সঞ্জয় ঘোষাল: জলবায়ু ও আবহাওয়ার নির্ভুল পূর্বাভাস মিললেও, ভূমিকম্প বা অগ্ন্যুৎপাতের আগাম সতর্কবার্তা দেওয়া কার্যত অসম্ভব ছিল বিজ্ঞানীদের কাছে। সেই অসম্ভবকে সম্ভব করতে চলেছেন এক বাঙালি অধ্যাপক ও তাঁর নেতৃত্বাধীন একদল বাঙালি গবেষক। এবার থেকে ভূমিকম্প ও অগ্ন্যুৎপাতের আগাম সতর্কবার্তা মিলবে। সংখ্যাতত্ত্বের সাহায্যেই পাওয়া যাবে সেই পূর্বাভাস। বিশ্বভারতীর স্ট্যাটিস্টিকসের অধ্যাপক দেবাশিস চট্টোপাধ্যায় সংখ্যাতত্ত্বের গবেষণায় অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছেন। এই কাজে তাঁকে সহযোগিতা করেছেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব স্ট্যাটিস্টিক্সের একটি দল। দেবাশিসের নেতৃত্বাধীন গবেষক দলটি ৩৭ হাজার ৩৩১টি ভূমিকম্প ও ১,১৯৩টি অগ্ন্যুৎপাত ও অন্য ঘটনার তথ্য বিশ্লেষণ করে সাফল্য পেয়েছেন। সম্প্রতি এটি ‘প্লাস ওয়ান’ নামে আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়ে সাড়া ফেলেছে গোটা বিশ্বে।
অগ্ন্যুৎপাত ও তার নিকটবর্তী ভূমিকম্পগুলোর মধ্যে একটা সম্পর্ক খুঁজে পান গবেষকেরা। তাঁরা বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে জানতে পারেন, ভূমিকম্প কখন হচ্ছে এবং কোন দিক থেকে আসছে, তা বিচার করে অগ্ন্যুৎপাতের সময় ও তীব্রতা নির্ণয় করা সম্ভব। এই পদ্ধতিতে কখন ভূমিকম্প হতে পারে, আগে থেকেই সতর্কবার্তা দেওয়া যেতে পারে। ফলে দুর্যোগের মোকাবিলা করা সহজ হবে। বিপদ থেকে মানবজীবনকেও রক্ষা করা সম্ভব হবে।
দু’টি মডেল তৈরি করেছেন গবেষকেরা। প্রথম মডেলে বিশেষ গাণিতিক সূত্রের মাধ্যমে ভূমিকম্পের গড় তীব্রতাকে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের সময়ের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। দ্বিতীয় মডেলে ভিন্ন গাণিতিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। দুটি মডেলই সফল। পুরোটাই বাঙালি অধ্যাপক ও গবেষকদের সাফল্য। দেবাশিসের সঙ্গে এই গবেষণায় ছিলেন আইআইএসের অম্লান বন্দোপাধ্যায় ও শিলাদ্রিশেখর দাস। ছিলেন আমেরিকার নর্থ ক্যারোলাইনা স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষক বিশ্বভারতীর প্রাক্তন ছাত্র পৃথ্বীশ ঘোষও।
আরও পড়ুন: জলাধার বন্ধ করে পাকমুখী চেনাবের জল রুখল ভারত