চাকা ঘুরল, ডার্বি ইস্টবেঙ্গলের দিমির প্রত্যাবর্তনে শেষ চারে

ইস্টবেঙ্গল ২ মোহনবাগান ১ (দিয়ামানতাকোস) (অনিরুদ্ধ)

Must read

চিত্তরঞ্জন খাঁড়া
১৮ মাস পর সিনিয়র দলের কলকাতা ডার্বিতে জিতল ইস্টবেঙ্গল (east bengal)। গত বছর সুপার কাপের পর আবার ডার্বিতে জ্বলল মশাল। আর যুবভারতীতে ঠিক দু’বছর পর। ২০২৩ সালের ডুরান্ড কাপের গ্রুপ পর্বে মোহনবাগানকে হারিয়েও ফাইনালে দিমিত্রি পেত্রাতোসের গোলে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল ইস্টবেঙ্গলের। এবার সেই ডুরান্ডেই কোয়ার্টার ফাইনালে লিগ-শিল্ড ও আইএসএল চ্যাম্পিয়নদের ছিটকে দিয়ে মধুর প্রতিশোধও নিল লাল-হলুদ ব্রিগেড। দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোসের জোড়া গোলে ২-১ জিতে ডুরান্ডের সেমিফাইনালেও উঠে গেল অস্কার ব্রুজোর দল। শেষ চারে সামনে কিবু ভিকুনার ডায়মন্ড হারবার।

শুধু জয় নয়, অনেকদিন পর রীতিমতো কর্তৃত্ব করে জয়। শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গেই লাল-হলুদ গ্যালারির গর্জনে কাঁপল যুবভারতী। ডাগ আউটে অস্কারের আগ্রাসী সেলিব্রেশন বুঝিয়ে দিচ্ছিল, ডার্বি জয়ের খাতা খোলার জন্য কতটা মরিয়া ছিলেন তিনি। ম্যাচের আগের দিন অস্কার বলেছিলেন, তাঁর নতুন দল এবার চমক দেবে। মরশুমের প্রথম ডার্বিতে চমকই দিল ইস্টবেঙ্গল (east bengal)। দিয়ামানতাকোসের প্রত্যাবর্তন হল। মিগুয়েল ফেরেরা, কেভিন সিবিললে অভিষেক ডার্বিতে বুঝিয়ে দিলেন, মহম্মদ রশিদকে সঙ্গে নিয়ে ইস্টবেঙ্গলকে এবার অনেক দূর নিয়ে যাবেন।

দলের ফাঁকফোকর ভরাট করেছিলেন। পুরনো ছাত্র মিগুয়েল ফেরেরার মতো প্লে-মেকার এনেছেন। বিপিন সিং, এডমুন্ডের মতো গতিময় উইঙ্গার দলের শক্তি বাড়িয়েছে। এদিন বিপিন, মিগুয়েল, সাউল ক্রেসপোরা পরস্পরের কাছে থেকে পাস খেললেন। মহম্মদ রশিদের অভাব ঢেকে দিল মিগুয়েলদের প্রেসিং ফুটবল। অস্কারের চালে প্রথম ৪৫ মিনিট অনিরুদ্ধ থাপা, সাহাল আব্দুল সামাদ, লিস্টন কোলাসোরা আটকে গেলেন। পালা করে রাকিপ, এডমুন্ড, বিপিনরা বোতলবন্দি করে রাখেন লিস্টনকে। তার মধ্যেই ১৫ মিনিটের মাথায় চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন হামিদ আহদাদ। বাধ্য হয়েই দিয়ামানতাকোসকে নামান অস্কার। সেটাই শাপে বর হয়ে দাঁড়ায়।

আরও পড়ুন-জয়ের খিদে বেশি দেখলাম অস্কারের দলের

৩৫ মিনিটের মাথায় বক্সের মধ্যে বিপিনকে ফাউল করেন আশিস রাই। পেনাল্টি থেকে বাঁ পায়ের শটে ঠান্ডা মাথায় গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দেন দিমি। প্রথমার্ধের শেষ দিকে অপুইয়ার দূরপাল্লার শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। এটাই ছিল প্রথমার্ধে মোহনবাগানের একমাত্র প্রয়াস। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই পাসাং দোরজি তামাংকে তুলে জেসন গকামিন্সকে নামান মোহনবাগান কোচ জোসে মোলিনা। শুরুতেই সুযোগ তৈরি করেন। কিন্তু সাহাল তা হেলায় হারান। এরপর ৫২ মিনিটে দুর্দান্ত একটি আক্রমণ থেকে দ্বিতীয় গোল ইস্টবেঙ্গলের। মিগুয়েলের পাস থেকে আলবার্তো রডরিগেজকে ঘাড়ে নিয়ে বল নিজের ও দলের দ্বিতীয় গোল দিমির। খারাপ সময় কাটিয়ে প্রত্যাবর্তন গ্রিক স্ট্রাইকারের। ০-২ পিছিয়ে পড়ে দিমিত্রি পেত্রাতোস, দীপক টাংরি, দীপেন্দু বিশ্বাসের মতো ফ্রেশ লেগ নামিয়ে দেন মোলিনা। অল আউট আক্রমণে যায় মোহনবাগান। রক্ষণাত্মক হয়ে পড়ে ইস্টবেঙ্গল। লিস্টনের শট পোস্টে লেগে ফেরে। ৬৮ মিনিটে সেই লিস্টনেরই কর্নার থেকে ফিরতি বলে অনিরুদ্ধর দূর থেকে মারা শট জটলার মধ্যে জালে জড়িয়ে যায়। পরের কয়েক মিনিটের মধ্যে ইস্টবেঙ্গল কোনওরকমে গোল রক্ষা করে। গোললাইন সেভ করেন কেভিন। শেষদিকে ইস্টবেঙ্গলও ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ হাতছাড়া করে। দু’দলের ফুটবলাররা মাথা গরম করায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত ২-১ স্কোরলাইনেই ডার্বি জয়ের খরা কাটাল ইস্টবেঙ্গল।

Latest article