সরকারি আনুকূল্যে সুদিন ফিরেছে ডোকরা শিল্পীদের

ডোকরার কথা উঠলেই প্রথমে মাথায় বাঁকুড়ার নাম। গন্ধেশ্বরী নদীর তীরে বিকনা গ্রাম ডোকরা শিল্পের জন্য বরাবরই প্রসিদ্ধ।

Must read

বাঁকুড়া, রাখি গরাই: বাঁকুড়ার বিকনার কুটিরশিল্প বাংলার আভিজাত্য ও ঐশ্বর্যের নিদর্শন বলা যায়। রাজ্যের অর্থনীতির একটা বড় অংশও এই কুটিরশিল্পের উপরে নির্ভরশীল। রাজ্যের বিভিন্ন জেলার বহু মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জীবিকা নির্বাহে এর উপর নির্ভরশীল। রাজ্যর যেসব কুটিরশিল্প ভিনরাজ্যে বা বিদেশের বাজারেও নিজস্ব পরিচয় তৈরি করে নিয়েছে, তার অন্যতম ডোকরা। ডোকরার কথা উঠলেই প্রথমে মাথায় বাঁকুড়ার নাম। গন্ধেশ্বরী নদীর তীরে বিকনা গ্রাম ডোকরা শিল্পের জন্য বরাবরই প্রসিদ্ধ।

আরও পড়ুন-তৃণমূল কাউন্সিলরের অফিসে হামলা বিজেপির

বিকনা ‘শিল্পগ্রাম’ নামেও পরিচিত বিকনা। কবে, কীভাবে ডোকরা শিল্পের প্রচলন হয়, তা অবশ্য কেউ বলতে পারেন না। কারও মতে, দেড়শো বছর আগের কথা। কেউ কেউ বলেন, আরও বেশি। তবে প্রচলন হওয়ার পর বংশ পরম্পরায় চলে আসছে এর অনুশীলন। গ্রামের বহু পরিবার জড়িত এর সঙ্গে। মাঝে বহু উত্থান-পতনের সাক্ষীও থেকেছে ডোকরা শিল্প। এক সময় বেশ মন্দার মুখেও পড়ে। তবে ফের সুদিন ফিরেছে। একদিকে চাহিদা বেড়েছে, অন্যদিকে নতুন প্রজন্মের মধ্যেও এই কাজে আসার আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। মানুষের পছন্দসই সামগ্রী জোগান দিতে নিজেদের কাজেও বদল এনেছেন ডোকরা শিল্পীরা। এক সময় এখানকার শিল্প মূলত লক্ষ্মীর ভাঁড়, চাল মাপার কৌটো, হাতি-ঘোড়া আর দেবদেবীর মূর্তির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। বর্তমানে পরিধি বেড়েছে ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে। এখন তৈরি হচ্ছে সুদৃশ্য গয়না, শো-পিস, অ্যাশট্রে, ঘর সাজানোর নানা সামগ্রী ও নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিস। এমনকী বাড়ির দরজা-জানলার হাতল বা কাঁটা-চামচেও থাকছে ডোকরার ছোঁয়া। বিশ্ববাংলা, মঞ্জুষার শো-রুমেও ডোকরার সামগ্রী বেচাকেনা হয়। বিশেষত আশ্বিন মাসে ডোকরার তৈরি দুর্গার চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করে ওঠা যায় না। এসবই সম্ভব হয়েছে রাজ্য সরকারের বদান্যতায়। বিপণনের মূল দায়িত্ব নিয়ে ডোকরা শিল্পীদের রুজি-রোজগারের অনেকটাই সুরাহা করে দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।

Latest article