বিজেপির ধর্মীয় রাজনীতির থাবা থেকে রক্ষা নেই শীর্ষ বিজ্ঞানকেন্দ্রেরও

শিক্ষায় গেরুয়াকরণের অভিযোগ আগেই উঠেছিল। এবার বিজেপির হিন্দুত্ববাদী ভাবনার খবরদারি বিজ্ঞান গবেষণাক্ষেত্রের অঙ্গনেও।

Must read

নয়াদিল্লি : শিক্ষায় গেরুয়াকরণের অভিযোগ আগেই উঠেছিল। এবার বিজেপির হিন্দুত্ববাদী ভাবনার খবরদারি বিজ্ঞান গবেষণাক্ষেত্রের অঙ্গনেও। বেনজিরভাবে শিক্ষায় গেরুয়াকরণের নমুনা এবার অগ্রগণ্য গবেষণাকেন্দ্র কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ বা সিএসআইআরে। ২০২৪ সালের রামনবমীতে অযোধ্যার রামমন্দিরে অধিষ্ঠিত রাম লালার মূর্তির মাথায় কীভাবে সূর্যরশ্মি পড়বে, তা দেখাচ্ছেন গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির বিজ্ঞানীরা! আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক।

আরও পড়ুন-‘দয়া করে রেফারেল কেস কমান’, স্বাস্থ্যসাথীর অপব্যবহারে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী

রাজনৈতিক মহলের অভিযোগ, সিএসআইআরের মতো একটি উচ্চমানের গবেষণা প্রতিষ্ঠানকেও বিজেপির গেরুয়াকরণ এবং রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডায় যুক্ত করা হচ্ছে। এই পদক্ষেপ অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং উদ্বেগজনক।
গত সপ্তাহেই বৈঠক হয় রামমন্দির নির্মাণ কমিটির। তার আগের দিন সিএসআইআর–এর বিজ্ঞানীদের সঙ্গে সেন্ট্রাল বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট বা সিবিআরআই–এর কর্মকর্তারাও সেখানে যান। ২০২৪ সালে রামনবমীর দিন রামমন্দিরে রাম লালার মূর্তির মাথায় কীভাবে সূর্যের আলো পড়বে, তা প্রোজেক্টরের সাহায্যে দেখানো হয়। কীভাবে এই বিষয়টি বোঝা সম্ভব হয়েছে, সেই প্রযুক্তিও নির্মাণ কমিটির কর্তাব্যক্তিদের বোঝান বিজ্ঞানীরা। সিএসআইআরের তরফে ট্যুইট করে বিষয়টি ফলাও করে জানানো হয়। এমন একটি ঐতিহ্যশালী বিজ্ঞান গবেষণাকেন্দ্রকে রামমন্দিরের সঙ্গে যুক্ত করার ঘটনায় প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন মহল। বিরোধীদলগুলির পক্ষ থেকেও একযোগে কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপির এই পদক্ষেপের সমালোচনা করা হয়েছে। নিজেদের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অ্যাজেন্ডায় বিজ্ঞানীদের ব্যবহার করার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে। ১৯৪২ সালে তৈরি হওয়া গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিএসআইআর স্বশাসিত। এই প্রতিষ্ঠানে এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং, রসায়ন, ধাতুবিদ্যা, জীবনবিজ্ঞান, পরিবেশবিজ্ঞান সহ নানা বিষয়ে গবেষণা হয়।

আরও পড়ুন-এবার কলকাতাতে গঙ্গা আরতির ব্যবস্থার নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

বেনজির এই ঘটনা সামনে আসতেই কড়া সমালোচনা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভার সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তিনি ট্যুইটারে লিখেছেন, একজন প্রবীণ বিজ্ঞানী আমায় এই খবরটি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ভারতের বিজ্ঞান জগতের সঙ্গে যুক্ত থাকায় তিনি লজ্জিত। সরকারের চাপে এইসব কাণ্ডকারখানা করতে হয় বলে বিজ্ঞানী হিসেবে নিজের পরিচয় দিতেও এখন লজ্জা লাগে। তিনি আরও লিখেছেন, সিএসআইআর বিশ্বের সবচেয়ে বড় গবেষণা ও উন্নয়নমূলক প্রতিষ্ঠান। আমাদের করের টাকা এর জন্য খরচ হয়। কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ লজ্জাজনক। প্রতিদিন তা নিম্নগামী হচ্ছে।

আরও পড়ুন-ওড়িশা: লাইনচ্যুত মালগাড়ি উঠল প্ল্যাটফর্মে, মৃত একাধিক

কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও বিষয়টির নিন্দা করা হয়েছে৷ মোদি সরকারের সমালোচনায় কংগ্রেস বক্তব্য, অবশ্যই সিএসআইআরের গেরুয়াকরণ করা হচ্ছে। রাম লালার মাথায় কীভাবে সূর্যের আলো পড়বে, সেটা সূর্যের আলো পড়লেই দেখা যাবে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, ততই বিজেপি বেশি করে রামমন্দিরের গল্প ফাঁদবে। শিক্ষাক্ষেত্রকে সেই কাজে যুক্ত করা লজ্জাজনক।

Latest article