চিত্তরঞ্জন খাঁড়া: কলকাতা লিগে ডার্বির শতবর্ষ। চার বছর পর ঘরোয়া লিগের বড় ম্যাচ। কিন্তু কোথায় সেই ডার্বির উত্তেজনা! ভরদুপুরে যুবভারতীর প্রায় ফাঁকা গ্যালারিতে বাঙালির চিরকালীন বড় ম্যাচ। মেরেকেটে ১০ হাজার দর্শক। কলকাতা ডার্বির ইতিহাসে এত কমসংখ্যক দর্শক হয়েছে কি না, তা নিয়ে পরিসংখ্যানবিদদের মধ্যে তর্ক চলতে পারে। এমনই এক মহারণে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগানকে ২-১ গোলে হারিয়ে মরশুমের প্রথম ডার্বি জিতল ইস্টবেঙ্গল। সেইসঙ্গে লিগে জয়ের হ্যাটট্রিক। তিন ম্যাচ খেলে জয়হীন মোহনবাগান আরও চাপে। লাল-হলুদের গোলদাতা পিভি বিষ্ণু ও জেসিন টি কে। দশজনের ইস্টবেঙ্গলকে পেয়ে মোহনবাগান একগোল শোধ করে ম্যাচের সংযুক্ত সময়ের শেষ মিনিটে। গোলদাতা সুহেল ভাট।
মোহনবাগান প্রথম দুই ম্যাচ ড্র করায় নিজেদের রক্ষণাত্মক খোলসে মুড়ে রেখেছিল। এই সুযোগটা নিয়েই দ্রুত মাঝমাঠের দখল নিয়ে আক্রমণে ঝাঁজ বাড়ায় ইস্টবেঙ্গল। প্রথমার্ধে সাদামাটা ফুটবলের মধ্যেও একচেটিয়া আধিপত্য নিয়ে খেলে একাধিক গোলের সুযোগ পেয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। বিষ্ণু একাই দু’টি সুযোগ নষ্ট করেন। গতবারের লিগের নায়ক ডেভিড দলবদলে লাল-হলুদ জার্সিতে প্রথম ম্যাচে নিষ্প্রভ। না হলে বিরতির আগেই এগিয়ে যেতে পারত ইস্টবেঙ্গল।
আরও পড়ুন-হারারেতে সিরিজ জয় শুভমনদের
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই লাল-হলুদ ঝড়। আমন সি কে-র শট কোনও রকমে গোললাইন সেভ করেন মোহনবাগান ডিফেন্ডার সৌরভ ভানওয়ালা। এর কিছুক্ষণ পরেই গোল পেয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। ৫১ মিনিটে সার্থক গোলুইয়ের লম্বা বল ধরেন বিষ্ণু। রিসিভেই কেটে যায় মোহনবাগানের দুই ফুটবলার। কাট করে ভিতরে ঢুকে মোহনবাগান গোলকিপার এবং দুই ডিফেন্ডারকে দাঁড় করিয়ে বাঁ-পায়ের শটে দুরন্ত গোল বিষ্ণুর। মোহনবাগান রক্ষণ তখন দিশেহারা। ৬৪ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ইস্টবেঙ্গল গ্যালারিতে মশাল জ্বালান ডেভিডের পরিবর্ত জেসিন। মোহনবাগান রক্ষণের জঘন্য ভুলে আমনের পাস থেকে গোল জেসিনের। ৭৫ মিনিটে লাল-কার্ড দেখেন ইস্টবেঙ্গলের যোশেফ জাস্টিন। দশজনের লাল-হলুদকে পেয়ে কিছুটা ভাল ফুটবল খেলে মোহনবাগান। সংযুক্ত সময়ের শেষ মিনিটে সুহেলের দুরন্ত হেডে এক গোলের ব্যবধান কমায় সবুজ-মেরুন। ম্যাচে ফেরার আর কোনও সুযোগ ছিল না।
ম্যাচের সেরা বিষ্ণু বললেন, ‘ডার্বিতে গোল করতে পেরে দারুণ অনুভূতি হচ্ছে। ডার্বি জয় আমাদের লিগে এগিয়ে দেবে।’ মোহনবাগান কোচ ডেগি কার্ডোজো বললেন, ‘দ্বিতীয়ার্ধে শেষ দিকে ভাল খেলেছি। মরশুম সবে শুরু। ঘুরে দাঁড়াব।’ গ্যালারি ফাঁকা থাকায় কাঠগড়ায় আইএফএ। সচিবের অনির্বাণ দত্তর সাফাই, ‘দেরিতে ম্যাচের অনুমতি পেয়েছি। টিকিট ছাপাতেও দেরি হয়েছে। টিভি, ডিজিটালে অনেক মানুষ ম্যাচ দেখেছে।’