নয়াদিল্লি : কমে আসছে ভারতের সঞ্চয়ের ভাঁড়ার। যার জেরে অর্থনৈতিক সঙ্কট তীব্র হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা। অর্থনীতিবিদরা অবশ্য বেশ কিছুদিন ধরেই এই আশঙ্কার কথা জানিয়ে আসছেন। জানা যাচ্ছে, বর্তমানে দেশের মজুত বিদেশি মুদ্রার তহবিল নেমে এসেছে ৬০০ বিলিয়ন ডলারের নিচে। এই বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ দেশের অর্থনৈতিক স্বাস্থ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সূচক। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সূত্রে খবর, ২৯ এপ্রিল শেষ হওয়া সপ্তাহে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২.৬৯ বিলিয়ন ডলার কমে ৫৯৭.৭২ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।
আরও পড়ুন-যুবকের মৃত্যু নিয়ে বিজেপির ফের রাজনীতি
করোনার বাড়াবাড়ির সময়েও এমনটা ঘটেনি। অর্থনীতিবিদদের দাবি, গত দুই বছরের মধ্যে এটিই সবচেয়ে তীব্র পতন। এই পতনের অন্যতম কারণ, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন রুখতে সঞ্চিত ডলার বিক্রি করেছে। পাশাপাশি শেয়ারবাজারে বিদেশ লগ্নিতে বাধা সরিয়ে দেওয়ায় বিনিয়োগকারীরা নিজেদের মর্জিমাফিক এন্তার পোর্টফোলিও বিক্রি করছেন। পাশাপাশি অপরিশোধিত তেলের দাম চড়ছে আর দেশের মূলধন ক্রমশই বাইরে যাচ্ছে। এই ত্র্যহস্পর্শে মার্কিন ডলারের নিরিখে তরতরিয়ে টাকার দাম কমছে। একদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, অন্যদিকে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় আরবিআই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির মাধ্যমে ডলার বিক্রি শুরু করেছে। বিক্রি শুরুর সময়ে ১ ডলারে টাকার দাম ছিল ৭৬।
আরও পড়ুন-ফরাক্কায় রাজ্য সরকারের উদ্যোগে গবেষণাগার, মিষ্টি জলে ইলিশ-চাষ
ক্রমশ তা চড়ে ৭৭-এর দিকে এগোচ্ছে। এর আগে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০২০ সালের ২০ মার্চ শেষ হওয়া সপ্তাহে রেকর্ড সৃষ্টি করে ১১.৯ বিলিয়ন ডলার কমে গিয়েছিল। যদিও ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ৬৪২.৪৫ বিলিয়ন ডলারের রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছিল মজুত বিদেশি মুদ্রার তহবিল বা রিজার্ভ। এই পতনের ফলে সেই রিজার্ভ কমেছে ৪৪.৭৩ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় তিন লক্ষ ৪৪ হাজার ২২০ কোটি টাকা। মাত্র আট মাসের ব্যবধানে এমন বিশাল পতন যথেষ্ট ভাবাচ্ছে অর্থনীতির কারবারিদের। এমনকী ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এক প্রবীণ কর্তাও জানিয়েছেন, আমরা কোনওমতেই চাই না যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৬০০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামুক। কিন্তু তবুও সঞ্চয় কমছে। বাজারে জাঁকিয়ে বসছে আতঙ্ক।