হাওড়া বাদে চার পুরনিগমে (Corporations Election) ভোটের দিন ঘোষণা করল রাজ্য নির্বাচন কমিশন (State Election Commission)। বিধাননগর, শিলিগুড়ি, চন্দননগর এবং আসানসোল পুরনিগমে
আগামী ২২ জানুয়ারি সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। ২৫ জানুয়ারি গণনা। যদি কোথাও প্রয়োজন মনে হয়, সেক্ষেত্রে ২৪ জানুয়ারি পুনর্নির্বাচন হবে। সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে এমনটাই ঘোষণা করলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস।
সৌরভ দাস জানিয়ে দেন, হাওড়া কর্পোরেশন নিয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়ায় এবং জটিলতা না কাটায় হাওড়া পুরনিগমে ভোটের দিন আপাতত ঘোষণা করা হচ্ছে না। তবে হাওড়া ভোট করার জন্যও তারা প্রস্তুত। রাজ্য সরকারের সবুজ সঙ্কেত মিললেই মঙ্গল-বুধবারের মধ্যে হাওড়ার পুরনিগমের ভোটের দিন ঘোষণা করবেন তারা।
এদিন নির্বাচন কমিশনের সাংবাদিক বৈঠকের সঙ্গে সঙ্গেই সংশ্লিষ্ট পুরনিগম এলাকাগুলিতে লাগু হয়ে গেল আদর্শ আচরণবিধি। আগামিকাল বিজ্ঞপ্তি জারির পর থেকেই মনোনয়ন পর্ব শুরু হয়ে যাবে। ৩ জানুয়ারি মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। ৪ জানুয়ারি মনোনয়ন স্ক্রুটিনির দিন। ৬ জানুয়ারি মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন।
নির্বাচন কমিশনের বলে দেওয়া হয়েছে, রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেই ভোটের দিন ঘোষণা। সমস্ত বুথে থাকবে সিসি ক্যামেরা থাকবে। আগামী ৪ জানুয়ারি জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, পুলিশ কমিশনার ও প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গেআইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত চূড়ান্ত বৈঠক হবে। আপাতত ঠিক আছে রাজ্য পুলিশ দিয়েই ভোট হবে। পরিস্থিতি অনুযায়ী কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে কমিশন।
এদিকে এদিনই নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার আগে সর্বদল বৈঠক ডেকে ছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সেখানে সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা হাজির ছিলেন। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে হাজির ছিলেন তাপস রায় ও দেবাশিস কুমার। বিজেপির পক্ষে হাজির ছিলেন অর্জুন সিং ও শিশির বাজোরিয়া। কংগ্রেসের পক্ষে হাজির ছিলেন অসিত মাল ও আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়। এছাড়াও বামেদের পক্ষে হাজির ছিলেন রবিন দেব, প্রবীর এবং হাফিজ আলম সৈরানি। প্রায় ঘন্টাখানেক বৈঠকের পর বিরোধী দলের প্রতিনিধিরা বাইরে আছে জানান, তাঁরা নির্বাচন কমিশনারের বৈঠক বয়কট করেছেন। বাম-বিজেপি-কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা একসুরে জানান, কমিশন পক্ষপাত দুষ্ট হয়ে রাজ্য সরকারের নির্দেশে কাজ করছে। তাদের প্রশ্ন, কেন হাওড়ার পুরনিগমের ভোট একইসঙ্গে ঘোষণা করা হলো না? সিপিএম নেতা রবিন দেব অভিযোগ করে বলেন, নভেম্বরের ভোটার লিস্ট অনুযায়ী ভোট করছে কমিশন। জানুয়ারিতে প্রকাশিত হওয়া নতুন ভোটার লিস্ট অনুসারে নয় কেন?” যদিও বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস। তাঁর কথায়, “নির্বাচনের দিন ঘোষণা হওয়ার আগে পর্যন্ত যে ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয় সেই অনুযায়ী ভোট করার নিয়ম। পরবর্তী ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে ৩ জানুয়ারি। তার আগেই নির্বাচনের দিন ঘোষণা করা হয়েছে। তাই নিয়ম অনুসারে নভেম্বর মাসের শেষ যে ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে সেই অনুযায়ী ভোট গ্রহণ করা হবে।”
একইসঙ্গে হাওড়া নিয়ে বিরোধীদের সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে নির্বাচন কমিশনের তরফ জানানো হয়, রাজ্যপাল ও রাজ্যের মধ্যে সমস্যা। হাওড়ার ভোট ঘোষণার জন্য রাজ্য সরকারের সম্মতির প্রয়োজন আছে। সেটা পাওয়া যায়নি। আপাতত হাওড়ার ভোট ঘোষণা করা হলো না। তবে মঙ্গলবার সকালের মধ্যে কমিশনের কাছে রিপোর্ট বা নোটিশ এলে হাওড়া পুরনিগমের ভোট ঘোষণা করা হবে।