ওয়াশিংটন: ফের শুল্কের হুমকি। আমেরিকার কৃষকদের অভিযোগের ভিত্তিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় চাল এবং কানাডার সার-সহ অন্যান্য কৃষি আমদানির উপর নতুন শুল্ক আরোপ করার কথা বিবেচনা করছেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। হোয়াইট হাউসে আমেরিকান কৃষকদের জন্য ১২ বিলিয়ন ডলারের একটি সহায়তাকারী প্যাকেজ ঘোষণার জন্য আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এই ঘোষণা করেন। ট্রাম্প বলেছেন, সরকার এই দাবিগুলি তদন্ত করবে যে অন্যান্য দেশ কম দামে চাল মার্কিন বাজারে ‘ডাম্প’ করছে, যার ফলে দেশীয় উৎপাদকদের ক্ষতি হচ্ছে।
আরও পড়ুন-সারদার জন্মতিথিতে শুরু হল সারদামেলা
কৃষকরা জোরালোভাবে বলেন, ভর্তুকিযুক্ত চাল আমদানির কারণে মার্কিন বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং দাম কমে যাচ্ছে। প্রত্যুত্তরে ট্রাম্প একে ‘প্রতারণা’ বলে অভিহিত করে শুল্ক আরোপের ইঙ্গিত দেন। তিনি কানাডা থেকে আমদানি করা সারের ক্ষেত্রেও একই রকম শুল্ক আরোপ করে মার্কিন উৎপাদন বাড়ানোর কথা বলেন। লুইসিয়ানার কেনেডি রাইস মিলের সিইও মেরিল কেনেডি ট্রাম্পকে জানান, ভারত, থাইল্যান্ড এবং চিন এই কম দামে চাল ‘ডাম্পিং’-এর প্রধান অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, চিন থেকে চালান মূল ভূখণ্ডের পরিবর্তে পুয়ের্তো রিকোতে যাচ্ছে। কেনেডি বলেন, শুল্ক কার্যকর হলেও আমাদের আরও কঠোর হতে হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প জানতে চান যে তারা আরও শুল্ক চান কিনা। এরপর ট্রাম্প মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্টকে প্রতিযোগিতায় অন্যায় সুবিধা প্রদানকারী দেশগুলির নাম লিখতে বলেন। কেনেডি যখন ভারতের ভর্তুকি প্রসঙ্গে বলছিলেন, তখন ট্রাম্প তাকে থামিয়ে দেন এবং ভারত, থাইল্যান্ড ও চিনের নাম নিশ্চিত করতে বলেন। ট্রেজারি সেক্রেটারি এই তিনটি দেশকে ‘প্রধান অপরাধী’ হিসাবে তালিকাভুক্ত করে জানান, তালিকাটি সম্পূর্ণ নয়, দ্রুত এই বিষয়ে পদক্ষেপ হবে।
ব্লুমবার্গের রিপোর্ট অনুসারে, কানাডা এবং ভারত উভয়ই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্থিতিশীল করার জন্য বাণিজ্য চুক্তির চেষ্টা করছে, কিন্তু আলোচনায় তেমন অগ্রগতি হয়নি। এর আগে আগস্ট মাসে ট্রাম্প ভারতের বাণিজ্য বাধা এবং রুশ তেল ক্রয় অব্যাহত রাখার অভিযোগে ভারতীয় পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন। ডেপুটি ইউএসটিআর রিক সুইটজারের নেতৃত্বে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিদল এই সপ্তাহে ভারতের সাথে বাণিজ্য আলোচনা শুরু করতে চলেছে। তারা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আগামী ১০ ও ১১ ডিসেম্বর বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করবে। ভারতের প্রধান আলোচক হিসাবে বাণিজ্য সচিব রাজেশ আগরওয়াল এই আলোচনায় নেতৃত্ব দেবেন। ভারত এই বছরের শেষ হওয়ার আগে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি-এর প্রথম কিস্তি শেষ করার লক্ষ্য রাখছে। নভেম্বরের ২৮ তারিখে ফিকি-র বার্ষিক সাধারণ সভায় আগরওয়াল বলেছিলেন যে তিনি খুব আশাবাদী যে ক্যালেন বছর শেষের মধ্যে একটি চুক্তি হতে পারে।

