পুজোর ফ্যাশন ট্রেন্ড

আর মাত্র হাতেগোনা ক’দিন দুর্গোৎসবের। মণ্ডপের বাঁশের কাঠামো তৈরি। পটুয়াপাড়ায় প্রতিমা শিল্পীদের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। পুজোর কেনাকাটা শুরু হয়ে গেছে পুরোদমে। শ্যামবাজার, হাতিবাগান, গড়িয়াহাট— কোথাও তিলধারণের জায়গা নেই। গৃহিণীরাই এখন সবচেয়ে ব্যস্ত। কেনাকাটার দায়িত্ব যে তাঁদের কাঁধেই! এ-বছরের ফ্যাশন ট্রেন্ড কী? কোনটা ইন? কী কিনবেন? কীই-বা উপহার দেবেন প্রিয়জনদের? তারই খোঁজ-খবরে শর্মিষ্ঠা ঘোষ চক্রবর্তী

Must read

ক্যালিফোর্নিয়া থেকে পলা এসছে ইন্ডিয়ায়। আরও কিছুদিন আগেই চলে আসার কথা ছিল, অর্ণবের জন্য হয়নি। প্রায় ছ’বছর পর পুজোর সময় এবার পলা নিজের দেশে। আসলে ওদেশে তো পুজোয় কোনও ছুটি নেই! উইকএন্ডে ওরা পুজো করে শুভসময় মেনে। পলা প্রথম যখন ক্যালিফর্নিয়া গেছিল তখন এত দুর্গাপুজো হত না আর এখন অনেক বাঙালি কমিউনিটি যাঁরা নিজেরাই ধুমধাম করে পুজো করে। এখানে কাঁচরাপাড়ায় পলার শ্বশুরবাড়ি আর বাপের বাড়ি দমদম। জিনা আর ঋজুর স্কুলে অনেকদিন আগে থাকতে কথা বলে রেখেছিল অর্ণব। ওদের আবার মেল করে জানাতে হয়। পলার বোনের বিয়ে নভেম্বরে ভেবেছে একবারে বিয়ে কাটিয়ে ফিরে যাবে। তাহলে রথ দেখা কলা বেচা দুই-ই হবে। সেই কারণেও আরও আসা। আসার আগে তে-রাত্তির চোখে পাতা এক করেনি সে। একটা আলাদা এক্সাইটমেন্ট কাজ করছিল। কত দিন পরে পুজোয় নিজের দেশের মাটিতে, নিজের জায়গায়। আত্মীয়স্বজন, শাশুড়ি, ভাসুর, জা, মা, বাবা, বোন, বন্ধু-বান্ধব। তাতাইয়ের এ-বছর প্রথম বার ইন্ডিয়া ট্রিপ। ও দিনু, দাদাই, দিম্মাকে শুধু ভিডিও কলেই দেখেছে। জিনা এসেছে তখন খুব ছোট। ও জানেই না এখানকার পুজো কেমন হয়। খুব এক্সাইটেড ওরাও। এবার জমিয়ে মার্কেটিং করবে ভেবেই এসেছে পলা। সব্বার জন্য জামাকাপড় কিনবে। আসলে ও পুজো তো মিস করতই, তার চেয়েও বেশি মিস করত এই পুজো-আসছে-আসছে ভাবটা। বাজারের ভিড়ভাট্টা, গড়িয়াহাট, হাতিবাগান, দমদমে মানুষের মেলাটা। এই ফ্লেভারটা প্রবাসীরা পায় না। ওখানে শুধু পুজোর দিনগুলো একটা পুজো-পুজো আবহ থাকে। আর কাঁচড়াপাড়ায় ফিরে চমকে গেছে পলা। কী নেই এখন যা কাঁচরাপাড়ায় পাওয়া যায় না! সব বড় শপিং-আউটলেট, সোনার দোকান, রেস্তোরাঁ তৈরি হয়ে গেছে। ব্যারাকপুরে ননদ থাকে পলার, ওখানেও এখন বড় বড় শপিং মল। আনন্দে পলার মনটা নেচে উঠেছে। সময় নিয়ে ঘুরে ঘুরে সবার জন্য কেনাকাটা করবে। নিজের জন্য খানকয়েক ভাল শাড়ি কিনে ফেলতে হবে এখনই, কারণ এরপরেই তো বাড়িতে বিয়ে লাগবে। পলার বোন তো বলেই দিয়েছে শাড়ি ছাড়াও ওয়েস্টার্ন, ইন্দো-ওয়েস্টার্ন— সব চাই তার দিদির থেকে। বিয়ে বলে শুধু শাড়ি-গয়নাতেই সে ক্ষান্ত হবে না। দিদির কাছেই ওর যত আবদার। তাহলে একবার চট দেখে নিই এ-বছরের পুজো ফ্যাশন ট্রেন্ড।
ফ্যাশনেবল নারী
ফ্যাশন মানেই তো অর্ধেক দখলদারি মহিলাদের। এ-বছর পুজোর লেটেস্ট ট্রেন্ড হল ফিউশন ওয়্যার। সেই কালেকশনে প্রথমে থাকছে নানা ধরনের কম্বিনেশন আউটফিট। কালারফুল শ্রাগ। কটন, লাইক্রা বা রেয়ন লং শ্রাগের নিচে বেলবটম বা ওয়াইড ডেনিম এবং স্লিভলস ক্রপটপ। লং শ্রাগ এখন সব কিছুর সঙ্গে মানানসই এমনকী শাড়ির সঙ্গেও। ঢোলা কটন প্যান্টস এবং কটন ক্রপটপের সঙ্গে মিড লেন্থ শ্রাগ। ইনার ফেব্রিক হালকা এবং ওপরে মাল্টিকালারড শ্রাগ দারুণ ক্লাসি লুক দেবে।
ড্রেস বছর বছর ট্রেন্ডিং। এবছরও তার ব্যতিক্রম নেই উপরন্তু বৈচিত্রে তাক লেগে যাবে। শর্ট ড্রেস, নি লেন্থ এবং লং ড্রেস-এর চাহিদা তুঙ্গে। সলিড কালারের লং বডিকন ড্রেস এ বছর ইন। শার্ট ড্রেস ট্রেন্ডে ছিলই। কটন বা পিওর লিনেন সলিড এবং চেকসে শার্ট ড্রেস টিনদের খুব পছন্দের। কাফতান ড্রেস আর জামদানি ড্রেস ভীষণ ট্রেন্ডিং। কাফতানে টাই অ্যান্ড ডাই মেটিরিয়াল ভাইব্রান্ট কালার খুব চলবে। কাফতান স্টাইলে শুধু ড্রেস নয়, টপ, লং কুর্তি বা ওয়ান পিসও ট্রেন্ডিং।

আরও পড়ুন-ধরনায়-বিক্ষোভে উত্তাল ধর্মতলা চত্বর

জামদানি একেবারেই ট্র্যাডিশনাল হলেও এর দুর্দান্ত পশ্চিমিকরণ হয়ে গেছে। জামদানি এখন যে কোনও ফ্যাশনের পুরোধা। জামদানির ইন্দো-ওয়েস্টার্ন, ফিউশন, ওয়েস্টার্ন ওয়্যার ট্রেন্ডিং। জামদানি টু পিস ভিতরে লং ওয়ান পিস স্লিভলেস জিমদানি ড্রেস ওপরে কনট্রাস্ট জামদানি শ্রাগ। ওয়ান পিস এ লাইন জামদানি ড্রেস, স্কার্ট এবং টপ, ঢোলা প্যান্টস, স্লিম টপ, জামদানি গাউন ভীষণভাবেই নজর কাড়বে। জামদানির ট্র্যাডিশনাল চুড়িদার কুর্তা বা সালোয়ার কামিজও ভীষণ ট্রেন্ডিং এবছর। জামদানির রঙে রয়েছে বৈচিত্র্য।
এবছর সবচেয়ে ট্রেন্ডিং মেটিরিয়াল হল মোডাল। নরম, প্রিন্টেড গ্লসি লুকের এই সিল্ক মেটিরিয়ালের ভীষণ আরামদায়ক এবং বেশ জমকালো। মোডালের টুপিস, ওয়ান পিস ড্রেস লং, মিড লেন্থ এবং শর্ট, টপ, ট্রাডিশনাল কুর্তা, কাফতান প্যাটার্নের ড্রেস, অ্যাসিমেট্রিক ড্রেস, সাইড স্লিটেড পেনসিল স্কার্ট ও মোডাল কলারড টপ পরে পুজো মণ্ডপে থাকবেন অষ্টাদশী থেকে মধ্যবয়সি মহিলারা।
ডেনিম সবসময় মেটিরিয়াল হিসেবে খুব ট্রেন্ডেই থাকে। ২০২৫-এও ডেনিম ইন। ডেনিম লং পেনসিল স্কার্ট, মিড লেন্থ স্কার্ট, ওভার সাইজড জ্যাকেট, স্কিনি প্যান্ট, বেলবটম, রাগড ওয়াইড লেন্থ ডেনিম প্যান্টস, স্ট্রেচেবল টাইট ফিট জিনস, কো অর্ড সেট, বডি কন ড্রেস, টিউনিক, অ্যাঙ্কেল লেন্থ ডেনিম প্যান্টস, শর্ট শ্রাগ… শেষ হবে না তালিকা।
ডি-কনস্ট্রাকচার্ড ডিজাইন দেখা যেতে পারে এ বছর ডেনিমেই। যেমন ডেনিমের উপর প্যাচওয়ার্ক, অ্যাসিমেট্রিকাল কাট এ বছর চোখে পড়তে পারে। আবার ডেনিভে ওভারসাইজ কলারড জ্যাকেটও চোখে পড়বে।
কো-অর্ড সেট বাঙালির মুখে মুখে এখন কড সেটে পরিণত হয়েছে। নাম যাই হোক আসলে আপার এবং লোয়ারের কো-অর্ডিনেশনটাই সংক্ষেপে কো-অর্ড। কো-অর্ড সেট-এর চাহিদা এবছর তুঙ্গে। পিওর কটন, রেয়ন, মোডাল, ক্রেপ, নরম লাইক্রা মেটিরিয়ালের লং কুর্তি বা কুর্তি স্টাইল শার্ট এবং একই কম্বিনেশনের প্যান্টস দেখতে দারুণ স্মার্ট। ফ্লোরাল এবং জ্যামিতিক প্রিন্ট ইন কো-অর্ড সেটে। এছাড়া সলিডকালার, মাল্টিকালারড প্যানেল, বড় স্ট্রাইপ সবই ট্রেন্ডে।
বেশ কয়েক বছর ধরেই ফ্যাশনে আধিপত্য বিস্তার করে চলেছে অ্যাথলেইজার। এখন ফ্যাশনের ক্ষেত্রে কমফোর্টকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে সকলে। সেজন্যই ট্রাভেল মুডে থাকলে পুজোয় অ্যাথলেইজার বেছে নিচ্ছেন অনেকেই। অ্যাথলেইজার আর কিছুই নয়, স্পোর্টসওয়্যার আরও একটু বেশি ফ্যাশনেবল।
হাকোবা এ-বছর আরও বেশি ট্রেন্ডিং মেটিরিয়াল। এতদিন হাকোবা ব্লাউজ নিয়ে আগ্রহ তুঙ্গে ছিল এবার শুধু হাকোবার ব্লাউজ নয়, হাকোবার ড্রেসও ট্রেন্ডে। হাকোবার লং বা মিড লেন্থ বা শর্ট ড্রেস, হাকোবা ওভারসাইজ ও ফিটেড টপ, হাকোবা শ্রাগ— কী নেই! হাকোবার কালার প্যালেটে সবই সলিডের উপর পেয়ে যাবেন।
লং কুর্তি, স্ট্রেট প্যান্ট বা লুজ ফিট সালোয়ার এবং দোপাট্টা ট্রেন্ডেই থাকে তবে ধোতি উইথ শর্ট কুর্তি এ-বছরের পপুলার ফ্যাশন ওয়্যারগুলোর মধ্যে অন্যতম। এটা হট কেক বলা চলে। কালার প্যালেটে এবছর ব্রাইট এবং প্যাস্টেল দুটোরই দেখা মিলবে। এমব্রয়ডারি হলেও বেশিটা থাকবে নেকলাইনে এবং হাতে।

আরও পড়ুন-শিক্ষকহীন বঙ্গ-বিজেপি, অসভ্যতা রুখতে কড়া দাওয়াইয়ের পক্ষে স্পিকার, চিকিৎসা চলছে আহত মার্শালের

শাড়ি বাহারি
দুর্গাপুজোর ক’দিন পলা ঠিক করেছে অন্য কোনও পোশাক পরবে না শুধু শাড়ি ছাড়া। সারাবছর ওদেশে শাড়ি পরাই হয় না। আর পুজোর দিনগুলো ওখানে অঞ্জলি, খাওয়াদাওয়া আর তিনদিন ধরে চলা অনুষ্ঠান— ব্যস। কলকাতার পুজো, দেশের বাড়ির পুজো মানেই প্যান্ডেল হপিং, খেতে যাওয়া, জনস্রোতে মিশে যাওয়া— এখানেই তো শাড়ির কদর সবচেয়ে বেশি। এবছর সবচেয়ে ট্রেন্ডি শাড়ি হল মসলিন জামদানি, তসর জামদানি, খাদির ওপর জামদানি এবং লেস উইভ, বুটি জামদানি লেস ওয়র্ক করা, বনলতা জামদানি। চিরাচরিত করাত-কাজের বৈচিত্র্য থেকে বেরিয়ে ফুল, লতাপাতার মোটিফ এখন জামদানির ট্রেন্ডে। কালার কম্বিনেশন এ বলে আমায় দ্যাখ তো ও বলে আমায়। শিউলি শাড়িতে গতবছরও বাজিমাত করেছিল। বাঙালি কন্যে এবছরও তাই। লাল-সাদায় হাকোবা শাড়ি সঙ্গে পাড় জুড়ে লাল ফ্রিল, হাকোবা ট্রাডিশনাল ফ্রিল দেওয়া বোট নেক ব্লাউজের কম্বিনেশন এককথায় দুর্দান্ত।
সুতির কদর শাড়িতে ছিলই কিন্তু এ বছর ট্রেন্ডিং হল সিল্ক। পাট্টু সিল্ক, টিস্যু সিল্ক, টিস্যু জামদানি, মাশরু সিল্ক, টিস্যু বেনারসি, কাতান বেনারসি, ট্রাডিশনাল ইক্কত, ব্যাঙ্গালোর সিল্কে খাড্ডি, পিওর কাতানে খাড্ডি, মাশরু কাতান, পিওর কাতান বালুচরি আর আর্টিফিশিয়াল বালুচরি ট্রেন্ডে। পাশাপাশি কিশোরীদির জন্য ফেন্ডি এবছর খুব পপুলার। পিওর ট্রান্সপারেন্ট গ্লসি টিস্যু লুক শাড়িতে জমকালো লেস এবং সিকুইন ওয়র্ক-করা পাড়। ফেস্টিভ সিজনেও, পার্টিওয়্যার হিসেবেও এই শাড়ি দুর্দান্ত। কালার প্যালেট সলিড ইয়েলো, পিচ, পিঙ্ক, ম্যাজেন্টা, গ্রিন, অলিভ, পার্পল, ব্লু, টারকয়েজ— বাদ নেই কিছু। সিল্কের কম্বিনেশন কালার প্যালেট অনবদ্য। নীল রানির ওপর পেটানো কপার জরির কাজ বা গাঢ় সবুজ আর লালের সঙ্গে পেটানো জরি ওয়র্ক। এছাড়া জুট বেনারসি, মটকা বেনারসি এবং মাহেশ্বরী সিল্ক এবছর ট্রেন্ডিং। একই রঙের লাইট এবং ডিপের কনট্রাস্টে পাওয়া যাবে। ডুয়েল টোন, সিঙ্গল টোন— কী চান সব পাবেন। পিওর কটনে রেশম চেকস পাড়ে ও আঁচলে এমব্রয়ডারি এবছরের লেটেস্ট।

আরও পড়ুন-রাজ্য পুলিশের সাফল্য: অস্ত্র-কার্তুজের উৎস বিবাদী বাগের দোকানে

স্টাইলিশ পুরুষ
২০২৫ পুরুষ ফ্যাশনে মারকাটারি ট্রেন্ড। ড্রেপড কুর্তা, লেয়ারড আঙ্গরাখা উইথ অ্যাসিমেট্রিক হেমলাইঅন। একটু ফ্লেয়ারি পোশাক। মেয়েদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এ-বছর ছেলেদেরও দেখা যাবে প্যান্ট স্টাইল ধোতির সঙ্গে শর্ট কুর্তা পরতে। সবগুলো একদিকে ভীষণ কনটেম্পরারি অন্যদিকে ট্র্যাডিশনাল। অ্যাসিমেট্রিক কুর্তার সঙ্গে সিগারেট প্যান্ট আর চামড়ার মোছরি ফাটাফাটি লুকস দেবে। টোন অন টোন লেয়ারিং কুর্তা ওপরে নেহরু জ্যাকেট আবার বোলেরো জ্যাকেটস ও ট্রেন্ডিং আসলে পুরুষ ফ্যাশনে কোনও মাপকাঠি এবছর নেই। যে কোনও ধরনের এক্সপেরিমেন্ট চলবে।
পাউডার ব্লু, সেজ গ্রিন, টিল্ট ব্লু, ব্লাশ পিঙ্ক, বেইজ একদম ট্র্যাডিশনাল সফট টোনগুলোই পুরুষের পোশাকে দেখতে পাওয়া যাবে। মেটিরিয়ালের চান্দেরি, লিনেন, পিওর খাদি এবং সিল্ক খুব চলনসই হবে। এবছর পোশাকের কাটস-এর ওপর গুরুত্ব বেশি থাকবে, সেই সঙ্গে মিনিমালিস্টিক হ্যান্ড উভেন এমব্রয়ডারি ইন। মিরর ওয়র্ক করা কলার, হাতের পাইপিন, বুকের কাছে রেশম ওয়র্ক সবেরই এ-বছর দেখা মিলবে। পিওর ট্র্যাডিশনাল পোশাকে ধুতি-পাঞ্জাবি, শেরওয়ানি তো রয়েছেই। রয়েছে শর্ট কুর্তা প্যান্টস, ফ্লোরাল শর্ট শার্ট, জ্যামিতিক প্রিন্টসের শার্ট, ওভারসাইজড টি শার্ট। এছাড়া যোধপুরি কুর্তা জ্যাকেট, কাউলড ড্রেপড ধোতি প্যান্ট, ট্রেঞ্চ কোর্টও ফ্যাশনে।
কিউট কচিকাঁচারা
পুজো মানেই তো কচিকাঁচারা আর ছোটদের ফেব্রিক মানে ব্রিদেবল, আরামদায়ক যা পরে হালকাফুলকা থাকা যায় সেই সঙ্গে দামালপনাও করা যায়। বড়দের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তৈরি ছোটরাও। তাতাই এবার পুজোয় পরবে ছোট্ট ধুতি আর পাঞ্জাবি, একটা শেরওয়ানি স্টাইল কুর্তা সঙ্গে কটন প্যান্টস। পলা ছেলে এবং বাবার ম্যাচিং দুটো পাঞ্জাবি অর্ডারও করেছে। দুটোই টাই ডাই করা তার ওপর ভেজিটেবল প্রিন্ট। আঙ্গরাখা স্টাইলের সঙ্গে কটন রেডিমেড ধোতি। ওদের অষ্টমীর সাজ হবে এটাই। বড়দের পাঞ্জাবি কুর্তার রেপ্লিকা হিসেবে ছোটদেরটাও এসে গেছে মার্কেটে। এছাড়া ছোট্টসোনা মেয়েদের টিউনিক ড্রেস, শর্ট বডি কন ডেনিম ড্রেস, শর্ট স্কার্ট, কটন ড্রেস উইথ ওভারল্যাপিং জ্যাকেট, ডাংরি, হাফ প্যান্ট উইথ ক্রপ টপ এ-বছর ইন-এর সঙ্গে স্যুট প্যান্ট, বার্বি ড্রেস খুব চলবে। ওয়াইড লেগ ডেনিম ছোট ছেলে-মেয়ে দুজনের ক্ষেত্রেই এ-বছরের ট্রেন্ডিং। ছেলেদের শার্ট, লুজ টিজ ফ্যাশনে। ছোটদের কালার প্যালেট মানেই ভাইব্রান্ট শেড আবার মজার বিষয় হল এ-বছর পেস্টাল শেডও ছোট্টসোনাদের ট্রেন্ডিং। রেড, কোরাল রেড, ব্লু, ব্লুইশ পার্পল বা গ্রিন উইথ ইয়েলো টাই অ্যান্ড ডাই, পার্পলিশ প্যালেট— এ-বছরের লেটেস্ট কালার টোনের সঙ্গে কটন চেকস, স্ট্রাইপ, সলিড কালার প্যাটার্ন খুব চলবে। মেয়েদের এথনিক ওয়্যারে আনারকলি, কো অর্ড সেট, এথনিক সালোয়ার কুর্তা, শরারা, ঘাঘারা বা লেহেঙ্গা, ফ্লেয়ারড স্কার্টে সিক্যুইন, এমব্রয়ডারি ওয়র্কে দেখা মিলবে সেমি সিল্ক বা সিল্ক, খাদি কটনে প্রিন্ট, লাইট ফ্লোরাল প্রিন্ট ফ্যাশনে। ছোটরাও অষ্টমীর অঞ্জলিতে শাড়ি এবং ধোতি-কুর্তা পরে বড়দের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে অনায়াসে।

আরও পড়ুন-খাদে গাড়ি উদ্ধার ৩ যাত্রী

বাজিমাতে বয়স্করাও
আজকের যুগে বয়স একটা সংখ্যামাত্র। ট্রেন্ড সেটাই যেটা আপনি সেট করতে পারবেন। এই পর্যায়ে পোশাক ক্যারি করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। বয়স অনুযায়ী ট্রেন্ড হল কমফর্টেবল আর ক্লাসি। সেই অনুযায়ী পোশাক বাছুন। রেট্রো স্টাইলকে আরও আধুনিকীকরণ করে পোশাকে ফিউশন লুক নিয়ে আসতে পারেন। কলারড বোটনেক, গ্লাস স্লিভ ব্লাউজ সঙ্গে টিস্যু সিল্ক শাড়ি। প্লেন কটন হ্যান্ডলুম সঙ্গে একটা জমকালো ব্লাউজ। অন্য পোশাকে লং কাফতান ইন তাই কাফতান যাবে ব্যক্তিত্বের সঙ্গে। হেমলাইনে যদি সূক্ষ্ম এমব্রয়ডারি থাকে এলিগেন্ট লাগবে। জামদানি ইনে তাই যে কোনও ফ্যাশনেবল মানুষই এ-বছর চাপমুক্ত। জামদানি ম্যাক্সি ড্রেস, লুজ ফিট ট্রাউজার ওভারসাইজড জামদানি কুর্তা বা মিড লেন্থ টপ। জামদানি ঢোলা ড্রেস, সালোয়ার, কুর্তা, কো-অর্ড সেট খুব ট্রেন্ডি করে তুলবে আপনাকে। বয়স বেশি মানে হালকা রং— এই কনসেপ্ট আর নেই। বয়স বাড়ুক আনন্দের সঙ্গে আর সেই আনন্দ থাকুক রঙেও। এ-বছর কালার প্যালেট হোক ভাইব্রান্ট। রেড, কোরাল, ব্লু, ইয়েলো, গ্রিন, মস, মেরুন, গোল্ডেন, সিলভার, পার্ল হোয়াইট, মিল্কি হোয়াইট অবশ্যই ব্ল্যাক, গ্রে ইত্যাদি। আর পুজো মানেই এথনিক ওয়্যার ধুতি, এমব্রয়ডারড পাঞ্জাবি, প্রিন্টেড কুর্তা, তসর, ইক্কত, সলিড কালার জামেবার, এমব্রয়ডারড সালোয়ার একটু ফ্লেয়ারি কুর্তা যা পরবেন আত্মবিশ্বাস থাকলে সেটাই মানাবে।

Latest article