অসীম চট্টোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: নেই আবাহন, নেই বিসর্জনও। পাষাণ প্রতিমায় হয় পুজো। আছে তিনদিনে তিনটি ছাগবলির রেওয়াজ। সূচনাকাল থেকে এই রীতি মেনেই দুর্গাপুজো (Durga Puja- Durgapur) হয়ে আসছে উখড়া গ্রামের পান্ডে পরিবারে। উখড়ার প্রাচীন পুজোগুলির অন্যতম সন্ন্যাসী কালীতলার এই পুজো। প্রায় ৪০০/৪৫০ বছর আগে পুজোর সূচনা। পরিবারের প্রবীণ সদস্য মৃত্যুঞ্জয় পাণ্ডে জানান, তাঁরা আদতে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। প্রায় ৪০০/৪৫০ বছর আগে কোনও কারণে তাঁদের পূর্বপুরুষ উখরা গ্রামে এসে সন্ন্যাসী কালীতলায় বসবাস শুরু করেন। ১৫ প্রজন্ম ধরে তাঁদের এখানে বাস। দুর্গা হল পাণ্ডে-পরিবারের কুলদেবতা। পূর্বপুরুষ উত্তরপ্রদেশ থেকে এখানে আসার সময় কুলদেবতাকে নিয়ে আসেন। সন্ন্যাসী কালীতলা মন্দিরের অদূরে মন্দির তৈরি করে সেখানে কুলদেবতা দুর্গার মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। পাণ্ডে-পরিবারের বসবাসের কারণে জায়গাটি পরবর্তী কালে পাণ্ডে-পাড়া নামে পরিচিত হয়। প্রতিষ্ঠাকালে মন্দিরটি ছিল ইট ও কাঠের। ১৫ বছর আগে প্রাচীন মন্দির সংস্কার করে তৈরি হয় নতুন মন্দির। সেখানে রয়েছে পাথরের তৈরি পাণ্ডে-পরিবারের দুর্গামূর্তি। যা পাষাণদুর্গা নামে পরিচিত। পাথরের তৈরি মূর্তিটির দৈর্ঘ্য মাত্র ১৭ ইঞ্চি। প্রতিমার ডানপাশে রয়েছে সাদা পাথরের শিবলিঙ্গ। পাণ্ডে-পরিবারের দুর্গাপুজোয় (Durga Puja- Durgapur) নেই আবাহন, বিসর্জনের রীতি। বাৎসরিক পূজোর পাশাপাশি মন্দিরে দুর্গার নিত্যপুজো হয়। শাক্তমতে হওয়া অন্য পুজোতে একটি বা দুটি ছাগবলির প্রচলন থাকলেও পাণ্ডে-পরিবারের পুজোয় ছাগবলি হয় তিনটি। সূচনাকাল থেকেই রয়েছে ছাগবলির প্রচলন। কর্মসূত্রে পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকলেও পুজোর চারদিন তাঁরা পারিবারিক পুজোয় অংশ নেন। পুজো পারিবারিক মিলনমেলার রূপ নেয়।