প্রতিবেদন : ভয়, ভয় এবং ভয়। ভয় তৃণমূল কংগ্রেসকে। ভয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ভয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ভয় ইন্ডিয়া জোটকে। জোটের ঘায়ে পিছনের দরজা দিয়ে দেশের নাম বদলের চেষ্টা অব্যাহত। তাতেও সুবিধা করতে না পেরে জোটের অন্যতম কান্ডারি তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠাল এনফোর্সমেন্ট ডায়রেক্টরেট। কবে ডাকা হল?
আরও পড়ুন-শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গ্রামাঞ্চলে ন্যূনতম ৫ বছর শিক্ষকতা বাধ্যতামূলক, বাংলায় জোর নয়া শিক্ষানীতিতে
বেছে বেছে ডাকা হল এমন একটা দিনে, যেদিনে ইন্ডিয়া জোটের কো-অর্ডিনেশন কমিটি বা সমন্বয় কমিটির প্রথম বৈঠক। বহু আগে ঘোষিত। হঠাৎ ডাকা নয়। তা সত্ত্বেও ১৩ সেপ্টেম্বর দিনটিকেই বেছে নেওয়া হয়েছে। পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে ইন্ডিয়া জোটকে কতখানি ভয় পেয়েছে দিল্লি বিজেপি। অভিষেককে আটকে সমন্বয় কমিটির বৈঠকে যেতে বাধা দেওয়া। বিজেপির এই এজেন্সিভিত্তিক রাজনীতি বুঝিয়ে দিচ্ছে শেষের শুরু হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন-শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে চাপে বাংলাদেশ
ইডির এই জিজ্ঞাসাবাদের চিঠির প্রসঙ্গটি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই ট্যুইট করে জানিয়েছেন। আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে তিনি লিখেছেন, ইডির অধিকর্তা একটি নোটিশ পাঠিয়েছেন। বলেছেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁদের সামনে উপস্থিত হতে হবে। এবং কোন দিনটিতে? যে দিনটিতে ইন্ডিয়া জোটের সমন্বয় কমিটির প্রথম বৈঠক। এরপরেই অভিষেকের তীব্র কটাক্ষ, বিস্মিত হয়ে দেখছি ৫৬ ইঞ্চির ছাতির সেই মডেলকে, লক্ষ্য করছি ভীরুতা আর শূন্যতা। এটাকেই বলে ফিয়ার অফ ইন্ডিয়া বা ইন্ডিয়াকে ভয়।
আরও পড়ুন-কিংস কাপে ব্রোঞ্জ পদকের ম্যাচ, চেনা লেবানন, তবু আজ সতর্ক ভারত
এর আগেও একইভাবে অভিষেকের নবজোয়ার কর্মসূচির মাঝে ইডি তলব করেছিল। বাংলার গ্রামাঞ্চলে তখন তিনি দলীয় প্রচারে। সকলে দেখছিলেন টানা কর্মসূচি। একদিনের জন্যও কলকাতায় ফেরেননি। তাঁর রাজনৈতিক কর্মসূচি ভণ্ডুল করতে তলব করা হয়। তলবে সাড়া দিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কর্মসূচি বন্ধ করে ফিরে এসেছিলেন কলকাতায়। মুখোমুখি হন ইডির। ফিরে গিয়ে ফের কর্মসূচিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তারপরেও ইডির ইচ্ছে ছিল কর্মসূচি বানচাল করার। কিন্তু আইনজীবী মারফত তথ্য পাঠিয়ে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, নবজোয়ার কর্মসূচি শেষ হলে যে কোনও দিন তাঁকে ডাকা যেতে পারে। আগে যতবার এজেন্সি তাঁকে ডেকেছে, উপস্থিত হয়েছেন। দিল্লিতে গিয়েছেন। বারবার গিয়েছেন। কিন্তু এবার ১৩ সেপ্টেম্বর ইডির তলব আর একবার প্রমাণ করে দিল, তৃণমূল কংগ্রেস বা ইন্ডিয়ার কর্মসূচিতে কতখানি ভয় পেয়েছে দিল্লির বিজেপি। সেবার লক্ষ্য ছিল নবজোয়ার কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া। আর এবার ইন্ডিয়ার বৈঠকে যেতে না দেওয়া। রাজনৈতিক লড়াইয়ে হেরে গিয়ে বিজেপি এখন সস্তার এজেন্সিভিত্তিক রাজনীতিতে নেমে এসেছে।
আরও পড়ুন-ব্রাত্যর বার্তা, গভীর রাতে বোসের রহস্য চিঠি
মণিপুর জ্বলছে। উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির অস্থির অবস্থা। একের পর বিধানসভা ভোটে পরাজয়। জিনিসপত্রের লাগামছাড়া দাম। কৃষক-শ্রমিকদের রুটি-রুজি নেই। তৈরি হচ্ছে না কর্মসংস্থান। বেচে দেওয়া হচ্ছে সরকারি সংস্থা। দেশের টাকা আত্মসাৎ করে পালানো শিল্পপতিদের আশ্রয় দিচ্ছে বিজেপি সরকার। মণিপুরের ব্যর্থতা ঢাকা দিতে নিয়ে আসা হল ভারত না ইন্ডিয়ার বিতর্ক। কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচা করে জি-২০ সম্মেলন করে নিট ফল শূন্য। ভেসে গেল কোটি কোটি টাকা ঢেলে তৈরি সম্মেলন এলাকা। তৃণমূল কংগ্রেসকে এজেন্সি দিয়ে আক্রমণ করা হচ্ছে। আটকে রাখা হচ্ছে বকেয়া। রাজ্যপালকে শিখণ্ডী খাড়া করে রাজ্যের স্বাভাবিক পরিস্থিতি নষ্ট করার চক্রান্ত চলছে। সেই চক্রান্তে যোগ হল ১৩ সেপ্টেম্বর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইডির তলব। যার প্রতিটি পদক্ষেপে ৫৬ ইঞ্চির ভীরুতা ও শূন্যতা দেখা যাচ্ছে।