প্রতিবেদন : স্বাগত ২০১৪। পুরনো বছরকে বিদায়। গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতির মাঝেই নতুন বছরকে সাড়ম্বরে বরণ করে নিল ইথিওপিয়া। না, লেখার ভুল নয়। চিরাচরিত ঐতিহ্য মেনে ইথিওপিয়া এই সবে ২০১৪ সালে পড়ল। তাদের ক্যালেন্ডার সাত বছর পিছিয়ে রয়েছে যে!
আরও পড়ুন :এই শীতে খাদ্যসংকটে মারা যেতে পারে ১০ লাখ আফগান শিশু, সতর্কবার্তা রাষ্ট্রসংঘের
আসলে ইথিওপিয়াতে ১৩ মাসে এক বছর হয়। সেখানকার ক্যালেন্ডার ইংরেজি ক্যালেন্ডারের চেয়ে সাত বছর আট মাস পিছিয়ে। তাই সেখানে এখন চলছে ২০১৪ সাল। সেপ্টেম্বর মাসের ১১ তারিখ থেকে সেদেশে নতুন বছর শুরু হয়েছে। কিন্তু এর কারণ কী? ইথিওপিয়ায় খ্রিস্টের জন্মসাল অন্যভাবে হিসাব করা হয়। ৫০০ খ্রিস্টাব্দে ক্যাথলিক চার্চ তাদের হিসাব সংশোধন করলেও ইথিওপিয়া এর ঘোর বিরোধী ছিল। তাই পুরনো ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, তারা পিছিয়ে যায়। বছর শুরু হয় ১১ সেপ্টেম্বর। লিপইয়ার হলে তা শুরু হয় ১২ সেপ্টেম্বর থেকে। মাস, দিনের অঙ্কটা কী? ইথিওপিয়ায় প্রতিটি মাস ৩০ দিনের হয়। লিপইয়ারের উপর ভিত্তি করে তাদের ১৩তম মাসটি ৫ অথবা ৬ দিনের হয়। দিনকে ১২ ঘণ্টা করে দু’টি ভাগে ভাগ করা হয়। প্রতিটি অর্ধ শুরু হয় ৬টা থেকে। সকাল ৬টায় দিন শুরু হয়। দিনের মধ্যভাগ সন্ধ্যা ৬টায়। ঘটনা হল, আফ্রিকার এই দেশটির মানুষ কোনওদিন বাইবেল লেখা আর্ক অফ কনভেন্যান্টের হারিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে না। তাঁদের বিশ্বাস, এখনও আকসুম শহরের গির্জায় সেই পবিত্র সিন্দুক লুকানো আছে। ঈশ্বরের পুত্র মোজেসকে যে সিন্দুক হাতে তুলে দিয়েছিলেন ঈশ্বর নিজেই।
আরও পড়ুন : ভিক্ষা করে মাসে আয় ৭৫ হাজারের উপর!
আফ্রিকার বেশিরভাগ দেশের মতোই ইথিওপিয়াও অতি দরিদ্র এক দেশ। দেশের অর্থনীতি প্রায় সম্পূর্ণ কৃষিনির্ভর। ভুট্টা, আখ, গম, যব ও জোয়ার এখানকার প্রধান খাদ্যশস্য। এরপরেও দেশটি খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়, বরং খাদ্যের জন্য বহির্বিশ্বের উপরে নির্ভরশীল তারা। ইথিওপিয়াতে উৎপাদিত কফি ও পশুচর্ম বিদেশে রফতানি হয়। গবাদি পশু, ভেড়া ও ছাগল থেকে মাংস ও চামড়ার চাহিদা পূরণ হয়। শিল্পখাতের আয়তন অত্যন্ত ছোট। এখানে প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, কফি, বস্ত্র, চামড়ার দ্রব্য ও রাসায়নিক দ্রব্য উৎপাদন করা হয়। তারপরেও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির বিশেষ উন্নতি হয়নি। বর্তমানে সেখানে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি। খাদ্যসংকটে প্রায় ৩৫ হাজার শিশু। যুদ্ধের আতঙ্কে ভিটেমাটি ছেড়ে পালিয়েছেন বহু মানুষ। সরকারের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সশস্ত্র লড়াই চলছে। চাষ-আবাদ নেই। স্বাভাবিকভাবেই খাবারের জোগানও দিনের পর দিন কমছে।