প্রতিবেদন : এজেন্সিকে ব্যবহার করছে বিজেপি। গেরুয়া নেতাদের বাড়িতে ঢুকলেও উদ্ধার হবে টাকার পাহাড়। সোমবার বিধানসভায় নিজের বক্তব্যে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee- BJP)। সোমবার ইডি-সিবিআইয়ের অতিসক্রিয়তা নিয়ে সরকার পক্ষ নিন্দা প্রস্তাব আনে। তার ওপরেই নিজের বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজেপিকে তুলোধোনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি না প্রধানমন্ত্রী ইডি-সিবিআইয়ের অতিসক্রিয়তার বিষয়ে কিছু করেছেন। এসব বিজেপি নেতাদের কাজ। এদিন বিরোধী দলনেতাকেও তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে চ্যালেঞ্জ করে বলেন, আপনার বাড়িতে এজেন্সি গেলেও টাকার পাহাড় উদ্ধার হবে। আমাদের বিরুদ্ধে যা বলছেন তা প্রমাণ করতে পারবেন না। আপনাদের মতো আমরা চোর নই। আপনারা বুনো ওল হলে আমি বাঘা তেঁতুল। শুভেন্দু অধিকারীকে তোপ দেগে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আপনার তো এজেন্সিকে ভয় নেই তাহলে সিআইডিকে এত ভয় কেন? এরপরই কটাক্ষের সুরে বলেন, এখন বলছ ডোন্ট টাচ মাই বডি। আমি এখনও বলছি, ২০২৪-এ বিজেপি ভোকাট্টা হয়ে যাবে।
সোমবার শুরু থেকেই বিধানসভা ছিল হইহট্টগোলে ভরা। সরকার পক্ষের চিফ হুইপ নির্মল ঘোষের ইডি-সিবিআইয়ের অতিসক্রিয়তা নিয়ে আনা নিন্দাপ্রস্তাবের পক্ষে বলেন, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, ব্রাত্য বসু, পার্থ ভৌমিক, বীরবাহা হাঁসদা ও দেবব্রত মজুমদার। সবশেষে বলেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee- BJP)। তাঁর অভিযোগ, রাজ্য সরকারকে না জানিয়ে মাঝরাতে যার তার বাড়িতে ঢুকে পড়ছে। এটা কেন? বিজেপিতে গেলেই সব সাধু হয়ে যাচ্ছে আর বিজেপির উল্টোদিকে থাকলেই সে চোর? প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর। তাঁর সংযোজন, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, গোয়ার সরকার ভেঙেছ টাকা দিয়ে। এত টাকা কোথা থেকে পেল বিজেপি? পিএম কেয়ারের টাকা কোথায় গেল? বিহারে এজেন্সি পাঠিয়ে দিচ্ছ। ঝাড়খণ্ড সরকারও ভাঙতে চেয়েছিল। আমরা আটকে দিয়েছি। ১০ কোটি টাকা করে দিয়েছিল। আরও দিত। আমরা ধরে ফেলেছি। সাফ কথা মুখ্যমন্ত্রীর। প্রধানমন্ত্রীকে একহাত নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, দল আর সরকারকে এক করবেন না। এরপরই তাঁর কটাক্ষ, কেন্দ্রীয় সরকার এখন চিতা আর বিজেপি হল হুলো বেড়াল।
আরও পড়ুন-সিবিআই, তোমার দিন গিয়াছে!
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, আমি অন্যায়কে প্রশ্রয় দিই না। আইন আইনের পথে চলবে। তাতে যা শাস্তি হবার তা হবে। আমি কাউকে প্রোটেকশন দিচ্ছি না। তবে মনে রাখতে হবে আলু আর আলুবোখরা এক নয়। সবাই এক হয় না। ইডি-সিবিআইয়ের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এজেন্সিকে একপক্ষ নয়, নিরপেক্ষ হতে হবে। এজেন্সি নিরপেক্ষ কাজ করলে মাথা পেতে নেব। ভোট-পরবর্তী হিংসা বলে ১০০টির বেশি অভিযোগ করা হয়েছিল। সিবিআই ৫৫টি কেসই বলেছে মিথ্যে। এরাজ্যের আইপিএস অফিসারদের এজেন্সির ডেকে পাঠিয়ে হ্যারাস করা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন পেগাসাস নিয়েও গেরুয়া শিবিরের দিকে কটাক্ষ ছুঁড়ে দেন।
সৌজন্য
এ জিনিস রাজ্য বিধানসভা কোনওদিন দেখেনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৌজন্যে সোমবার তা দেখল। ইডি-সিবিআইয়ের নিরপেক্ষতাকে কাঠগড়ায় তুলে বিরোধী দল তথা বিজেপিকে তুলোধোনা করার পর অধিবেশন কক্ষে নেমে সকলকে হাত জোড় করে নমস্কার করলেন। শারদ শুভেচ্ছা। তৃণমূল বিধায়কদের মাঝে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এরপরই এগিয়ে যান বিরোধী বেঞ্চের দিকে। নমস্কার করেন সকলকে। উপস্থিত বিরোধী দলনেতা সহ বাকি বিজেপি বিধায়করা এই দৃশ্যে খানিকটা হকচকিয়ে যান। পরে তাঁরাও প্রতি নমস্কার করেন মুখ্যমন্ত্রীকে।