প্রতিবেদন : তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার লোকসভা নির্বাচনী প্রচারে ইভিএম জালিয়াতির কথা বলেছিলেন। শুধু তিনি নন, বিরোধী নেতারাও একই সুরে কথা বলেছিলেন। বিজেপি এবং কমিশন সেই অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু নিজেদের ফাঁদেই জড়িয়ে গেল বিজেপি আর কমিশন। কমিশন-বিজেপির অশুভ আঁতাঁতের প্যান্ডোরা বক্স খুলে দিল মুম্বইয়ের পুলিশ। উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা গোষ্ঠী প্রার্থী অমল কীর্তিকার ৪৮ ভোটে পরাজিত হন। সন্দেহ বাড়ে সকলের। প্রার্থীর চাপে নির্বাচন কমিশন মুম্বই পুলিশে এফআইআর করে। সেখান থেকেই বেরিয়ে এসেছে বিজেপি আর কমিশনের অশুভ আঁতাঁত। অমল কীর্তিকারকে হারাতে শিন্ডে গোষ্ঠীর ৪৮ ভোটে জেতা সাংসদ রবীন্দ্র ওয়াইকার কীভাবে কমিশনের কর্মীদের হাত করে ভোট ম্যানিপুলেট করেছেন তা প্রকাশ্যে এনেছে মুম্বই পুলিশ।
আরও পড়ুন-উপনির্বাচন ৪ কেন্দ্রেই প্রবল উৎসাহে প্রচার শুরু
গণনার দিন প্রথম থেকেই এগিয়ে ছিলেন উদ্ধব গোষ্ঠীর অমল। আগাগোড়া এগিয়ে থাকলেও পোস্টাল ব্যালটে এসেই রহস্যময় গন্ডগোল শুরু হয়। সেই পোস্টাল ব্যালটেই জেতেন রবীন্দ্র। কিন্তু কীভাবে ভোট চুরি করল বিজেপি? পুলিশ জানাচ্ছে, রবীন্দ্রর আত্মীয় মঙ্গেশ পান্ডিলকর ইভিএমে কারচুপির আসল পান্ডা। তাকে কাজে লাগান রবীন্দ্র। ইভিএম খোলার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে নির্দিষ্ট সিমকার্ড থাকে। সেই কার্ড নকল বা ক্লোন করা হয়েছিল। কীর্তিকার জানাচ্ছেন, গণনার দিন বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ হঠাৎ কোনও কারণ না দেখিয়ে গণনা বন্ধ করা হয়। তখন ২৬ রাউন্ড শেষ। গণনা বাকি নেই। আমি এগিয়ে ছিলাম ৬৫১ ভোটে। ঠিক তার কিছুক্ষণ আগে কমিশনের এক কর্মী বাথরুম যাওয়ায় সন্দেহ হয়। পুলিশ তদন্ত করে দেখে কমিশনের ওই কর্মীর কাছে একটি মোবাইল রয়েছে। যে মোবাইলে ইভিএমের ওটিপি। যা থাকার কথা নয়। সাড়ে ৩টেতে গণনা বন্ধ করা হয়েছিল। সাড়ে ৫টায় হঠাৎ কমিশন জানায়, কীর্তিকার নন, ৪৮ ভোটে জিতেছেন রবীন্দ্র ওয়াইকার। স্পষ্ট বোঝা যায় ইভিএম জালিয়াতি করা হয়েছে। রবীন্দ্র ওই কর্মীকে কাজে লাগিয়েছেন। গণনা বন্ধ করে ইভিএম জালিয়াতি হয়েছে ওই সময়ে।
আরও পড়ুন-অস্ত্রোপচার, বাড়িতে অভিষেক
লক্ষ্য করলে দেখা যাবে নন্দীগ্রামের ভোটে ঠিক একইভাবে জালিয়াতি হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী এগিয়ে ছিলেন। হঠাৎ লোডশেডিংয়ের নামে গণনা বন্ধ। বেশ কিছুক্ষণ করে পর জানিয়ে দেওয়া হয় জিতেছে গদ্দার অধিকারী। ইভিএম জালিয়াতি যে বাস্তবিকই হয়েছে বা হয়ে চলেছে আর একবার প্রমাণ দিল মুম্বইয়ের এই ঘটনা।