গঙ্গাসাগর : অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে শনিবার বেলা তিনটে পর্যন্ত সাগরমেলায় ৩৯ লক্ষ পুণ্যার্থী পৌঁছে গিয়েছেন বলেই জানালেন মেলার দায়িত্বে থাকা রাজ্যের ক্রীড়া, যুবকল্যাণ ও বিদ্যুৎ দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। সন্ধ্যা ৬টা ৫৩ মিনিট থেকে শুরু হয়েছে মকর সংক্রান্তির শাহি স্নান, যা চলবে রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত। এখনও পর্যন্ত সব নির্বিঘ্নেই চলছে বলেই শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়ে দিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
আরও পড়ুন-ক্রুজ-ওয়াটার স্পোর্টস ও নদীভ্রমণ, রাজ্যের বিপ্লব
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে তিনি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী পুলক রায়, ইন্দ্রনীল সেন, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, সুজিত বসু, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, বঙ্কিম হাজরা, জেলা সভাধিপতি শামিমা শেখ ও জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা। এদিন মকরস্নানের আগে সামান্য বাদ সেধেছিল প্রকৃতি। ঘন কুয়াশার জেরে শুক্রবার রাত ন’টা থেকে কাকদ্বীপের লট নং ৮, কচুবেড়িয়া থেকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ভেসেল পরিষেবা বন্ধ করে দেয় জেলা প্রশাসন। বন্ধ ছিল তীর্থযাত্রীদের বাসও। শনিবার বেলা দশটা নাগাদ কুয়াশা কেটে যাওয়ার পর ফের পরিষেবা চালু করা হয়। তীর্থযাত্রীদের যাতে কোনওরকম অসুবিধা না হয় তার জন্য আগাগোড়াই সতর্ক প্রশাসন।
আরও পড়ুন-অডিওটেপ প্রকাশ্যে, প্রার্থী পিছু ২.৫০ লাখ করে ঘুষ, টাকা নিয়ে ১৭ চাকরি! ফাঁপড়ে বিজেপি বিধায়ক
এবার এক টিকিটেই বাবুঘাটের শিবির থেকে গঙ্গাসাগর মেলায় পৌঁছে যাচ্ছেন তীর্থযাত্রীরা। আবার স্নান সেরে সেই টিকিটেই ফিরে আসা যাবে কলকাতায়। বাস থেকে ভেসেল— সব ওই এক টিকিটেই। এই ব্যবস্থায় খুশি তীর্থযাত্রীরা। রাজ্যের আটজন মন্ত্রী সাগরে ঘাঁটি গেড়ে সব সামলাচ্ছেন। সাগরে যাওয়া-আসার জন্য সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় ২২৫০টি বাস চলছে তীর্থযাত্রীদের জন্য। এছাড়া রয়েছে ৩৪টি ভেসেল। মুড়িগঙ্গা নদিতে দিনরাত পরিষেবা দিচ্ছে ১০০টি লঞ্চ। এই লঞ্চে করেই লক্ষ লক্ষ তীর্থযাত্রীরা লট নম্বর ৮ থেকে কচুবেড়িয়া হয়ে গঙ্গাসাগরে পৌঁছে যাচ্ছেন। যাত্রী পরিষেবায় রয়েছে ৫টি বার্জ। তিনটি যাত্রী পরিষেবা দিচ্ছে। বাকি দুটি রিজার্ভে রয়েছে। শনিবার সন্ধে থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে শাহি স্নান। সব মিলিয়ে গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে সতর্ক নজর রয়েছে প্রশাসনের। মুখ্যমন্ত্রীও আগত তীর্থযাত্রীদের যাতে কোনও সমস্যায় পড়তে না হয় তার জন্য মন্ত্রীদের কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। এরই মধ্যে মেলায় এসে তিনজন পুণ্যার্থী হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন।
আরও পড়ুন-মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্য, ঘোষণা অমর্ত্যর
শুক্রবারই এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাঁদের কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছে। শনিবার অরূপ বিশ্বাস জানান, মেলায় পুণ্যার্থীদের জন্য আছেন ৭০০ জন স্বাস্থ্যকর্মী। একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ও চারটি ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়েছে। খাবারের গুণগত মান নিয়েও সতর্ক প্রশাসন। অফিসাররা ঘুরে দেখছেন সব। সুবজ ও স্বচ্ছ সাগরমেলার জন্য সাফাইকর্মীরা ২৪ ঘণ্টা কাজ করছেন। মেলায় প্লাস্টিক বন্ধের জন্য বিলি করা হচ্ছে পরিবেশবান্ধব ব্যাগ। এবার এখনও পর্যন্ত ভার্চুয়ালি কপিলমুনির মন্দির দর্শন করেছেন ৬০ লক্ষ ৪০ হাজার মানুষ। ই-স্নান সেরেছেন ৩ হাজার ৫৫৪ জন। ২০ লক্ষ ৩০ হাজার মানুষ ই-পুজো দিয়েছেন। এখনও পর্যন্ত নিখোঁজের কোনও খবর নেই।