প্রতিবেদন : ইভিএম কারচুপি নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে সবার আগে সরব হয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর থেকে ইন্ডিয়া জোটের পক্ষ থেকে বারবার ভোটযন্ত্রে কারচুপি নিয়ে সরব হয়েছে কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি। কিন্তু আদতে নির্বাচন কমিশন তার তোয়াক্কা করেনি। এবার মহারাষ্ট্রের নির্বাচনের পর ইভিএম কারচুপির ঘটনায় বেকায়দায় পড়ে বিরোধীদের বৈঠকে আহ্বান জানাল নির্বাচন কমিশন।
আরও পড়ুন-কাল থেকে রাজ্যে শুরু শিল্পের সমাধান শিবির
অভিযোগ, মহারাষ্ট্রের ভোটে ইভিএম কারচুপি করে জয় পেয়েছে বিজেপি। সেই অভিযোগে উত্তাল গোটা রাজ্য। নির্বাচন কমিশনে এই মর্মে অভিযোগও দায়ের করা হয় কংগ্রেস-সহ মহাবিকাশ আগাড়ির পক্ষ থেকে। শুধু রাজনৈতিক দলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই এই ইভিএম কারচুপির অভিযোগ। এই ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের সামনে ধরনায় বসেছেন প্রবীণ সমাজকর্মী বাবা আদভও। মহারাষ্ট্রের মানুষও এবরের নির্বাচনের ফল নিয়ে ধন্দে। ডালমে কুছ কালা হ্যায়, এই বিশ্বাস তাঁদের মধ্যেও জন্মাতে শুরু করেছে। ফলে ক্ষোভ বাড়ছে জনমানসেও। এই পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়ে নির্বাচন কমিশন বাধ্য হল কংগ্রেসকে বৈঠকের আহ্বান জানাতে। নির্বাচন কমিশন কারচুপির অভিযোগ ওড়ালেও বেকায়দায় পড়েছে লাগাতার বিক্ষোভ ও ধরনার জেরে। কমিশন জানিয়েছে, ভোটযন্ত্রে কোনও গরমিল ছিল না বা কোনও কারচুপি করা হয়নি। গণনাও হয়েছে স্বচ্ছতার সঙ্গে। মহারাষ্ট্র ভোটে ইভিএম নিয়ে যে সন্দেহ দানা বেঁধেছে তার প্রত্যুত্তরে জানায় নির্বাচন কমিশন। তবে কংগ্রেসকে বৈঠকে আহ্বান জানিয়ে কমিশন বুঝিয়ে দিয়েছে তারা বেকায়দায় পড়েছে। তাই আলোচনা করে সমাধানসূত্র খুঁজতে চাইছে কমিশন। আগামী ৩ ডিসেম্বর বৈঠকে বসবে নির্বাচন কমিশন।
আরও পড়ুন-ফেঙ্গালের প্রভাবে পুদুচেরিতে উদ্ধারে এনডিআরএফ
উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্রের ভোটে বিকেল ৫টা পর্যন্ত যত ভোট পড়েছিল, রাতে এক দফায় এবং পরদিন আর এক দফায় ভোটের হার বেড়ে যায়। সেই ভোটের হার তুলনায় অনেকটাই। লোকসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রেও এমনটা ঘটেছিল। নির্বাচন কেটে যাওয়ার চার-পাঁচদিন পর কী করে ভোট শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিরোধীরা। সেক্ষেত্রে দেখা যায়, সেই আসনগুলিতে সুবিধা পেয়েছিল বিজেপিই। স্বল্প ব্যবধানে জিততে সমর্থ হয়েছিল তারা। মহারাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল। এ-প্রসঙ্গে জাতীয় স্তরে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দিয়েছে কংগ্রেস। এনসিপি প্রধান শারদ পাওয়ারও বলেন, মানুষের থেকে আমরা যে প্রতিক্রিয়া পাচ্ছি, তা উদ্বেগজনক। শুধু রাজনৈতিক দল নয়, এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন সমাজকর্মীরাও। প্রবীণ সমাজকর্মী তো ভোটযন্ত্রের কারচুপির অভিযোগে ধরনায় বসেছেন। এই ঘটনা প্রমাণ করছে এবারে মহারাষ্ট্র নির্বাচনে ফল কমবেশি সকলের কাছে অবিশ্বাস্য লেগেছে। নির্বাচন কমিশন প্রিসাইডিং অফিসারদের নানা কাজের অছিলায় পরবর্তী সময়ে ভোটদানের হার বাড়ার যুক্তি দেখিয়েই ক্ষান্ত।