চিল্কিগড় রাজবাড়ি
পুজোর সময় ঘুরে আসা যায় ঝাড়গ্রামের চিল্কিগড় রাজবাড়ি (Rajbari Durga Puja)। থাকার পাশাপাশি খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে পুজো দেখার সুযোগ। রাজবাড়ির কুলদেবী কনকদুর্গা। তাঁর মন্দির রাজবাড়ির খুব কাছেই। দুর্গামন্দির দর্শনের পাশাপাশি সেখানে অরণ্যে পায়ে হেঁটে বেড়ানোরও সুযোগ রয়েছে। খরস্রোতা ডুলুং নদীর তীরে ৬১ একর জায়গা জুড়ে রয়েছে চিল্কিগড় মন্দির সংলগ্ন ভেষজ গাছের সম্ভার। প্রায় তিনশোর বেশি প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে। রাজবাড়ি কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অন্দরমহলের পাঁচটি কক্ষকে আপাতত অতিথিশালা করা হয়েছে। চালু হয়েছে রাজবাড়ির নিজস্ব উদ্যোগেই। ঝাড়গ্রাম স্টেশনে নেমে চিল্কিগড় যাওয়া যায়।
বাওয়ালি রাজবাড়ি
প্রায় তিনশো বছরের পুরনো বাওয়ালি রাজবাড়ি (Rajbari Durga Puja)। বহু ইতিহাসের সাক্ষী। এই বাড়ির কোণায় কোণায় রয়েছে রাজকীয়তার অগণিত নজির। বিশাল ঘর, উচ্চমানের রেস্তোরাঁ, সুইমিং পুল, পিয়ানো ঘর রয়েছে। কলকাতা থেকে মাত্র ঘণ্টাখানেকের দূরত্বে এই বিশাল রাজবাড়ি আজ রিসর্টে পরিণত হয়েছে। রয়েছে ব্যাঙ্কোয়েট হল। কাছেপিঠে হয় বেশকিছু দুর্গাপুজো। ঘুরে দেখা যায়। শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে বজবজ। সেখান থেকে স্থানীয় গাড়িতে যেতে হয় উত্তর বাওয়ালি গ্রামে অবস্থিত রাজবাড়ি বাওয়ালি।
ইটাচুনা রাজবাড়ি
কলকাতার কাছেই মাত্র ৭০ কিলোমিটার দূরত্বে খন্যান স্টেশনের কাছেই রয়েছে ইটাচুনা রাজবাড়ি (Rajbari Durga Puja)। ৮ একর জমি নিয়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বাগান ও পুকুরে ঘেরা এই রাজবাড়ি সুবিশাল ও ভারি মনোরম। এর তিনটি অংশ আছে। দেবমহল, অন্দরমহল, এবং বাহিরমহল। সিংহদুয়ার দিয়ে ভিতরে ঢুকে দুই পাশে বিস্তার করে থাকে রাজবাড়ির নানা অংশ। ইটাচুনা রাজবাড়িতে মূলত সাধারণ মানুষ ভিড় করেন রাজকীয়তার স্বাদ উপভোগ করতে। টানা বারান্দা, সাবেকি ধাঁচে সাজানো বিশাল ঘর ও কুণ্ডুবংশের পূর্বসূরিদের ইতিহাসে ঘেরা এই রাজবাড়িতে গেলে একঝটকায় পৌঁছে যাবেন রাজ-রাজড়াদের যুগে।
বাড়ি কোঠি
মুর্শিদাবাদের আজিমগঞ্জের এই রাজবাড়ি নির্মাণ হয়েছিল ১৭৭৪ সালে। নজর কেড়েছে ভ্রমণপিপাসুদের। গ্রাম্য পরিবেশের বুকে জমিদারির স্বাদ পেতে হলে এই জায়গা আদর্শ। পৌঁছলেই প্রথমে সাদরে বরণ করে নেওয়া হয়। কয়েক একর জমি নিয়ে বিস্তৃত সুবিশাল এই রাজাবড়ি ঘুরে দেখতেই কেটে যায় প্রায় একটা দিন। আছে শিসমহল, লাইব্রেরি, জলসাঘর, দরবার হল, জনানা চৌক আরও অনেক কিছুই। ঐতিহাসিক শহরে মুর্শিদাবাদে বসে নবাবি আমেজে পুজোর ছুটি কাটাতে চাইলে বাড়ি কোঠী কিন্তু আদর্শ জায়গা। পুজোয় রাজবাড়িতে থাকা-খাওয়ার বিশেষ আয়োজন থাকে। হাওড়া থেকে ট্রেনে আজিমগঞ্জ। ট্রেন থেকে নেমে স্থানীয় গাড়িতে পৌঁছে যাওয়া যায় বাড়ি কোঠি।
কাশিমবাজার রাজবাড়ি
মুর্শিদাবাদ জেলার অন্তর্গত একটি শহর কাশিমবাজার। আছে রাজবাড়ি। এই রাজবাড়ি পর্যটকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। দেশ-বিদেশ থেকে বহু মানুষ ঘুরতে আসেন। কাশিমবাজার একসময় বাংলার রেশম ব্যবসার প্রধান কেন্দ্র ছিল। এখানে ছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কুঠিও। রাজবাড়ির সুন্দর স্থাপত্য পর্যটকেদের মুগ্ধ করার মতো। থাকা যায় এখানে। এখানকার প্রাচীন দুর্গাপুজো ও অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী প্রথা আজও প্রচলিত আছে। রাজবাড়ির সদস্যদের সঙ্গে মিশে দুর্গাপুজো দেখার সুযোগ রয়েছে। কাছের এক পুকুরঘাটে নবপত্রিকা স্নান, কলাবউকে নতুন রূপে সাজানো, সপ্তমীর পুজো ও অঞ্জলি দেওয়া— উপভোগ করা যায় সবকিছুই। কলকাতা থেকে ট্রেনপথে বহরমপুর কোর্ট স্টেশন। সেখান থেকে স্থানীয় গাড়িতে অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছে যাওয়া যায় কাশিমবাজার রাজবাড়ি।
আরও পড়ুন-এসএসসি-র সফল পরীক্ষা এবং বিরোধীদের অসফল কূটচাল
পঁচেটগড় রাজবাড়ি
পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর ব্লকে রয়েছে পঁচেটগড় রাজবাড়ি। সমুদ্রের কাছেই। এই বাড়ির দ্বারও পর্যটকদের জন্য খোলা। রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রাসোদপম সাদা ভবনটি আসলে দাস মহাপাত্র পরিবারের। শোনা যায়, এই পরিবারের পূর্বপুরুষ ছিলেন বিখ্যাত সেতার বাদক। প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ যদুনাথ ভট্টাচার্যেরও এই বাড়িতে যাতায়াত ছিল। বাড়ির ভিতরে প্রশস্ত চত্বর, সারি দেওয়া ঘর। বৈভব না থাকলেও, আভিজাত্যের ছাপ স্পষ্ট। রাজবাড়ির অলিন্দ কিংবা জলসাঘরে পা রেখে পর্যটকেরা উপলব্ধি করতে পারবেন এই বাড়ির নানা কথা ও কাহিনি। এই বাড়ির ঠাকুর দালানে প্রতি বছর দুর্গাপুজো হয়। রাজবাড়ির ভিতরেই রয়েছে কিশোরাই জিউয়ের মন্দির। ঝুলনের সময় ঘটা করে উৎসবও হয়। থাকার পাশাপাশি এখানকার দুর্গাপুজো দেখলে মন ভরে যাবে। কলকাতা থেকে দিঘা যাওয়ার পথে, বাজকুল ও এগরা সড়কে ৫৫ কিলোমিটার এলে পঁচেট বাস স্ট্যান্ড। সেখান থেকে গ্রামীণ পাকা সড়ক ধরে গাড়িতে ১০ মিনিট এগোলেই পঁচেটগড় রাজবাড়ি।
ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি
শুধুমাত্র বাইরে থেকে দেখে ফিরে আসা নয়, এখন ঝাড়গ্রাম রাজবাড়িতেও রয়েছে পর্যটকদের থাকার সুযোগ। তবে রাজবাড়িতে চাইলেও কেউ প্রবেশের অনুমতি পান না। শুধুমাত্র যাঁরা রাজবাড়ির সদস্য দ্বারা পরিচালিত ‘হেরিটেজ় হোটেলে’ থাকেন তাঁদেরই ভিতরে যাওয়ার ছাড়পত্র থাকে। ৭০ বিঘা জমির উপর তিন গম্বুজ বিশিষ্ট এই রাজবাড়িতে ইউরোপীয় ও মোগল স্থাপত্যের ছাপ স্পষ্ট। রাজবাড়ির সামনেই রাজ পরিবারের সারদা মন্দির। এখানে নিষ্ঠার সঙ্গে আয়োজিত হয় দুর্গাপুজো। হাওড়া থেকে ট্রেনে ঝাড়গ্রাম স্টেশনে নেমে অটো ধরে ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি যাওয়া যায়।