প্রতিবেদন : বিরোধীদের লাগাতার প্ররোচনা সত্ত্বেও রাজ্যের চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনে নির্বিঘ্নেই মিটল ভোটগ্রহণ পর্ব। মানিকতলা, বাগদা, রায়গঞ্জ ও রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্র থেকে বড় কোনও গোলমালের খবর নেই। অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে সাধারণ মানুষ গণতন্ত্রের উৎসবে অংশ নিয়েছেন। সব ভোটকেন্দ্রের বাইরে দেখা গিয়েছে ভোটারদের লম্বা লাইন। মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতোই। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত চার কেন্দ্রে ভোটদানের হার ছিল ৬২.৭১ শতাংশ। মানিকতলায় ভোট পড়েছে ৫১.৩৯ শতাংশ, বাগদায় ৬৫.১৫ শতাংশ, রায়গঞ্জে ৬৭.১২ ও রানাঘাট দক্ষিণে ভোটদানের হার ৬৫.৩৭ শতাংশ।
আরও পড়ুন-ট্যুইট মুছলেন বোস
উপনির্বাচনের জন্য আগেই বুধবার এন আই অ্যাক্টে আগেই ছুটি ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। উপ-নির্বাচন নিয়ে প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ বলেন, মানিকতলা-সহ চার কেন্দ্রেই নির্বিঘ্নে ভোট হয়েছে। মানুষ অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিয়েছেন। বিপুল ভোটে হার নিশ্চিত বুঝে বিজেপির লোকজন গোলমাল পাকানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে। কিছু জায়গায় তাদের গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে ছোটখাটো গোলমাল হয়। সেই গোলমালের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু এসব তৃণমূলের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা হয়েছে। তবে তৃণমূলকর্মীরা কোনও প্ররোচনায় পা না দিয়ে সংযত আচরণই করেছে। তৃণমূল উন্নয়নের ওপর দাঁড়িয়ে ভোট করেছে। তাই এসব করার তাঁদের কোনও প্রয়োজন হয়নি। বিজেপির প্ররোচনার পিছনে কোথাও কোথাও সিপিএমেরও মদত ছিল। কিন্তু সেসব করেও খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি বিরোধীরা। চার কেন্দ্রেই তৃণমূল প্রার্থীরা বিপুল ভোটে জিততে চলেছেন। সব মিলিয়ে ভোট শেষের পর পুরোপুরি আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল কংগ্রেস শিবির। উপনির্বাচনের ধারাবাহিকতা মেনে এবারও ভোটদানের হার ছিল তুলনামূলক ভাবে কিছুটা কম।
মানিকতলায় এদিন ভোট দেন তৃণমূল প্রার্থী সুপ্তি পাণ্ডে। বাগদার উপনির্বাচনও ছিল মোটের উপর শান্তিপূর্ণ। কোনও গন্ডগোল বা উত্তেজনার খবর নেই। তৃণমূল প্রার্থী মধুপর্ণা ঠাকুর প্রথমে মা সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের সঙ্গে এলাকায় ঘুরলেও পরে একাই বুথে বুথে ঘোরেন। তাঁকে আগাম শুভেচ্ছা জানান অনেকেই। বিজেপি প্রার্থী বুথে বুথে ঘোরার সময় কয়েক জায়গায় তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় সাধারণ মানুষ। ওঠে গো-ব্যাক স্লোগান। বেগতিক বুঝে ভোট শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই ময়দান ছাড়েন তিনি।
রায়গঞ্জেও এদিন মোটের ওপর ভোট ছিল শান্তিপূর্ণ। সকাল থেকেই ছিল বৃষ্টি। সকালে স্থানীয় রায়গঞ্জ করোনেশন হাইস্কুলের ১৪১ নং বুথে ভোট দেন তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণী। তিনি জানান, শান্তিপূর্ণ হয়েছে ভোট। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নকে মাথায় রেখেই মানুষ ভোট দিয়েছেন। বৃষ্টি উপেক্ষা করে ভোট দিতে ভোটকেন্দ্রে ভিড় জমায় আম জনতা। রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রেও উৎসাহের সঙ্গে ভোট দেন সাধারণ মানুষ। কয়েকটি জায়গা থেকে ইভিএম খারাপ থাকার অভিযোগ আসে। তবে অভিযোগ পাওয়ার কিছুক্ষণ পর সেই সমস্যা মিটে যায়। এর জেরে কয়েকটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ সাময়িক ভাবে ব্যাহত হয়।