাপড়া মাকানের মতো একেবারেই বেসিক ইস্যুগুলি।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
কুণাল বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রচার করেছেন। আমরা বলছি কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের তুলনা করতে। মুখ্যমন্ত্রী কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী সব প্রকল্পের সুবিধা দিচ্ছেন। তুলনা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ও মোদি সরকারের মধ্যে। মোদি সরকার পাঁচশো টাকা বাড়িয়েছে রান্নার গ্যাসে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়িয়েছেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে। বিজেপি লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলছে। যে মানুষরা তৃণমূলে ভোট দেননি, অন্যদিকে দিয়েছেন, তাঁরা বিভ্রান্ত ছিলেন। তৃণমূল কোচবিহার আসন জিতবে। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে অভাবনীয় ফল হবে। আমরা জনগণের স্পন্দন অনুভব করছি। বাংলায় হেরে গিয়েছে বলে মোদি সরকার টাকা দেয়নি। একশো দিনের কাজ, আবাসের টাকা বন্ধ। ৫৯ লক্ষ পরিবারকে টাকা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। উত্তরবঙ্গের ঝড়ের কথা নিয়ে কিছু বললেন না প্রধানমন্ত্রী। তাঁর সংযোজন, যাঁরা একশো দিনের টাকা পাননি তাঁরা কি সবাই তৃণমূল? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও বৈষম্য করেননি। বাংলার টাকা, আবাসের টাকা দেওয়া হোক বলেননি বিজেপির সাংসদরা। যাঁরা বিজেপিতে ভোট দিয়েছিলেন তাঁদের টাকাও মুখ্যমন্ত্রীকে দিতে হচ্ছে। প্রতিটি পরিবার উন্নয়নমূলক প্রকল্পের মধ্যে আছে। তৃণমূলের প্রতি বুথে ভোট বাড়বে। আমরা একশো শতাংশ ভোট পেতে চেষ্টা করব। মানুষ উপকার পেলে এই চিহ্নে দলের প্রার্থীকে ভোট দেবেন। তৃণমূলের ভোট শতাংশ বাড়বে৷ কেন্দ্র সরকারের বঞ্চনায় ভোট দেবেন। বিজেপি সাংসদরা কাজ না করায় তার বিরুদ্ধে ভোট দেবেন। আপনার অধিকারের জন্য লড়বে এমন সাংসদ চাই। অবিজেপি সরকার আসছে। বিজেপি ক্ষমতায় আসছে না। আমরা উঠতে বললে উঠবে। বসতে বললে বসবে। বাম আর কংগ্রেসকে ভোট দেওয়া মানে বিজেপিকে সাহায্য করা। বিজেপি চায় বাম-কংগ্রেস ভোট পাক৷ বিজেপিকে হারাতে তৃণমূলকে ভোট দেবেন।
আরও পড়ুন- জনসমুদ্রে প্লাবিত আলিপুরদুয়ারে রোড-শো
দলের স্পষ্ট বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী কাচের ঘরে বসে ঢিল ছুঁড়বেন না। ভাজপা ওয়াশিং মেশিনে অনেকে সাদা হয়েছে৷ আগে শুভেন্দু, হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে গ্রেফতার করুন। অনেক পরিচিত ব্যাঙ্ক লুট করেছে। কোলে বসে আছে আপনার৷ বাংলার শহর কলকাতা দেশের মধ্যে নিরাপদ, মোদির রিপোর্ট বলছে৷ বাম জমানায় সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামে একের পর ধর্ষণ-সহ নানা ঘটনা ঘটেছে৷ কোথাও কিছু ঘটলে ব্যবস্থা হচ্ছে৷ মহিলাদের ওপরে অত্যাচার স্বরাষ্ট্র দফতরের তালিকায় উপরে আছে৷ মুখ্যমন্ত্রীর বাংলায় মায়েরা, মেয়েরা নিরাপদ। ডায়মন্ড হারবারের প্রার্থী সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কুণাল বলেন, যারা রোজ সকাল-সন্ধে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা না করে জল গ্রহণ করেন না তাঁরা পালিয়ে গেলেন কেন। কমরেড মহঃ সেলিম, গদ্দার অধিকারী এরা দাঁড়ালে তো এদের ৪ লাখ ভোটে হারাতাম আমরা। একটা বাচ্চা ছেলে প্রতিকুল রহমানকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নওশাদকে দাঁড়াতে বলেছিল, না দাঁড়ানোয় এখন ট্রোল করছে। গাড়িতে নির্বাচন কমিশনের তল্লাশি প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, এসব লোক দেখানো কাজ। আগে থেকে বলে কয়ে নিজেদের গাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে। নির্বাচন কমিশন বিজেপির একটি শাখা সংগঠনে পরিণত হয়েছে।