‘প্রোমোটারের গাফিলতিতে বিল্ডিং বিপর্যয়’ ক্ষুব্ধ ফিরহাদ হাকিম

নেতাজি নগর থানায় ৭টি ধারায় মামলা রুজু হয়েছে, তার মধ্যে ৪টি কেএমসি অ্যাক্ট এবং তিনটি মামলা ভারতীয় ন্যায় সংহিতা অনুযায়ী করা হয়েছে।

Must read

আজ সকাল থেকে ফের বাঘাযতীনে (Baghajatin) বিপজ্জনকভাবে হেলে পড়া ফ্ল্যাটবাড়ি ভাঙার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। বুলডোজ়ার নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছেন ভাঙার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুরকর্মীরা। পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে দুপুর ১টা নাগাদ বাঘাযতীনে পৌঁছেছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। মঙ্গলবার রাত থেকেই ফ্ল্যাটবাড়িটির ভাঙার কাজ শুরু হয়েছিল। বুধবারও চলে কাজ। ফিরহাদ এই ঘটনা নিয়ে ইঞ্জিনিয়ার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন। এলাকার আশপাশের বাসিন্দাদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলেছেন ফিরহাদ হাকিম। স্থানীয় বিধায়ক দেবব্রত মজুমদার সিপিএম আমলের ওপর দোষ চাপিয়েছিলেন এই ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে। নেতাজি নগর থানায় ৭টি ধারায় মামলা রুজু হয়েছে, তার মধ্যে ৪টি কেএমসি অ্যাক্ট এবং তিনটি মামলা ভারতীয় ন্যায় সংহিতা অনুযায়ী করা হয়েছে।

আরও পড়ুন-সইফের দ্রুত আরোগ্য কামনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী

এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ফিরহাদ হাকিম জানান, ”অভিযুক্তরা প্রশাসনকে না জানিয়ে বাড়ি নির্মাণ করেছিল। এমনকী মাটির পরীক্ষা না করেই হাইড্রোলিক জ্যাকের কাজ করা হচ্ছিল। প্রোমোটারের গাফিলতিতে বিল্ডিং বিপর্যয়। বেআইনি নির্মাণের ফল এই বহুতল বিপর্যয়। পুরসভার অনুমতি ছাড়া হয়েছে এই বিল্ডিংয়ের কাজ। এখন আর দু নম্বরি চলবে না। কালচার পরিবর্তন করতে হবে। বাড়ি তৈরির আগে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। আর গাড়ি লিফট করার যন্ত্র নিয়ে বাড়ি লিফটিং করার হচ্ছিল।” হরিয়ানার যে সংস্থা বাড়িতে কাজ করছিল তাদের নিশানা করে ফিরহাদ বলেন, ”মাথামোটার মতো কাজ হয়েছে। যে সংস্থা বাড়ি লিফটিংয়ের কাজ করছিল তাঁরা ভেবেছিল হরিয়ানার মতো বাংলার মাটিও শক্ত হবে। কিন্তু এখানকার মাটি পাথুরে নয়, অনেকটাই নরম। তাই অনেক রাস্তা একটু জল জমলেই নীচু হয়ে যায়। যেকোন গর্তে তাড়াতাড়ি জল জমে যায়। প্রমোটার এবং ওই সংস্থার কর্মীদের গাফিলতিতেই এই ঘটনা ঘটেছে। আমি গঙ্গাসাগরে ছিলাম। কথা হয়েছে দেবব্রত ও মিতালীর সঙ্গে। ওদের জানিয়ে এখানে এসেছি। এটা একটা ইঞ্জিনিয়ারিং ফল্ট। পুরসভাকে না জানিয়ে প্রোমোটার পাকামি করে স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারের পরামর্শ, পুরসভার অনুমতি না নিয়ে হরিয়ানার কোম্পানির সঙ্গে মিলে এসব করেছে। গাড়ি ওঠানোর যন্ত্র দিয়ে বাড়ির কাজ চলছে।”

আরও পড়ুন-রাতারাতি গল্ফ গ্রিনে মহিলা খুনে সমাধান পুলিশের, গ্রেফতার ভাইপো

এদিন মেয়র ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে জানান, ”এই ফ্ল্যাটটি ২০০৯ সালে হয়েছে। সেই সময় কলোনি এলাকায় কলোনি কমিটি তৈরি করে ফ্ল্যাট হত। পরবর্তীকালে প্রোমোটার কালচার এল। শুধু এখানে নয়, গার্ডেনরিচেও হয়েছে। বিএলআরও কলকাতা পুরসভার অধীনে আনা হয়েছে। মানুষ তখন পুরসভায় যেতে পারতেন না। এখন পান। আসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বাড়ির বাসিন্দারা। আর কেউই নয়। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করছেন যতদূর সম্ভব তাদের পাশে দাঁড়াবে সরকার। বাড়ি ভাঙার পর তাদের যেন কোন অসুবিধায় পড়তে না হয় সেই দিকে নজর দেওয়া হবে। যাঁরা ফ্ল্যাট কিনেছিলেন তাঁরা সর্বহারা হয়ে গিয়েছেন। বেআইনি নির্মাণের ফলে ইন্সিওরেন্স পান না। তার ফলে সমস্যায় পড়েন আবাসিকরা।”

Latest article