প্রতিবেদন : সামনে জামাইষষ্ঠী। কিন্তু এবার জামাইদের পাতে ভাল জাতের সুস্বাদু হিমসাগর আম পড়বে কিনা তা নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে চাষি থেকে আড়তদার এবং গৃহস্থের মনে। কারণ পূর্বস্থলীতে এবার আমের ফলন বেশ কম। ফলে চাষিরাও দুশ্চিন্তায়। লক্ষ লক্ষ টাকা লোকসানের আশঙ্কায় আছেন তাঁরা। শ্রমিকের খরচ ওঠানো নিয়েই সংশয়ে এলাকার আমচাষিরা। রাজ্যের সর্বত্র যথেষ্ট সুনাম আছে পূর্বস্থলীর সুস্বাদু হিমসাগর, ল্যাংড়া, বোম্বাই, ফজলি, গোলাপখাস আমের। এছাড়াও প্রায় তিরিশ প্রজাতির আম চাষ হয় এলাকায়। বিকল্প চাষ হিসাবে আমের বাগান হয়েছে এখানকার অনেক কৃষিজমিতেও।
আরও পড়ুন-কন্যাশ্রী, সবুজসাথী-সহ নানা আর্থিক পরিষেবা আদিবাসী পড়ুয়াদের সাফল্যের চাবিকাঠি
পূর্ব বর্ধমানের প্রায় ৭০ শতাংশ আমই উৎপন্ন হয় পূর্বস্থলীর নানা বাগানে। এবার জামাইষষ্ঠীতে হিমসাগরের অভাব হতে পারে বলে আড়তদারদের মত। পূর্বস্থলীর এক আমচাষির কথায়, ‘জামাইষষ্ঠীর সময় আমের চাহিদা বাড়ে। কিন্তু আমাদের এলাকায় গাছে তেমন আম নেই। যেটুকু ছিল তাও ঘূর্ণিঝড়ের ভয়ে আগেই পেড়ে নেওয়া হয়ে গিয়েছে। জোগান না থাকলে তো দাম চড়বেই।’ জেলার উদ্যানপালন দফতরের কথায়, আগের বছর আমের ফলন বেশি হয়েছিল। তাই এবছর ফলন ভাল না হওয়াই ছিল স্বাভাবিক। তবে জেলার বেশ কিছু ব্লকে সারা বছর আম হয় এমন চারা বিলি করেছে দফতর। কলকাতায় আয়োজিত ২০১৬ সালে রাজ্য সরকারের আম উৎসবে পূর্বস্থলীর হিমসাগর সেরার পুরস্কার পায়। ২০১৭ সালে সেরা হয় বীরভূম জেলার আম উৎসবেও। রাজ্যের ভূতপূর্ব সেরা মালদহ, মুর্শিদাবাদ সে ক্ষেত্রে পিছনে পড়ে গিয়েছে। বেড়েছে পূর্বস্থলীর আমের কদর। পূর্বস্থলী ২ ব্লকে ১০টি অঞ্চল, ১ ব্লকের কয়েকটি অঞ্চল জুড়ে প্রচুর সুস্বাদু আমের বাগান আছে। রাজ্য ছাড়াও ভিনরাজ্যে পূর্বস্থলীর আম চাহিদা থাকায় রফতানি হয়। কিন্তু এবার পূর্বস্থলীর বেশির ভাগ বাগানে আম হয়নি। ফলন স্বাভাবিকের মাত্র ২০ শতাংশ। এক আমচাষি জানান, এবার তাঁর বাগানের ১ হাজার গাছের মধ্যে ২০-২৫টি গাছে আম হয়েছে। খরচ তুলতেই বেগ পেতে হবে। ফলে এ বছর জামাইষষ্ঠীতে জামাইদের পাতে ভাল আম পড়বে কিনা তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই সন্দেহ দেখা দিয়েছে।