SIR-এর আতঙ্কে বিষ খেয়ে ‘আত্মঘাতী’ পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের প্রৌঢ়

SIR ঘোষণার পরে রাজ্যে এই তিনটি মৃত্যু ঘটে গিয়েছে।

Must read

স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন বা SIR চালু হওয়ার পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হটকারিতা এড়ানোর বার্তার পরেও ঘটছে একের পর এক অকালমৃত্যুর ঘটনা। SIR ঘোষণার পরে রাজ্যে এই তিনটি মৃত্যু ঘটে গিয়েছে। তালিকায় রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটি, কোচবিহারের দিনহাটা এবং বীরভূমের ইলামবাজার। প্রথম থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাধারণ মানুষের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু আজ, শনিবার পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে বিমল সাঁতরা নামে এক ব্যক্তির অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। মৃতের ছেলের দাবি, এই ব্যক্তি দীর্ঘদিন তামিলনাড়ুতে কাজ করতেন। SIR ঘোষণার পরে বেশ চিন্তায় ছিলেন এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে গিয়েছিলেন। সেই উদ্বেগ থেকেই হঠাৎ বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি বলে পরিবারের তরফে দাবি।

আরও পড়ুন-কমছে তিস্তার জলস্তর

খবর পেয়ে ওই পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যের শাসকদল। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে জেলা সভাপতি রবি চট্টোপাধ্যায় এবং বর্ধমান পুরসভার মেয়র পারিষদ স্বপন দেবনাথ মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন। প্রসঙ্গত, শুক্রবার ব্যারাকপুরের একটি পরিবারও দাবি করেছিল, SIR-এর আতঙ্কে বাড়ির মহিলা অগ্নিদগ্ধ হয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। ঘটনার তদন্ত চলছে। এর মাঝেই পূর্ব মেদিনীপুরে বিমল সাঁতরার মৃত্যুর ঘটনা ঘিরে নতুন করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।

তামিলনাড়ু পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ অক্টোবর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বিমল সাঁতরা। সেখানে কয়েক দিন ভর্তি থাকার পরে বৃহস্পতিবার বিমলের মৃত্যু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় শনিবার সন্ধ্যায় দেহ গ্রামে আসে। দেহ গ্রামে আসার সময় উপস্থিত ছিলেন জামালপুরের বিধায়ক অলোক মাঝি-সহ তৃণমূলের নেতৃত্ব।

আরও পড়ুন-জয়পুরে স্কুলের পাঁচতলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে মৃত্যু ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়ার

তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি এসআইআর ঘোষণা হওয়ার পরে এই একই রকম আতঙ্কে ভুগছেন গ্রামের বহু মানুষ। এই গ্রাম থেকে বহু মানুষ তামিলনাড়ু ও অন্যান্য রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। তাঁরাও মূলত ধান রোয়ার কাজ করেন। মৃতের পড়শি সোমনাথ শীল দাবি করেন, ‘কাজ করবে না নথি জোগাড়ের চিন্তা করবে? ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় কার নাম আছে আর কার নাম নেই, সেটা কী পরিযায়ী শ্রমিকদের পক্ষে জানা সম্ভব। ফলে, সবার মনেই আতঙ্ক তৈরি হচ্ছে।’

এই মৃত্যুর সঙ্গে স্পষ্ট হয়েছে রাজ্যে একশো দিনের কাজ বন্ধ হওয়ায় সাধারণ মানুষের চরম দুর্ভোগের ছবিটাও। বিধায়কের দাবি, ‘প্রায় আড়াই বছর ধরে ১০০ দিনের কাজ বন্ধ। সে কারণে ধান রোয়াতে পটু যাঁরা তাঁরা ভিন রাজ্যে কাজে যাচ্ছেন। এসআইআর নিয়ে উনি (বিমল) ভয়ে ছিলেন। বাড়িতে ফোন করে আলোচনা করেছিলেন। চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।’

Latest article