গুজবে কান দেবেন না, মুর্শিদাবাদ হিংসায় বার্তা ডিজি-র, কতটা হাত বিজেপির এজেন্সির, তদন্ত দাবি তৃণমূলের

Must read

জঙ্গিপুরের পরে সুতির ঘটনায় বাড়াবাড়ি রকমের অশান্তির ছড়ানোর পিছনে দায়ী গুজব। রাতারাতি কোনও তথ্য ছাড়া মৃত্যুর খবরে অশান্তি বাড়ে। হামলা হয় পুলিশের উপর। পাল্টা পুলিশ চার রাউন্ড গুলি চালালে আহত হন দুজন। সেই খবর মৃত্যু বলে পরিবেশন করা হলে সুতি, সামশেরগঞ্জ এলাকায় বাড়ে অশান্তি। শনিবার বেলায় গোটা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পরে গুজব ছড়ানো নিয়ে কড়া বার্তা দেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার (Rajiv Kumar)। সেই সঙ্গে রাজ্যের শাসক দলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, গোটা ঘটনায় এজেন্সির মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে বিজেপি চক্রান্ত করে বাংলার পরিস্থিতি অশান্ত করার চেষ্টা করছে কি না, তা তদন্ত হওয়া দরকার। এখনও পর্যন্ত ঘটনায় দুজন বাসিন্দা পুলিশের গুলিতে আহত। ইতিমধ্যেই আটক করা হয়েছে ১১৮ জনকে। ১৫ জন পুলিশ কর্মী আহত ও তাঁদের মধ্যে কয়েকজন গুরুতর আহত বলে জানাচ্ছে পুলিশ।

শুক্রবার সকাল থেকে বিভিন্ন ধরনের গুজবে অশান্তি ছড়ায় মুর্শিদাবাদের সুতির সুজা মোড় ও ডাকবাংলো মোড় এলাকায়। প্রাথমিকভাবে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হলেও বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। জাতীয় সড়কে অবরোধের পরে পুলিশের উপর হামলায় সরকারি সম্পত্তি, সরকারি বাস, পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে বিকালে পুলিশকে গুলি চালাতে বাধ্য করা হয়, জানান রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইন শৃঙ্খলা) জাভেদ শামিম। গুলিতে দুজন আহত হন বলে জানান তিনি। এরপরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। বিকালে জাতীয় সড়ক খুলে দেওয়া সম্ভব হয়।

তবে এই গুলি চালানোর ঘটনার পরে গুজব ছড়ানো হয়, পুলিশের গুলিতে মৃত্যু বলে। শনিবার সকালে তাই নিয়ে ফের অশান্তি ছড়ায় সুতিতে। একজন আহত হন। তাঁকে বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়। শনিবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে গুজব ছড়ানো নিয়ে কড়া বার্তা দেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার (Rajiv Kumar)। তিনি জানান, আমাদের যা যা ক্ষমতা রয়েছে তার সর্বোচ্চ প্রয়োগ হবে, কিন্তু গুজব ছড়ানো যাবে না। সকালে জানা গেল একটা লোক গুলিতে মারা গেছে। কিন্তু পরে দেখা গেল ওর পায়ে গুলি লেগেছে। এই ধরনের গুজব বন্ধ করতে হবে।

আরও পড়ুন- প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ মোদি! প্রকল্প চালুই হল না, পড়ে রইল ১০ হাজার কোটি

তবে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে যে রাজ্য কোনওভাবেই হালকা মনোভাব দেখাবে না, তা স্পষ্ট করে দেন তিনি। ডিজিপি স্পষ্ট জানান, মানুষ ভয় বা উদ্বেগ থেকে আইন নিজেদের হাতে তুলে নেয়। কিন্তু গুজব ছড়ালে সেখানে উপস্থিত পুলিশের পক্ষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব হয়ে যায়। আজকে সকালে ঘটনা পুরোটাই গুজবের কারণে। খারাপ মানুষদের ছাড়া হবে না, একজনকেও না। প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাজ সাধারণ মানুষের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষা করা। একবার সমস্যা মিটলে আমরা গোটা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করব।

তবে মুর্শিদাবাদকে বেছে নিয়ে গুজব ছড়ানো বা অশান্তি ছড়ানোয় বিজেপি হাত রয়েছে বলে দাবি রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের। রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ দাবি করেন, এই অশান্তি শুরু করেছে বিজেপি। ওয়াকফ বিল একটি ধর্মকে টার্গেট করে আগুন লাগাবার রাজনীতি করেছে বিজেপি। বিভিন্ন জেলাকে আলাদা টার্গেট করে প্ররোচনামূলক কথা বলা হচ্ছে।

সেই সঙ্গে কুণাল দাবি করেন, কারা অশান্তি ছড়াচ্ছে তার যথাযোগ্য তদন্ত। সেখানেই কতটা হাত রয়েছে বিজেপির তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, বাংলার কোথাও কোখাও গণ্ডগোল হচ্ছে কেন। কারণ কেন্দ্রীয় ও বিজেপির কিছু এজেন্সি বাংলাকে টার্গেট করে তাদের স্পনসর্ড লোক দিয়ে লোক খেপানোর কাজটা করছে কিনা তা তদন্ত হওয়া দরকার। অসমে তাদের সরকার রয়েছে, তাই সেখানে কিছু করছে না। সুকান্ত মজুমদারের যুক্তিতে প্রমাণিত বাংলায় এটা তৈরি করা হয়েছে। বিজেপি সেটার ফায়দা লুটবে, সেটা হচ্ছে কি না, সেটাও তদন্ত হওয়া দরকার।

Latest article