মানস ভট্টাচার্য
অনেক হয়েছে, আইএসএল নিয়ে এই নাটক এবার বন্ধ হোক। ফুটবলারদের (football) পায়ে বল পড়ুক। খেলা এগিয়ে চলুক।
দেখুন, যা হচ্ছে তা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। ক্লাবকে বলা হচ্ছে দায়িত্ব নাও। এটা কয়েক পক্ষের দাবি। অনেকটা প্রিমিয়ার লিগের ধাঁচের। পাগল নাকি! আমার কাছে এটা অবাস্তব মনে হচ্ছে। ক্লাব জোট কী করে এত বড় লিগ চালাবে। এই যে বিশাল খরচ, সেটা আসবে কথা থেকে? ক্লাবদের হাতে এত টাকা থাকলে তাদেরই স্পনসরের মুখাপেক্ষী থাকতে হত না। সবমিলিয়ে কেমন যেন তালগোল পাকানো অবস্থা।
বৃহস্পতিবারের বৈঠকের দিকে অনেকের মতো আমিও তাকিয়ে ছিলাম। ভেবেছিলাম ক্রীড়ামন্ত্রক সমাধানের রাস্তা খুঁজে বের করে আইএসএল শুরুর পথ বাতলে দেবে। কিন্তু কোথায় কী। উল্টে বলা হল ক্লাবগুলিকেই তাদের দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জমা দিতে হবে। কীভাবে টাকা আসবে, কীভাবে লিগ হবে ইত্যাদি। তার মানে তো ব্যাপারটার কোনও সুরাহা হল না। দায়িত্ব থেকে দেওয়া হল ক্লাব জোটের দিকে। অতএব, আইএসএল সেই ঝুলেই থাকল।
আমার একটা জিনিস নিয়ে প্রশ্ন আছে। যে ক্লাব নিজেরাই প্লেয়ার পেমেন্ট-সহ রাহা খরচ নিয়ে বছরভর ব্যতিব্যস্ত থাকে, তারা কোথা থেকে এই বিপুল খরচের পথ বের করবে? স্পনসর ছাড়া কোনও ক্লাবই সারা মরশুমের খরচের বোঝা বইতে পারে না। সুতরাং বাস্তবে চোখ রাখলে এটা অসম্ভব। কিন্তু দেখে মনে হচ্ছে ক্রীড়ামন্ত্রক ফেডারেশনের উপর আস্থা হারিয়েছে। তারা ক্লাব জোটের উপরেই তাই আস্থা দেখাচ্ছে।
আমার মনে হয় ফেডারেশনকেই দায়িত্ব নিতে হবে। তারা ভারতীয় ফুটবলের নিয়ন্ত্রক। যেহেতু ক্রীড়ামন্ত্রক নিজেরা এরমধ্যে সরাসরি ঢুকতে চাইছে না, ওরা যুক্তি দেখাচ্ছে বিসিসিআই, এআইএফএফের মতো সংস্থাকে নিয়ন্ত্রণে নিতে পারছি না। তারপরও ওরা এরমধ্যে আসছে কেন সেটা আন্দাজ করতে পারছি। অনেকেই সেটা পারছেন। কিন্তু একের পর এক বৈঠকেও কাজের কাজ হচ্ছে না।
এখন দেখছি ১ ফেব্রুয়ারি আইএসএল শুরুর প্রস্তাব আসছে। সেটা কী করে সম্ভব? তাহলে অন্য সূচির কী হবে? এসব অবাস্তব কথাবার্তা ছেড়ে এখনই মাঠে বল পড়া দরকার। প্লেয়াররা বসে আছে, কিন্তু ওদের টাকা দিয়ে যেতে হচ্ছে। এর মানেটা কী? মানুষ দেখছেন ভারতীয় ফুটবল কাদের হাতে পড়েছে! এখনও সময় আছে। আর দেরি না করে খেলা শুরু হোক। টেবলের আলোচনা আর নয়, এবার মাঠে ফুটবল চাই।
কথা অনেক হল, এবার শুধু খেলা হোক

