কৃত্রিম আলোর যুগেও আজও টিকে আছে মাটির প্রদীপ

এক সময় রাজনৈতিক সংঘর্ষ আর হানাহানির জন্যই রাজ্যে আলোচিত হত জেলার কেশপুর। বোমা-বারুদের গন্ধে দমবন্ধ হয়ে আসত বাসিন্দাদের

Must read

সংবাদদাতা, পশ্চিম মেদিনীপুর : এক সময় রাজনৈতিক সংঘর্ষ আর হানাহানির জন্যই রাজ্যে আলোচিত হত জেলার কেশপুর। বোমা-বারুদের গন্ধে দমবন্ধ হয়ে আসত বাসিন্দাদের। সেই কেশপুরেই আজ সম্প্রীতি ও সহাবস্থানের গ্রাম অকুলসাড়া। হিন্দু-মুসলিম মিলেমিশে প্রায় ১৮০টি পরিবার বসবাস করেন গ্রামে। ৭০টি মুসলিম পরিবার চাষবাস-সহ নানা ব্যবসায় যুক্ত। বাকি ১১০টি হিন্দু পরিবার থাকে মাঝিপাড়া, মালাকারপাড়া ও কুমোরপাড়ায়। মাঝিপাড়ায় তৈরি হয় সবুজ আতশবাজি, মালাকারপাড়ায় চাঁদমালা-সহ প্রতিমার নানা গহনা। কুমোরপাড়ার লোকজন গড়েন প্রদীপ, ঘট-সহ মাটির নানা জিনিস।

আরও পড়ুন-আমেরিকার শুল্কনীতির জেরে কর্মহীন ভারতের ৬ লক্ষ পোশাক শ্রমিক

নিম্নচাপ কেটে আকাশে রোদের দেখা মেলায় তাই অকুলসাড়ার সর্বত্র এখন খুশির হাওয়া। সেই সঙ্গে দীপাবলির আগে চরম ব্যস্ততা। পাড়ার বাসিন্দাদের উঠোন জুড়ে মেলা রয়েছে তুবড়ি, তারাবাতি, রসবাতি-সহ নানা আতশবাজি। কৃত্রিম আলোর যুগেও আজও বিদ্যমান অকুলসাড়া গ্রামের মাটির প্রদীপের কদর। সেই প্রদীপ শুকোচ্ছে কুমোরপাড়ায়। আর চাঁদমালা এবং ঠাকুরের গহনা তৈরিতে ব্যস্ত মালাকারপাড়া। কেশপুরের শীর্ষা গ্রাম পঞ্চায়েতের অকুলসাড়ার মাঝিপাড়ায় ১২-১৩টি পরিবার বংশ পরম্পরায় আতশবাজি তৈরি করেই জীবিকা নির্বাহ করে। এই আতশবাজি ভিনরাজ্যেও রফতানি হয়। কালীপুজো বা দীপাবলির সময়ে যার ব্যাপক চাহিদা থাকে। মালাকারপাড়ার চাঁদমালার চাহিদা বাড়ছে ভিনরাজ্যেও। গণেশ দাস, শিবরানি দাসদের কুমোরপাড়া ব্যস্ত দেওয়ালির মাটির প্রদীপ জোগান দিতে। গণেশ বলেন, কৃত্রিম আলোর যুগে মাটির প্রদীপের চাহিদা আগের তুলনায় অনেকটাই কমেছে। আগে যেখানে বিভিন্ন জায়গা থেকে হাজার-হাজার অর্ডার আসত, এখন আসছে তিনশো-চারশো। তবে বংশ পরম্পরায় এটাই আমাদের প্রধান কর্মসংস্থান। তাই সেই কাজই করে চলেছি। গ্রামের একপ্রান্তে বাস করেন শিক্ষক অমল চক্রবর্তী। পুরোহিত হিসেবেও নামডাক রয়েছে তাঁর। তিনি বলেন, পুজো সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে আমাদের এই অকুলসাড়া গ্রামকে মুশকিল আসান বলতে পারেন।

Latest article