অনির্বাণ দাস: নতুন বছরের শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়ল ইস্টবেঙ্গল। সোমবার ঘরের মাঠে লাল-হলুদকে ডোবালেন দুই বিদেশি স্টপার হেক্টর ইউস্তে ও হিজাজি মাহের। নিট ফল, ১৪ ম্যাচে ১৪ পয়েন্টেই আটকে রইল ইস্টবেঙ্গল। সুপার সিক্সের দৌড়েও পিছিয়ে পড়ল।
অথচ প্রথমার্ধে ০-২ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ার পর ২-২ করে দিয়েছিল লাল-হলুদ। মনে হয়েছিল পাঞ্জাব ম্যাচের পুনরাবৃত্তি ঘটতে চলেছে। কিন্তু ৮৭ মিনিটে হিজাজির ক্ষমার অযোগ্য ভুলে তিন পয়েন্ট ছিনিয়ে নিয়ে গেলেন মুম্বই সিটি এফসির গ্রিক স্ট্রাইকার নিকোস কারেলিস। মাঝমাঠ থেকে নির্বিষ একটা থ্রু বাড়িয়েছিলেন মুম্বইয়ের নাথান রডরিগেজ। সেই বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে পায়ের তলা দিয়ে গলিয়ে দেন হিজাজি। ফাঁকায় বল পেয়ে গোল করতে ভুল করেননি কারেলিস। আর ম্যাচে ফিরতে পারেননি অস্কার ব্রুজোর দল।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
হারের দায় এড়াতে পারেন না ইস্টবেঙ্গল কোচও। ঘরের মাঠে ম্যাচ। মুম্বই আগের ম্যাচেই নর্থইস্ট ইউনাইটেডের কাছে তিন গোলে হেরেছে। কিন্তু অস্কারের স্ট্রাটেজি কী ছিল কে জানে! কোথায় শুরু থেকেই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ঝাঁপাবে, তা নয় দুলকি চালে পুরো প্রথমার্ধ খেলে গেল ইস্টবেঙ্গল। এমনকী, দু-গোলে পিছিয়ে পড়ার পরেও কোনও হেলদোল দেখা গেল না। কোনও পরিকল্পনার ছাপ ছিল না ক্লেটনদের খেলায়। অজস্র ভুল পাস ও উচুঁ করে বিপক্ষ রক্ষণে বল ভাসিয়ে দিয়েই দায় সারলেন। পাল্লা দিয়ে খারাপ খেলল রক্ষণও। ৩৯ মিনিটে মুম্বইয়ের প্রথম গোল। ব্রেন্ডন ফার্নান্দেজের পাস থেকে বল পেয়ে ১-০ করেন ছাংতে । ৪৩ মিনিটে হেক্টরের ভুলে ২-০। মাঝমাঠ থেকে বাড়ানো থ্রু বিপন্মুক্ত করা তো দূরের কথা, হঠাৎ করেই দাঁড়িয়ে গেলেন হেক্টর। ফাঁকায় বল পেয়ে যাওয়া কারেলিসের শট রুখে দিয়েছিলেন প্রভসুখন গিল। কিন্তু তাঁর হাত থেকে ছিটকে আসা বল বিনা বাধায় জালে জড়ান কারেলিস।
আরও পড়ুন-ও ডাক্তার, সাত ঘণ্টাও কাজ করবেন না!
বিরতির পর দ্রুত দুটি পরিবর্তন করেন অস্কার। নন্দকুমার ও প্রভাত লাকড়াকে তুলে নিয়ে মাঠে নামান নাওরেম মহেশ ও নিশুকুমারকে। মরিয়া হয়ে আক্রমণের ঝড় তোলে ইস্টবেঙ্গল। দিয়ামানতাকোস একবার ফাঁকা গোল পেয়েও ভেসে আসা ক্রসে মাথা ছোঁয়াতে পারেননি। অবশেষে ৬৬ মিনিটে সাহিল পানওয়ারের আত্মঘাতী গোলে ব্যবধান কমায় ইস্টবেঙ্গল। ৮৩ মিনিটে পরিবর্ত হিসাবে মাঠে নামা ডেভিড ২-২। যুবভারতীতে উপস্থিত লাল-হলুদ সমর্থকরা যখন তিন পয়েন্টের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন, তখনই হিজাজির হাস্যকর ভুলে স্বপ্নভঙ্গ! ইস্টবেঙ্গলের পরের ম্যাচটাই ডার্বি। রক্ষণের এই হাল বজায় থাকলে, সেদিন কিন্তু অস্কারের কপালে দুঃখ রয়েছে।