প্রতিবেদন : করোনা রুখতে প্রায় তিন বছর বন্ধ ছিল দেশের সমস্ত স্কুল ও কলেজ। তবে ছাত্র-ছাত্রীদের পঠন-পাঠন বজায় রাখতে অনলাইন ক্লাস করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সরকারি নির্দেশিকাই সার। কার্যত শেষ আড়াই বছর স্কুল-কলেজে প্রায় কোনও ক্লাস হয়নি এমনটাই অভিযোগ। অভিভাবকরা অনেকেই বলেছেন, শিক্ষকরা একদিনও ক্লাস না করে ঘরে বসে মুঠো মুঠো বেতনের টাকা পকেটে পুরেছেন।
আরও পড়ুন-এই মুহূর্তে বাংলার বড় বিপদ বিভাজনকামী দল বিজেপি
কিন্তু সব কিছুরই ব্যতিক্রম থাকে। তেমনই এক ব্যতিক্রমী অধ্যাপকের নাম লালন কুমার। যিনি বিহারের মুজফফরপুর জেলার নীতীশ্বর কলেজের সহকারী অধ্যাপক। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যাপকদের মতো তিনিও করোনার সময়ে না পড়াতে পারলেও নিয়ম মেনে মাসের পর মাস বেতন পেয়েছেন। কিন্তু এই বিবেকবান শিক্ষক অন্যদের চেয়ে আলাদা। তাই কাজ না করে বেতন নিতে চাননি। সে কারণেই লালন কুমার করোনাকালে পাওয়া তাঁর বেতনের পুরোটাই ফিরিয়ে দিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষকে।
আরও পড়ুন-মালদহ ও মুর্শিদাবাদ সফরে সোচ্চার ফিরহাদ হাকিমের লক্ষ্য রাজ্যপাল ও বিজেপি
এই সময় তিনি বেতন হিসেবে পেয়েছিলেন ২৩ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা। বেতন বাবদ পাওয়া টাকার পুরোটাই তিনি কলেজের রেজিস্ট্রারের হাতে তুলে দিয়েছেন। লালন কুমারের টাকা ফেরতের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই অভিভাবকমহল থেকে শুরু করে সকলেই তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন।
আরও পড়ুন-প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি হচ্ছে কীটনাশক
লালন জানিয়েছেন, তাঁর বেতন ফিরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবে প্রথমে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। এমনকী, প্রথমে তাঁরা এই টাকা ফিরিয়ে নিতে চায়নি। কিন্তু তিনি বুঝিয়েসুঝিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষকে টাকাও ফেরত নিতে রাজি করান। নিজের এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে লালন জানিয়েছেন, তিনি বেতন পান ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ানোর জন্য। কিন্তু প্রায় তিন বছর তিনি তাদের পড়াতে পারেননি। অনলাইন ক্লাস চালু থাকলেও তা নামমাত্র। বেশিরভাগ পড়ুয়াই তাতে অংশ নেননি। তাই ছাত্র-ছাত্রীদের না পড়িয়ে তিনি কখনওই এভাবে বেতন নিতে রাজি নন। তাঁর মতে, না পড়িয়ে মাসের-পর-মাস বেতন নিয়ে গেলে তা শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার নামান্তর। সে কারণেই তিনি টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।