সংবাদদাতা, কাটোয়া: ‘কন্যাশ্রী, রূপশ্রীর পর এবার লক্ষ্মীর ভাণ্ডার/ মা–দিদিদের জন্য আনল এবার দুয়ারে সরকার।/ শিবিরে এসে ফর্ম নাও গো, করো রে পূরণ/ মাস ফুরোলে মিলবে হাতে মা লক্ষ্মীর ধন।’ ডুগি–তবলা আর একতারার ঝঙ্কারে গানের ঝাঁপি খুলেছেন স্বপন বাউল। কাটোয়া শহরের কাশীরাম দাস বিদ্যায়তনের মাঠে।
আরও পড়ুন : চাঁচলের মুকুটে নতুন পালক, মহিলা কলেজ নির্মাণে উদ্যোগী রাজ্য সরকার
মাঠ জুড়ে লম্বা লাইন। দুয়ারে সরকারের শিবিরে নানা আবেদন জমা পড়ছে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের সুবিধে নিতে বৃষ্টিমাথায় নিয়ে হাজির প্রমীলাবাহিনী। সকাল থেকেই লাইন। ভিড় বাড়ায় শিবিরের সংখ্যা তিনগুণ করা হয়েছে পূর্ব বর্ধমানে। শুরুতে ছিল ৩৪। এখন বাড়িয়ে ৯০–এর উপর। বাড়ানো হয়েছে বিভিন্ন প্রকল্পে পরিষেবা দানের কাউন্টারের সংখ্যাও। বর্ধমান শহরের বাসিন্দা স্বপন বাউল। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ঘুরে গানের মাধ্যমে তুলে ধরছেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার–সহ রাজ্য সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচির কথা। করোনার তৃতীয় ঢেউ সম্পর্কেও সচেতন করছেন সবাইকে। গাইছেন, ‘সজাগ থাকো ভাই–বোনেরা আসছে তৃতীয় ঢেউ/ স্বাস্থ্যবিধি না মানলে পার পাবে না কেউ রে ভাই/ পার পাবে না কেউ…।’
আরও পড়ুন : দায়িত্ব পেয়েই মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নপূরণে ঝাঁপালেন এসজেডিএ চেয়ারম্যান
শুধু কাটোয়া শহরেই নয়, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে শামিল হতে প্রমীলা বাহিনীর নজরকাড়া ভিড় চোখে পড়ল কাটোয়া ১নং ব্লকের খাজুরডিহি, ২নং ব্লকের সিঙ্গি, কেতুগ্রাম ১নং ব্লকের আনখোনা, ২নং ব্লকের গঙ্গাটিকুরি, পূর্বস্থলী ১নং ব্লকের দোগাছিয়া, ২নং ব্লকের কালেখাঁতলা, কালনা শহরের ৩নং ওয়ার্ড, কালনা ১নং ব্লকের বাঘনাপাড়া, ২নং ব্লকের আনুখাল–সহ পূর্ব বর্ধমান জেলার বিভিন্ন শিবিরে। ১৬ আগস্ট থেকে শিবির টানা একমাস চলার কথা। আমজনতার যা আগ্রহ, তাতে সময় বাড়ানোর ইঙ্গিত মিলেছে প্রশাসনের তরফে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার থেকে শুরু করে কৃষকবন্ধু, স্বাস্থ্যসাথী, খাদ্যসাথী, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী–সহ ১৮টি সরকারি প্রকল্পের সুবিধে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। শিবিরে কোভিড স্বাস্থ্যবিধি মানতে মাইকে প্রচার চালাচ্ছে প্রশাসন। শিবিরগুলিতে মানুষের উৎসাহ দেখে পূর্ব বর্ধমান জেলার নয়া তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চ্যাটার্জির মূল্যায়ন, ‘এটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কৃতিত্ব। জনজীবনের উন্নয়নের লক্ষ্যে তিনি যে প্রকল্পগুলি চালু করেছেন, তা যে মানুষের কতখানি কাজে লাগছে, তার প্রমাণ শিবিরগুলিতে জনতার ঢল। আমাদের কর্মীরাও শিবিরে মানুষজনকে করোনা সম্পর্কিত স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে সচেতন করছেন।’ সচেতনতা আর রাজ্য সরকারি পরিষেবার সাতকাহন সুরে গেঁথে বৃষ্টিবাদল মাথায় নিয়েই ‘দুয়ারে সরকার’–এ হাজির স্বপন। গাইছেন, ‘জন্ম থেকে মরণ কত যে প্রকল্প/ মানুষের জন্য এনেছে মমতা, নয়তো এ গল্প/ স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাই যাও একবার/ বাড়ির পাশেই হাজির দেখো দুয়ারে সরকার/ ওরে ভাই দুয়ারে সরকার…।’