ইয়েমেনে জেলবন্দি ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়ার ফাঁসি স্থগিত হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টে জানাল কেন্দ্র

Must read

নয়াদিল্লি : ইয়েমেনে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়ার (Nimisha Priya) মামলায় সুপ্রিম কোর্টে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটারমণি আদালতে জানিয়েছেন যে ভারতীয় নার্স প্রিয়ার ফাঁসি বর্তমানে স্থগিত রয়েছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে কোনও প্রতিকূল পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং সন্দীপ মেহতার বেঞ্চকে তিনি আরও জানান যে এই জটিল মামলায় একজন নতুন মধ্যস্থতাকারী যুক্ত হয়েছেন, যা একটি ইতিবাচক দিক। শীর্ষ আদালত বর্তমানে সেই আবেদনের শুনানি করছে যেখানে কূটনৈতিক পথে ৩৮ বছর বয়সী প্রিয়াকে রক্ষার জন্য কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে কেরল থেকে ইয়েমেনে চাকরি করতে যাওয়া নিমিশা প্রিয়া (Nimisha Priya) তাঁর ইয়েমেনি ব্যবসায়িক অংশীদারকে খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন। এদিন সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ কেন্দ্রের কাছে জানতে চায়, ফাঁসির কী খবর? নিমিশা প্রিয়ার আইনি সহায়তাকারী সংস্থা ‘সেভ নিমিশা প্রিয়া ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকশন কাউন্সিল’-এর আইনজীবী আদালতে জানান যে আপাতত ফাঁসি স্থগিত রয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেল ভেঙ্কটারমণিও এই তথ্য সমর্থন করে বলেন, একজন নতুন মধ্যস্থতাকারী এসেছেন এবং এই মুহূর্তে সবচেয়ে ভাল খবর হল যে খারাপ কিছু ঘটেনি। এরপর আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী মামলা মুলতুবি রাখার অনুরোধ জানালে শীর্ষ আদালত নির্দেশ দেয়, মামলাটি ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাসে তালিকাভুক্ত করা হোক। এরমধ্যে যদি পরিস্থিতি আবার প্রতিকূল হয় তখন দ্রুত শুনানির জন্য আবেদন করা যাবে।

আরও পড়ুন-বন্যায় বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ: মুখ্যমন্ত্রীকে ১০ লক্ষ টাকা তুলে দেবেন মেসি

কেরলের পালাক্কাডের বাসিন্দা নিমিশা প্রিয়াকে ২০১৭ সালে খুনের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। ২০২০ সালে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় এবং তাঁর চূড়ান্ত আপিলটি ইয়েমেনের সুপ্রিম কোর্টে ২০২৩ সালে খারিজ হয়ে যায়। তিনি বর্তমানে ইয়েমেনের রাজধানী সানার একটি কারাগারে বন্দি আছেন। নিমিশার মুক্তির দাবিতে তৈরি হওয়া ফোরামের আইনজীবী এর আগে শীর্ষ আদালতে জানিয়েছিলেন যে শরিয়ত আইন অনুযায়ী নিহত ব্যবসায়িক অংশীদারের পরিবারকে ব্লাড-মানি (রক্তের বিনিময়ে অর্থ) প্রদানের সম্ভাবনা বিবেচনা করা যেতে পারে। তিনি বলেছিলেন, রক্তক্ষতিপূরণ দেওয়া হলে মৃতের পরিবার প্রিয়াকে ক্ষমা করে দিতে পারে। ১৭ জুলাই ভারত সরকার জানিয়েছিল যে তারা এই মামলায় একটি ‘পারস্পরিক সম্মত সমাধান’ খুঁজতে ইয়েমেনি কর্তৃপক্ষ এবং কিছু বন্ধু রাষ্ট্রের সাথে যোগাযোগ রাখছে। এর একদিন পরেই কেন্দ্র শীর্ষ আদালতকে জানায় যে প্রিয়া যাতে নিরাপদে বেরিয়ে আসতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে সরকার সম্ভাব্য সব চেষ্টা করছে। ১৪ অগাস্ট আবেদনকারী সংস্থার আইনজীবী আদালতে জানিয়েছিলেন যে প্রিয়ার উপর তাৎক্ষণিক কোনও বিপদ নেই। এর আগে আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী এও জানিয়েছিলেন যে প্রিয়ার মা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে আলোচনার জন্য ইয়েমেনে গিয়েছেন এবং দিল্লি হাইকোর্ট কেন্দ্রকে তাঁর সফরের অনুমতি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পরই তিনি সেখানে যান।

Latest article