লড়াই এখন বাংলা বনাম বিজেপির

সন্দেশখালি : মোদি-শাহদের অঙ্গুলিহেলনেই হয়েছে ষড়যন্ত্র

Must read

প্রতিবেদন : প্রমাণিত যে কেন্দ্রীয় সরকারের তাবড় নেতা, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং দেশের প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গুলিহেলনে এবং ইশারায় সন্দেশখালি হয়েছে। তাঁদের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে মদত ছিল যাতে এই ঘটনা ঘটিয়ে বাংলাকে কলুষিত করা যায়। বিজেপির নেতারা চেয়েছিল তাই পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা হয়েছে। না হলে কারও ক্ষমতা ছিল না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির হাত তাদের মাথায় না থাকলে এই ঘটনা ঘটত না। এখনও বিজেপি সর্বভারতীয় স্তর থেকে কোনও বিবৃতি আসেনি। যেখানে প্রকাশ্যে বলা হচ্ছে, বিজেপির নেতারা— আমাদের নেতারা বলেছিল মিথ্যে অভিযোগ করতে তা না হলে তৃণমূলের তাবড় তাবড় নেতারা জেলে ঢুকবে না। সেই কারণেই মিথ্যে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার কালনার ভার্চুয়াল সভা থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে বললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তাঁর সংযোজন, সন্দেশখালির ঘটনা জনসমক্ষে আসায় লড়াইটা এখন বাংলা বনাম বিজেপির হয়ে গিয়েছে। এই লড়াই আর শুধু তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে আবদ্ধ নেই। যারা বাংলার মানুষকে ভাতে মারতে চেয়েছে, তাদের পেটে আঘাত করেছে, তাদের চেয়ারে আঘাত করতে হবে। স্পষ্ট বক্তব্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee।
এদিন খারাপ আবহাওয়া ও ঝড়-বৃষ্টির কারণে হেলিকপ্টার উড়তে না পারায় প্রথমে রামপুরহাটে শতাব্দী রায় ও পরে পূর্ব বর্ধমানের কালনায় ডাঃ শর্মিলা সরকারের সমর্থনে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। এই দুই সভায় বিজেপির জনবিরোধী কার্যকলাপ ও সন্দেশখালি ঘটনা নিয়ে তুলোধোনা করেন তিনি। রামপুরহাটের সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে অভিষেক বলেন, যারা ২০২১ সালে শীতলকুচি করেছিল, কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে গরিব-নিরীহ ভোটাররা মারা গিয়েছিল, সেই শীতলকুচি হত্যাকাণ্ডের নায়ককে বিজেপি এখানে প্রার্থী করেছিল। পরে ডামি ক্যান্ডিডেট দেয়।

আরও পড়ুন-দেশের বোঝা মোদি, জুটবে না গরিষ্ঠতা: বিস্ফোরক প্রাক্তন ঘনিষ্ঠ সিবিআই কর্তা

সন্দেশখালির ঘটনা বিজেপির তৈরি করা বেলুন ফুটো হয়ে যাওয়ার পর বাংলার মানুষ বুঝে গিয়েছে কেন আমরা বিজেপিকে বাংলা-বিরোধী বলছি। সন্দেশখালির ঘটনা হওয়ার আগে থেকেও আমরা ওদের বাংলা-বিরোধী বলছি। সাফ কথা অভিষেকের। তাঁর কথায়, আপনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে গালাগালি দিচ্ছেন, আমাকে দিচ্ছেন, দিন। আমাদের ছোট করছেন, করুন। কিন্তু বাংলার মানুষকে দয়া করে ছোট করবেন না। এই মাটিকে ছোট করবেন না। প্রবল দুর্যোগের মধ্যেও দুটো সভাতেই মানুষের ভিড় ছিল দেখার মতো।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, রেখা পাত্রর একটি ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। সে বলছে যে যাদের রাষ্ট্রপতির কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তারা আন্দোলনে জড়িতই নয়! সন্দেশখালিতে ধর্ষণ হয়নি। মিথ্যে মামলা দিয়ে অভিযোগ করা হয়েছে। সেকথা বলছেন মহিলারাই। একটা রাজনৈতিক দল এতটা নিচে নামতে পারে! নির্লজ্জ-নিকৃষ্ট হতে পারে ভাবা যায় না। এদিন ভার্চুয়ালেও কালনার সভায় দীপা চক্রবর্তীর লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধের হুমকির অডিও ক্লিপ শোনালেন অভিষেক।
বুধবার বাঁকুড়ায় রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় গদ্দার অধিকারীকে রাজনৈতিকভাবে স্লোগান দেওয়া হয়েছে। মহিলারা দিয়েছেন। সেই নেতা মহিলাদের বিরুদ্ধে কী শব্দবন্ধ ব্যবহার করছে আপনারা দেখেছেন। মা-বাবা তুলে গালাগালি করেছে। আগে আমাদের গালাগাল করত। তৃণমূলের কর্মীদের, নেতাদের দিত। এখন বাংলার মানুষকে এই ধরনের কুৎসিত শব্দবন্ধ ব্যবহার করে আক্রমণ করছে। এই কারণে আমরা বিজেপিকে বাংলা-বিরোধী বলছি। বাংলার মান-সম্মান ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে তাই বাংলা-বিরোধী বলছি। সাফ কথা অভিষেকের। এদিন রামপুরহাট ও কালনার দুটি সভাতেই তফসিলি সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষদের উপর বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলোতে কী ধরনের অত্যাচার হয়েছে, বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশে, সে-কথা তুলে ধরেন অভিষেক। একই সঙ্গে বীরভূম ও পূর্ব বর্ধমানের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার-সহ কতগুলি পরিষেবায় রাজ্য সরকার কত টাকা খরচ করে দিয়েছে তার খতিয়ানও তুলে ধরে মানুষের কাছে আবেদন করে বলেন, তৃণমূল কংগ্রেসই আপনাদের পাশে ছিল, আছে, থাকবে। বিজেপি নয়। সব ভোট তৃণমূলে দিন।

Latest article