দুলাল সিংহ, বালুরঘাট: মসজিদ থেকে ভেসে আসা আজান। মন্দিরের শঙ্খ-ঘণ্টা। ৬৯ বছর ধরে এভাবেই বাংলার সম্প্রীতির ঐতিহ্য বহন করে আসছে বালুরঘাটের (Balurghat- Durga Puja) ইন্দ্রা গ্রামের মণ্ডল বাড়ির দুর্গোৎসব। প্রায় সাড়ে তিনশো বছর আগে শুরু হওয়া এই পুজোকে ঘিরে রয়েছে ইতিহাস। মণ্ডল বংশের পূর্বপুরুষ প্রাণধন মণ্ডলের হাত ধরে। এরপর বংশানুক্রমে ঈশ্বরচন্দ্র মণ্ডল এবং পরবর্তী সময়ে পাকিস্তানের (Pakistan) পলাশবাড়ি গ্রামে বিধুভূষণ মণ্ডল এই পুজো চালিয়ে আসছিলেন। এরপর ১৯৫২ সালে পাকিস্তানে থাকা সম্পত্তি বিনিময় করে বিধুভূষণ মণ্ডল চলে আসেন ভারতে। কুলদেবী দুর্গাকে পাকিস্তানে ছেড়ে না এসে বিধুভূষণ মণ্ডলের স্ত্রী পাকিস্তানের দুর্গামন্দিরের (Durga Temple) মাটি আঁচলে বেঁধে এনে ইন্দ্রা গ্রামে বিনিময়ের মাধ্যমে প্রাপ্ত নিজ ভিটার পাশেই গড়েন দুর্গামন্দির। মণ্ডলবাড়ির সদস্য শুভম মণ্ডল জানান, তাঁদের বাড়ির দুর্গাপুজোয় অতীতের রীতি মেনে সন্ধিপুজো শুরু হয় এখানে বন্দুকের গুলির শব্দে। ইন্দ্রা গ্রামের দুর্গামন্দিরের গা লাগোয়া রয়েছে ইন্দ্রা গ্রামের মসজিদ। যেখানে দিনে ৫ বার পড়া হয় নমাজ। ষষ্ঠী থেকে দশমী অবধি ইন্দ্রা গ্রামের মণ্ডল বাড়ির দুর্গামন্দির চাতাল থেকে যখন ভেসে আসে মঙ্গলচণ্ডীর গানের সুর শয়ন শেষে উষালগ্নে দেবীকে ফের জাগন পর্বের শঙ্খ-ঘণ্টা- কাঁসরের আওয়াজ সেই সময় কার্যত দুর্গামন্দিরের (Balurghat- Durga Puja) গা লাগোয়া ইন্দ্রা গ্রামের মসজিদ থেকে ভেসে আসা আজানের সুর বাতাসে মিলেমিশে সম্প্রীতির বাতাবরণে দেবী দশভুজা যেন হয়ে ওঠেন দেবী মিলনময়ী।
আরও পড়ুন-বিজেপির ব্যর্থ রিসর্ট পলিটিক্স